স্বপ্ন ও তারুণ্যের প্রতিচ্ছবি তারেক রহমান
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়াম্যান তারেক রহমানের ৬১তম জন্মদিন আজ বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর)। ১৯৬৫ সালের এই দিনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কোল আলো করে জন্মগ্রহণ করেন তারেক রহমান। তাঁর ডাকনাম পিনু।
তারেক রহমানের বাবা জিয়াউর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং মা খালেদা জিয়া বাংলাদেশের তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী।
মুক্তিযুদ্ধের উত্তাল সময়ে শিশু তারেক রহমানকে মা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বন্দিত্ব বরণ করতে হয়। পিতা জিয়াউর রহমান তখন মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনের এক অকুতোভয় বীর যোদ্ধা।
সেনাকর্মকর্তা থেকে সিপাহী জনতার বিপ্লব; জিয়াউর রহমানকে দেশের রাষ্ট্রপতির আসনে নিয়ে এলেও তাঁদের জীবন ছিল সাদামাটা। ঢাকার বিএএফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজ দিয়ে শুরু করা শিক্ষাজীবনে ৮০’র দশকে তারেক রহমান ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পিতার মৃত্যুর পর মা বেগম খালেদা জিয়া রাজনীতির মাঠে যখন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের উত্তাল নেতৃত্বে, তখন সেই আন্দোলনে যোগ দেন তারেক রহমানও। ১৯৮৮ সালে বিএনপিতে নাম লেখান জাতীয়তাবাদের এই তরুণ নেতা।
১৯৯১ সালের নির্বাচনে মা বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচনি প্রচারণায় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে তৃণমূলে বিএনপিকে শক্তিশালী করায় মনোযোগ দেন তারেক রহমান। ১৯৯৪ সালে ডা. জুবাইদা রহমানের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। বিএনপির স্থায়ী কমিটি তারেক রহমানকে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মনোনীত করে ২০০২ সালে।
পিতার আদর্শ লালন করে ২০০৫ সালে দেশব্যাপী তৃণমূল সম্মেলন আয়োজনের মাধ্যমে কেন্দ্র থেকে প্রান্তের মানুষের কাছে সাড়া জাগানিয়া বার্তা দেন তারেক রহমান।
২০০৭ এর ৭ মার্চ তারেক রহমানকে গ্রেপ্তার করে সেনা সমর্থিত সরকার। দায়ের করা হয় ১৩টি দুর্নীতি মামলা। কারাবরণ আর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে যেতে হয় হাসপাতালে। প্রায় ১৮ মাস কারাবাসের পর জামিনে মুক্ত হয়ে ২০০৮ সালে ১১ সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান তিনি। দীর্ঘ ১৬ বছর লন্ডনে থেকেই জাতীয়তাবাদের পতাকাকে দিকনির্দেশনা ও নেতৃত্ব দিয়েছেন তারেক রহমান। হয়েছেন দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান। স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ও কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমানকে নিয়ে নির্বাসিত জীবনে তারেক রহমান হারিয়েছেন ভাই আরাফাত রহমান কোকোকে। প্রিয় মা বেগম খালেদা জিয়ার কারাবন্দিত্ব আর অসুস্থতা দূর পরবাসে তাকে কষ্টের কাছে অসহায় করে তুলেছে।
তারেক রহমানের রাজনৈতিক জীবনের বড় অংশই ছিল নির্বাসিত জীবন। বর্তমানে তিনি লন্ডনে অবস্থান করছেন। ৬০ বছর বয়সী তারেক রহমানের ৩৭ বছরের রাজনৈতিক জীবন নানা ঘাত-প্রতিঘাতের সাক্ষী। সম্প্রতি সবদিকে আলোচনা, কবে দেশে ফিরবেন তারেক রহমান। জানা গেছে, তিনি দ্রুতই দেশের মাটিতে পা রাখবেন।
জন্মদিনের অনুষ্ঠান না করতে বিএনপির নির্দেশনা
তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা, পোস্টার-ব্যানার লাগানো ও আলোচনা সভাসহ কোনো ধরনের আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠান বা উৎসব পালন করা যাবে না। ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিএনপির সব ইউনিটের নেতাকর্মীদেরকে এই দলীয় নির্দেশনাটি লঙ্ঘন না করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ২০ নভেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন। জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা, পোস্টার, ব্যানার লাগানো ও আলোচনা সভাসহ কোনো ধরনের আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠান বা উৎসব পালন করা যাবে না।
তারেক রহমান আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৬ আসন থেকে প্রথমবারের মতো বিএনপির প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণের কথা রয়েছে।

মাহমুদুল হাসান