বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান সুনীলসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সাবেক চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, কমিশনারসহ মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে সরকারের ৯ হাজার ১০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আসামিরা হলেন—বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, ড. শাহজাহান মাহমুদ, কমিশনার ও পরে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মো. জহুরুল হক, সাবেক কমিশনার মো. রেজাউল কাদের ও মো. আমিনুল হাসান।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) দুদক প্রধান কার্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্তরা ২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালনকালে সরকারের অনুমোদন ছাড়াই আন্তর্জাতিক গেটওয়ে অপারেটরদের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে নির্ধারিত কল টার্মিনেশন রেট এবং রেভিনিউ শেয়ারিং কাঠামো বেআইনিভাবে বহাল রাখেন। এর ফলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়।
২০১৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে প্রতি মিনিট কল টার্মিনেশন রেট ছিল শূন্য দশমিক শূন্য ৩ মার্কিন ডলার। কিন্তু পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আইন উপেক্ষা করে এটি শূন্য দশমিক ০১৫ মার্কিন ডলার রেটেই আরও ২৮ মাস চালু রাখেন। একইসঙ্গে সরকার ও বিটিআরসির রেভিনিউ শেয়ারিং ৫১ দশমিক ৭৫ শতাংশের পরিবর্তে ৪০ শতাংশ এবং ওএড অপারেটরের শেয়ার ১৩ দশমিক ২৫ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ বহাল থাকে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিটিআরসির এই সাবেক কর্মকর্তাদের বেআইনি সিদ্ধান্তের কারণে তিন দফায় সরকারের বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের হার পরিবর্তন করে সরকারের অংশ কমিয়ে দেওয়ায় ক্ষতি হয়েছে ৩৮৩ কোটি ৭৩ লাখ ৮৩ হাজার ৪৩৬ টাকা। আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেশন রেট কমানোর ফলে আরও ২ হাজার ৯৪১ কোটি ৯৯ লাখ ৩৯ হাজার ৬৭৪ টাকা রাজস্ব হারায় সরকার। এ ছাড়া নির্ধারিত হারের বৈদেশিক মুদ্রা দেশে না আনায় রাষ্ট্র মোট ৫ হাজার ৬৮৫ কোটি ১ লাখ ২৪ হাজার ৯৭৫ টাকা বৈদেশিক আয় থেকে বঞ্চিত হয়। সর্বমোট আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ১০ কোটি ৭৪ লাখ ৪৮ হাজার ৮৫ টাকা।
অভিযোগে আরও বলা হয়, কর্মকর্তারা ক্ষমতার অপব্যবহার, অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ এবং অন্যদেরকে আর্থিকভাবে সুবিধা দিতে সরকারি স্বার্থ ক্ষুণ্ন করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪১৮ ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)