সাবেক মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা
দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন, অস্বাভাবিক ব্যাংক লেনদেন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এবং তার স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসা ইসলামের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) রাজধানীতে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন সংস্থাটি মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
দুদক জানায়, কমিশনের সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলমের নেতৃত্বে গঠিত অনুসন্ধান টিম তাদের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ যাচাই শেষে তাদের সম্পদের অসঙ্গতি ও অবৈধ লেনদেনের স্পষ্ট প্রমাণ পায়।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাবেক মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন তার নামে মোট দুই কোটি ৪৩ লাখ ৪২ হাজার ৪৬৭ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। আয়কর নথিতে উল্লেখিত ৬৪ লাখ ৪১ হাজার ৯৫৬ টাকা পারিবারিক ব্যয়সহ তার মোট সম্পদ দাঁড়ায় তিন কোটি ৭ লাখ ৮৪ হাজার ৪২৩ টাকা। এর বিপরীতে বৈধ উৎস হিসেবে দেখাতে পেরেছেন মাত্র এক কোটি ৯৫ লাখ ৯৮ হাজার ১৭১ টাকা। ফলে তার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় এক কোটি ১১ লাখ ৮৬ হাজার ২৫২ টাকা।
এ ছাড়া ফরহাদ হোসেনের নামে খোলা ১২টি ব্যাংক হিসাবে ছয় কোটি ৫৪ লাখ ৫৬ হাজার ৪৭১ টাকা জমা এবং ছয় কোটি ৩৫ লাখ ৬৮ হাজার ৯৯৬ টাকা উত্তোলনের তথ্য পাওয়া যায়, যা দুদকের মতে ‘অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন’।
অপরদিকে, তার স্ত্রী সৈয়দা মোনালিসা ইসলামের নামে পাওয়া যায় ৮০ লাখ ৯৩২ টাকা মূল্যের সম্পদ এবং ১৪ লাখ পাঁচ হাজার টাকা পারিবারিক ব্যয়সহ মোট ৯৪ লাখ পাঁচ হাজার ৯৩২ টাকা। অনুসন্ধানে দেখা যায়, তার কোনো বৈধ উৎসের আয় উল্লেখ নেই। দুদকের প্রতিবেদন মতে, এসব সম্পদ প্রকৃতপক্ষে ফরহাদ হোসেনের দুর্নীতি ও ঘুষের অর্থ থেকে অর্জিত।
দুদক জানায়, ক্ষমতার অপব্যবহার, অসাধু উপায়ে সম্পদ অর্জন, জ্ঞাত আয়ের উৎস গোপন এবং অবৈধ অর্থ লেনদেন—এসব অপরাধে ফরহাদ হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অন্যদিকে সৈয়দা মোনালিসা ইসলামের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ও দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)