গৃহবধূ হত্যায় দুই টিকটকার গ্রেপ্তার
গাজীপুরে গৃহবধূকে গলাকেটে হত্যা এবং তার স্বামীকে গুরুতর আহত করার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পাশের কক্ষের ভাড়াটিয়া দুই টিকটকার যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আজ রোববার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে র্যাব-১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভারপ্রাপ্ত মিডিয়া) রাকিব হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার নন্দু নেপড়া গ্রামের বাসিন্দা আইনুল ইসলাম বুলেট (২২) ও বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার গজারিয়া গ্রামের বাসিন্দা রাজীব (২০)। আইনুল ইসলাম বুলেটকে নরসিংদীর মাধবদী উপজেলার আলগী এলাকা থেকে এবং রাজীবকে বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার দেপাড়াবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, কসাই ইমরান হোসেন দ্বিতীয় বিয়ের পর রহিমা খাতুনকে নিয়ে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি থানাধীন বাইমাইল এলাকার জহিরুল ইসলামের ‘একতা ভিলা’ ভবনের পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাটের একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে (সাবলেট) থাকতেন। রহিমা খাতুনের গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের শাহাদাতপুর থানার বিনুটিয়া গ্রামে ও তার স্বামী ইমরান হোসেনের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থানার আমতৈল গ্রামে। এই দম্পতির সঙ্গে রহিমার প্রথম সংসারের মেয়ে শারমিন আক্তার (১৬) থাকতেন। রহিমা স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তার মেয়ে শারমিন টিকটকসহ স্টুডিও মিউজিকের গান করতেন। দুই কক্ষবিশিষ্ট ওই ফ্ল্যাটের অপর কক্ষে ভাড়া থাকতেন বুলেট ও রাজীব নামের দুই যুবক। তারা শারমিনের সঙ্গে টিকটক করতেন।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) মধ্যরাতে দুর্বৃত্তরা কক্ষে প্রবেশ করে ধারালো ছুরি দিয়ে রহিমা খাতুনের গলার শ্বাসনালী কেটে হত্যা করে এবং ইমরানকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা কেটে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে কোনাবাড়ি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে। তবে ঘটনার পর পাশের কক্ষের ভাড়াটিয়া বুলেট ও রাজীব বাসা থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই আব্দুর রহিম (২৮) বাদী হয়ে কোনাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
র্যাব-১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভারপ্রাপ্ত মিডিয়া) রাকিব হাসান জানান, চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারে র্যাব-১ এর স্পেশালাইজড গাজীপুর পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের দল ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। বিভিন্ন সূত্র ও তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার রাতে র্যাব-১, র্যাব-৬ ও র্যাব-১১ এর সদস্যরা যৌথ অভিযান চালিয়ে মামলার সন্দেহভাজন আসামি আইনুল ইসলাম বুলেটকে নরসিংদীর মাধবদী উপজেলার আলগী থেকে এবং রাজীবকে বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার দেপাড়াবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ ও পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রোববার গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কোনাবাড়ী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
জিএমপির কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানান, সন্দেহভাজন দুই আসামিকে থানায় সোপর্দ করেছে র্যাব। ঘটনার সঙ্গে তাদের জড়িত থাকার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

নাসির আহমেদ, গাজীপুর