এক লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে এফডিসি ছাড়ছেন মোল্লা

Looks like you've blocked notifications!
এফডিসিতে ঝালমুড়ি বিক্রেতা আবদুল মান্নান (মোল্লা)। ছবি : এনটিভি অনলাইন

বড়ি ফেরার মধ্যে এক অদ্ভুত আনন্দ আছে। এই আনন্দের মাত্রাটা বয়সভেদে ভিন্নতা পায় না। শিশু থেকে প্রবীণ, সবারই একই আনন্দ। প্রায় পাঁচ দশক ধরে বিএফডিসিতে ঝালমুড়ি বিক্রি করা আবদুল মান্নানেরও (মোল্লা) এবার বাড়ি ফেরার সময় এসেছে। তবে তাঁর এই বাড়ি ফেরায় যেমন আনন্দ আছে, তেমনই আছে দুঃখ ।
 
প্রথম দুঃখের কথা শোনা যায়, এফসিডির ভরা তারুণ্যে যুবক ছিলেন আবদুল মান্নান। তাঁর ভাষ্যমতে সময়টা ১৯৭২ সাল। তখন কুমিল্লা জেলার মনোহারগঞ্জ থানার মির্জাপুর গ্রাম থেকে ঢাকায় আসেন। বিনা-বেতনের খাদেম হিসেবে কাজ করেন এফডিসির মসজিদে। এরপর শুরু করেন এফডিসিতে মুড়ি বিক্রি। সেই সময় থেকে তাঁর হাতের মুড়ি খাননি, ঢাকাই সিনেমায় এমন কোনো তারকা নেই। বর্তমানে মোল্লা বার্ধক্যে এসে পৌঁছেছেন। এক হাত অচল। এফডিসিতেও দিনের পর দিন শুটিং নেই। ফাঁকা পড়ে আছে। মোল্লার বিক্রিও কম। তাই ফিরতে চান বাড়ি, জীবনের বাকিটুকু নিজ গ্রামে কাটাতে চান।
 
তবে বাড়ি গিয়ে কীভাবে সংসার চালাবেন মোল্লা? সেই চিন্তায় জানিয়েছিলেন, এক লাখ টাকা হলে বাড়ি ফিরে কিছু একটা করবেন। তাঁর সেই চিন্তা বাস্তবায়ন করতে একদল সাংবাদিক মোল্লার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এফডিসিতে আয়োজন করা হয় তিন দিনের ‘মোল্লা ফিরবে বাড়ি’ শিরোনামে মুড়ি উৎসব।
 
২৯ থেকে ৩১ জানুয়ারি চলে সেই উৎসব। সেই আয়োজনে শোবিজের অনেকেই মোল্লার বাড়ি ফিরতে পাশে দাঁড়িয়েছেন। আয়োজনে মোল্লার বাড়ি ফিরতে উঠেছে মোট এক লাখ ৮১ হাজার ৭০০ টাকা। আয়োজন-সংশ্লিষ্ট এক সাংবাদিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

এদিকে, উৎসব চলার সময় এনটিভি অনলাইন মোল্লার কাছে জানতে চেয়েছিল, এত দিনের প্রিয় এফডিসি ছেড়ে বাড়ি ফিরছেন, কেমন লাগছে? তাঁর উত্তর ছিল এমন, ‘শেষ বয়সে বাড়ি ফিরতে পারব, ভালো লাগছে। কিন্তু আবার এফডিসির জন্য মন খারাপ হচ্ছে। এত দিন এখানে ছিলাম, চলে যেতে হচ্ছে, মন খারাপ লাগছে।’
 
আর এফডিসিতে আসবেন কি না, জানতে চাইলে মোল্লা বলেন, ‘সবাই চাইলে আবার আসব মুড়ি খাওয়াতে।’ মোল্লা আর এফডিসিতে মুড়ি খাওয়াতে আসবেন কি না, সেটা সময় বলে দেবে। তবে বিএফডিসি মোল্লার মুড়ির অভাববোধ করবে।