৭ ঘণ্টার চেষ্টায় জমেলা টাওয়ারের আগুন নিয়ন্ত্রণে
প্রায় সাত ঘণ্টার চেষ্টায় ঢাকার কেরানীগঞ্জের বাবুবাজার এলাকায় অবস্থিত জমেলা টাওয়ারের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর এখন তা পুরোপুরি নেভানোর কাজ চলছে।
আজ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী।
এদিকে, ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, ভবনে আটকে পড়া আরও তিনজনকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এর ফলে ভবনটি থেকে মোট ৪৫ জনকে উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা।
প্রচুর ধোঁয়ার কারণে তিনটি ব্রিদিং টেন্ডার, একটি হ্যাজম্যাট টেন্ডারসহ মোট ২০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে বলে সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে।
এর আগে, আজ শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আগানগর এলাকায় বাবুবাজার ব্রিজ-সংলগ্ন ওই ভবনটির নিচতলার ঝুট কাপড়ের গুদামে এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। গুদামে বিপুল পরিমাণ কাপড়, ঝুট কাপড় ও সুতা মজুত থাকার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ভবনটি একইসঙ্গে বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটির আন্ডারগ্রাউন্ডে বিশাল ঝুটের গুদাম, একতলা ও দোতলায় তৈরি পোশাকের দুই শতাধিক দোকান রয়েছে। তৃতীয় তলা থেকে ১০তলা পর্যন্ত আবাসিক ফ্ল্যাট। ৪৫টির মতো পরিবার সেখানে বসবাস করে। ভবনের বেইজমেন্টে প্রবেশপথ মাত্র দুটি। এ ছাড়া বেশিরভাগ দোকানের তালা ও শাটার কেটে কেটে আগুন নেভাতে হচ্ছে। এ কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লেগেছে বলে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সকাল ১০টার দিকে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে আগুনের তীব্রতা ও কালো ধোঁয়ায় ভবনের ভাড়াটিয়ারা অসুস্থ হয়ে পড়েন।
স্থানীয়রা জানান, ভবনটিতে আগুন নির্বাপণ ও ধোঁয়া নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় পরিস্থিতি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি গাড়ির পানি শেষ হয়ে গেলে বুড়িগঙ্গা নদী থেকে ছয়টি দমকল ব্যবহার করে ভবনটিতে পানি দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উমর ফারুক বলেন, আমরা আশপাশের ভবনগুলো নিরাপদ রাখতে সক্ষম হয়েছি।
ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের সদস্যরা উপস্থিত থেকে উদ্ধার কর্যক্রমে সহযোগিতা এবং ঘটনাস্থলের নিরাপত্তা দিচ্ছেন।
এ ঘটনায় তিন ও চারতলার ১০ থেকে ১২ জন ভাড়াটিয়া ধোঁয়ার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়ার পর তারা সুস্থ আছেন বলে জানা গেছে। তবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানায়নি ফায়ার সার্ভিস।

ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশ (ইউএনবি)