তারেক রহমান বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে ২৫ ডিসেম্বর ঢাকার মাটিতে নামবেন
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে ২৫ ডিসেম্বর ঢাকার মাটিতে নামবেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২০০২ সালে চীনে প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাষ্ট্রীয় সফরের সময়ে তারেক রহমানের সাথে পরিচিত হওয়ার সময়ে চীনের প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্য তুলে ধরে আজ সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব এ কথা জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনের পরে ২০০২ সালে আমরা চীনে গিয়েছিলাম আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে। সঙ্গে আমাদের নেতা (তারেক রহমান) ছিলেন। যখন গ্রেট হলে ম্যাডামকে গার্ড দেওয়া হচ্ছে, যখন পরিচয়ের পর্ব এসেছে। যখন আমাদের নেত্রী চীনের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন আমার পাশে একজন নেতার পরে তারেক রহমান সাহেব ছিলেন। যখন ম্যাডাম চীনের প্রধানমন্ত্রীকে বললেন, হি ইজ মাই সান। আমার ছেলে। তখন আমার এখনো মনে আছে, চীনের প্রধানমন্ত্রী তার হাতটি শক্ত করে দুই হাত ধরে বললেন, ক্যারি দ্য ফ্ল্যাগ অব ইউর ফাদার এন্ড মাদার। তোমার পিতা আর মাতার পতাকা উড্ডীন করে ধরো।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, সেই যে জাতীয়তাবাদী পতাকা, স্বাধীনতার পতাকা গণতন্ত্রের পতাকা; এই পতাকা নিয়ে তারেক রহমান সাহেব ২৫ তারিখে বাংলাদেশে আসছেন। আমরা সবাই সেদিন জেগে উঠব। আমরা গণতন্ত্রের জন্য, আমাদের স্বাধীনতার জন্য, সার্বভৌমত্বের জন্য অবশ্যই সবাই উঠব।
রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আলোচনা সভার শুরুতে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়ার আশু আরোগ্য কামনায় বিশেষ মোনজাত করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২৪ এর জুলাই যোদ্ধা যারা আছে তাদের অনেকের মধ্যে শঙ্কা আছে এই অন্তর্বর্তী সরকারের পরে নতুন সরকার এলে তাদের নিরাপত্তার কি ব্যবস্থা হবে? আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, জনগণের ভোটে আমরা যদি নির্বাচিত হয়ে আসি আমরা নিশ্চিত করব যে, জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা দেবো ইনশাল্লাহ, তাদেরকে কোনো রকমের অনিরাপত্তার ঝুঁকিতে যেতে দেব না।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭১ সালে যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল তারা আজকে নতুন করে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করতে চায়, তারা গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে চায়, মানুষের আশা-আকাঙ্খাকে নস্যাৎ করতে চায়। আগামী নির্বাচনে আমরা একটি উদার গণতান্ত্রিক দেশ গড়ব নাকি একটা পশ্চাৎপদ দেশের দিকে চলে যাব, সেই সিদ্ধান্ত হবে। আজকে বিভিন্ন রকম ধুয়া তুলে, মিথ্যা কথা বলে বিএনপিকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আজকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমাদের বন্ধু, আমাদের সহকর্মী, আমাদের সন্তান হাদির ওপরে আক্রমণ হয়েছে, আমরা তীব্র নিন্দা জানিয়েছি, সারাদেশে বিক্ষোভ করেছি এবং অবিলম্বে হত্যাকারীকে খুঁজে বের করবার জন্য আমরা আহ্বান জানিয়েছি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, “আক্রমণকারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। দেখা গেছে সে হচ্ছে আওয়ামী লীগের একজন সন্ত্রাসী। আজকে কেনো তারা বলে যে, বিএনপিকে জবাব দিতে হবে, কী কারণে। উদ্দেশ্য একটাই বিএনপিকে তারা হীন উদ্দেশ্যে চিহ্নিত করতে চায়।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, নতুন প্রজন্ম ইতিহাস জানেন না, গল্পও শুনতে চান না। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছিলেন এ কথাটা সত্যি। উনি ঘোষণা দিয়ে কি ঘুমিয়েছিলেন? উনি যুদ্ধ করেছেন এবং বাংলাদেশের যে কয়টি সেক্টর ছিল সকল সেক্টর কমান্ডারের অফিস ছিল ভারতের সীমানার ভিতরে। একমাত্র শহীদ জিয়াউর রহমানের অফিস ছিল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থেকে তিনি নিজ হাতে অস্ত্র নিয়ে বাংকারে থেকেছেন, মাঠে যুদ্ধ করেছেন। সেজন্য আমরা তার গর্বিত সৈনিক।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমদ, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচারয অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, যুবদলের নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজীব আহসান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক