সংগীতে আরও এক নক্ষত্রপতন : ৯০ বছরে নিভল সন্ধ্যাপ্রদীপ

Looks like you've blocked notifications!
ভারতীয় বাংলা গানের কালজয়ী গায়িকা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। ছবি : সংগৃহীত

বাংলা আধুনিক গানের প্রবাদপ্রতীম শিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় আর নেই। কলকাতার একটি হাসপাতালে আজ সন্ধ্যায় তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।

মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। গেলো কয়েকদিন ধরে অসুস্থ হয়ে আইসিইউতে ছিলেন এই কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী।

লতা মঙ্গেশকরকে হারানোর শোক না কাটতেই আরও এক নক্ষত্রের পতনে ভারতীয় সংগীতাঙ্গন তথা শোবিজে নেমে চলছে শোকের মাতম।

বাংলা ছায়াছবির গান, বেসিক আধুনিক গানের সম্রাজ্ঞী সন্ধ্যা উচ্চাঙ্গ সংগীতেও বিশেষ নৈপুণ্যের পরিচয় রেখেছিলেন।

১৯৩১ সালের ৪ অক্টোবর কলকাতার ঢাকুরিয়ায় রেল কর্মকর্তা নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ও হেমপ্রভা দেবীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। তিনি ছয় ভাইবোনে মধ্যে সবচেয়ে ছোট ছিলেন।

২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান বঙ্গবিভূষণ পান ভারতীয় এই সংগীতশিল্পী ও বাংলা সঙ্গীত বিশেষজ্ঞ। ১৯৭০ সালে ‘জয়জয়ন্তী’ ও ‘নিশিপদ্ম’ চলচ্চিত্রে তার গানের জন্য সেরা নেপথ্য গায়িকার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

শাস্ত্রীয় সংগীত থেকে চলচ্চিত্রের গান এবং আধুনিক গানের অ্যালবাম মিলিয়ে তাঁর কাজের পরিধি অনেক। ১২ বছর বয়স থেকে তিনি গান গেয়েছেন। সংগীতের পেছনে জীবনের ৭৫টি বছর ব্যয় করেছেন। গানে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর জুটি বহু বছর ধরে বাঙালির মনজুড়ে আছে। একসময় সুচিত্রা সেনের কণ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। ‘এ শুধু গানের দিন, এ লগন গান শোনাবার’, ‘মধুমালতি’, ‘হয়তো কিছুই নাহি পাব’, ‘তুমি না হয়’, ‘আয় বৃষ্টি ঝেঁপে’, ‘যমুনা কিনারে’সহ অনেক কালজয়ী গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি।

জানুয়ারির শেষ দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। সেসময় তাঁর জ্বর আসলে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাঁকে কলকাতার শেঠ সুখলাল মেমোরিয়াল হাসপাতালে (এসএসকেএম) ভর্তি করা হয়। পরে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর শরীরে করোনার পজিটিভ ধরা পরে, সেই সঙ্গে ছিল ফুসফুসের সংক্রমণ ও হৃদযন্ত্রের সমস্যাও।

সেসময় তাঁকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু করোনা পজিটিভ হওয়ায় তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে। করোনা থেকে সেরে ওঠার পরেও গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই সেখানেই চিকিৎসারত ছিলেন।

মঙ্গলবার সকালে তাঁর অবস্থা আচমকাই সঙ্কটজনক হয়ে পড়ায় তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়। চিকিৎসকরাও সাধ্যমতো প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। এদিন সন্ধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন কিংবদন্তী শিল্পী।

১৯৩১ সালের ৪ অক্টোবর কলকাতার ঢাকুরিয়াতে জন্মগ্রহণ করেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। বাবা নরেন্দ্র মুখোপাধ্যায় ও মা হেমপ্রভা দেবীর ছয় সন্তানের সবচেয়ে ছোট ছিলেন সন্ধ্যা।