ঢাকায় পৌঁছেছেন ডা. জুবাইদা রহমান
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রায় সঙ্গী হতে ঢাকায় পৌঁছেছেন পুত্রবধু জুবাইদা রহমান। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১১টায় ডা. জুবাইদাকে বহনকারী বিমানের ফ্লাইট শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছায় বলে জানিয়েছেন বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য আতিকুর রহমান রুমন।
বিমান বন্দরে জুবাইদা রহমানকে অভ্যর্থনা জানান যুক্তরাজ্যের চিকিৎসক রিচার্ড বিলি, জুবাইদা রহমানের বড় বোন শাহিনা খান জামান ও তার স্বামী অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর সৈয়দ শফিউজ্জামান ও মিডিয়া সেলের সদস্য আতিকুর রহমান রুমন।
আরও পড়ুন : পিছিয়ে যাচ্ছে খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামসুল ইসলাম শামস, শারমীন আখতার, অবসরপ্রাপ্ত মেজর মঈনুল হোসেন।
লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইটে (বিজে-৩০২) ডা. জুবাইদা রহমান দেশের পথে রওনা হন।
এদিকে কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স না পৌঁছানোয় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি পিছিয়ে গেছে।
আরও পড়ুন : খালেদা জিয়ার জন্য সারা দেশে বিএনপির দোয়া ও প্রার্থনা আজ
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কারিগরি ত্রুটির কারণে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স শুক্রবার আসছে না। সব ঠিক থাকলে সেটা শনিবার পৌঁছাতে পারে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ম্যাডামের শরীর যদি যাত্রার উপযুক্ত থাকে এবং মেডিকেল বোর্ড যদি সিদ্ধান্ত দেয়, তাহলে ইনশাল্লাহ ৭ তারিখ (রোববার) ফ্লাই করবেন।’
আরও পড়ুন : যে কারণে পেছানো হলো খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা
খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রায় চিকিৎসকসহ মোট ১৪ জন সফরসঙ্গী হবেন। তারা হলেন---খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. মোহাম্মদ আনামুল হক চৌধুরী, ডা. ফখরুদ্দীন মোহাম্মদ সিদ্দিকী, ডা. শাহাবুদ্দীন তালুকদার, ডা. নুরুদ্দীন আহমদ, ডা. জাফর ইকবাল, ডা. মোহাম্মদ আল মামুন। আরও থাকবেন হাসান শাহরিয়ার ইকবাল, সৈয়দ শামীন মাহফুজ, মো. আব্দুল হাই মল্লিক, মো. মাসুদার রহমান, ফাতেমা বেগম ও রূপা শিকদার।
৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস এবং কিডনি, লিভার, ফুসফুস ও চোখের বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ২৭ নভেম্বর তাকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে নেওয়া হয়।
এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা টানা এক সপ্তাহ ধরে অপরিবর্তিত আছে। বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পাশাপাশি আমেরিকা (জনস হপকিন্স), ইউকে (লন্ডন ক্লিনিক) এবং চীনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি যৌথ মেডিকেল টিমের অধীনে তাঁর চিকিৎসা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন : খালেদা জিয়ার আপসহীন নেতৃত্ব তুলে ধরে সরকারি ডকুমেন্টারি প্রকাশ
গত বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ ছাড়া গত মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এ সময় তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। একইদিন বিএনপি চেয়ারপাসনকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রধান। রাত ৯টার দিকে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান ও বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান এভারকেয়ার হাসপাতালে যান।
এদিকে খালেদা জিয়ার আশু আরোগ্য কামনায় আজ শুক্রবার সারা দেশে মসজিদে মসজিদে দোয়া মাহফিল এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনা সভা করবে বিএনপি। পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাওয়া হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক