‘উনিশ২০’ রিভিউ

কিছু প্রেম কখনো কখনো কেবলমাত্র বিচ্ছেদেই জন্মায়

Looks like you've blocked notifications!
গ্রাফিক্স : এনটিভি অনলাইন

একজন মানুষের ছন্নছাড়া জীবনের এলোমেলো গল্পগুলোর মাঝেই কখনো কখনো এমন কারোর আগমন ঘটে যার আগমনের কারণেই হয়তো একটা সময় ওই মানুষটার জীবনের গল্পগুলো রঙিন হয়ে ওঠে। তবে রঙিন হয়ে ওঠা সেই গল্পগুলো ক্ষণিকের জন্য ভালোবাসার মায়াজালে বন্দি হওয়ার সুযোগটা পেলেও সেই গল্পগুলোর মাঝেই যখন বিচ্ছেদের জন্ম হয় তখনই একটা সম্পর্ক অদৃশ্য এক দেয়ালের মাঝে বন্দি হয়ে যায়। তবে বিচ্ছেদের মাঝে হারিয়ে যাওয়া গল্পটাই যখন দুজন মানুষের প্রিয় অনুভূতিগুলোর সাথে মিশে যায় তখনই হয়তো একটা গল্প তার সুন্দর উপসংহারটাকে খুঁজে পায়।

এবারের ভালোবাসা দিবসে মিজানুর রহমান আরিয়ান এর হাত ধরে এমন একটা ভালোবাসার গল্প দর্শকদের সামনে এসেছে যে গল্পটার রেশ হয়তো দর্শকদের মাঝে রয়ে যাবে অনেকদিন। সম্পর্ক, ভালোবাসা, বিরহ কিংবা বিচ্ছেদ এই সবকিছুই যেন ওয়েবফিল্ম ‘উনিশ২০’ এর গল্পটার মাঝে খুঁজে পেয়েছে তাদের পরিপূর্ণতা।

দর্শকদের অনুভূতিগুলোকে খুব সুন্দর করে পড়ে নিতে পারেন বলেই হয়তো তার বলা গল্পগুলো সবসময় দর্শকদের অনুভূতিগুলোর মাঝে গেঁথে যায়। আর এবার ওয়েবফিল্ম ‘উনিশ২০’ এর গল্পটা তাই দর্শকদের ওই অনুভূতিগুলোর মাঝেই খুঁজে পাবে তাদের নতুন গন্তব্যের ঠিকানা। গল্পটা আমার মাঝে দারুণ মুগ্ধতা ছড়িয়েছেই তবে গল্পের পাশাপাশি এই ওয়েবফিল্মের অন্যান্য আরও অনেক বিষয়ও দারুণভাবে আমার নজর কেড়েছে। 

পাশাপাশি ওয়েবফিল্ম ‘উনিশ২০’ এর অসাধারণ সিনেমাটোগ্রাফির কাজ, দারুণ কালার গ্রেডিং কিংবা মনোমুগ্ধকর সব লোকেশনের সৌন্দর্য যেমন আমার চোখের কোণে আটকে গেছে তেমনি ওয়েবফিল্ম ‘উনিশ২০’ এর তিনটা শ্রুতিমধুর গানও ইতিমধ্যেই আমার স্মৃতির মাঝে গেঁথে গেছে।

সিনেমাটা সত্যি মনটা ভালো করে দিয়েছে অনেকগুণ। যেই পার্কার পেন গিফট পেয়েছিল কবিতা লিখার জন্য সেই পেন দিয়ে ডিভোর্স পেপার সাক্ষর করার মূহুর্তটা গুজবাম্প করে দিয়েছে জাস্ট। আর অভিনয়ের কথা যদি বলি, বছরের শুরুতেই অসাধারণ অভিনয় করে দর্শকদের মনে জায়গা করে নেয়া আরিফিন শুভকে এখানে যেন অন্যভাবে আবিষ্কার করলাম। নিজেকে চরিত্রের প্রয়োজনে বারবার ভাঙতে পারার মতো গুণ সবার মধ্যে থাকে না। আরিফিন শুভ সে জায়গা থেকে প্রতিটি চরিত্রে নিজেকে উজাড় করে দিচ্ছেন, নিজেকে গল্পের চরিত্রের কাছে নিবেদিত করে চলছেন। 

শুভর সাথে আফসান আরা বিন্দুর রসায়নটাও জমেছিল বেশ। কৈশোরের সেই ছেলেটা যার সবকিছুতেই হেঁয়ালি। দুয়েকটা জায়গায় মিস এক্সপ্রেশন মনে হয়েছে কিন্তু এটা দিয়ে তাকে জাজ করার সুযোগ সে রাখেনি। শেষ পর্যন্ত মুগ্ধ করেছে, প্রশংসার দাবীদার। 
এতদিন পর অভিনয়ে ফিরেও বিন্দু যেন অনেকটাই সাবলীল আর পরিমিত। অনেকদিন পর সেই মিষ্টি বিন্দুকে পেলাম। খুব ভালো লেগেছে। এই জুটির রসায়নটা মন ছুঁয়েছে বেশ। তানিয়া আহমেদ মিষ্টির অভিনয় দেখলাম অনেকদিন পর। দেখতেই ভালো লেগেছে। আর ইন্তেখাব দিনার বরাবারই অসাধারণ।
 
সবশেষে বলি, পৃথিবীর প্রতিটি মানুষই সম্পর্কের মায়াজালে বন্দি হতে চায়। আমিও চাই। সিনেমার মতো করে বলি। সব প্রেম সম্পর্কে নয়, কিছু প্রেম কখনো কখনো কেবলমাত্র বিচ্ছেদেই জন্মায়।

লেখক : ব্র্যান্ড মার্কেটিয়ার