সহসা খুলছে না প্রেক্ষাগৃহ
করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর গত ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ করা হয় দেশের সব প্রেক্ষাগৃহ। চলতি মাসের শুরুতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রেক্ষাগৃহ খুলে দিতে চিঠি দেওয়া হলেও তাতে নারাজ সিনেমা হল প্রশাসক।
এখনই প্রেক্ষাগৃহ খুলতে চাইছেন না সিনেমা হল মালিক সমিতির দায়িত্বে থাকা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ও হল প্রশাসক আবদুল আউয়াল। স্বাস্থ্যবিধি মেনে হল চালানো কঠিন বলেও এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন তিনি।
আবদুল আউয়াল বলেন, ‘গণপরিবহন চলা আর সিনেমা হল খুলে দেওয়া এক নয়। সিনেমা হল একটি বদ্ধ জায়গা, এমন স্থানে করোনার সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যে কারণে এখনই সিনেমা হল খুলে দেওয়ার পক্ষে আমি মত দিতে পারছি না। আপাতত সিনেমা হল খুলছে না।’
৭ জুন চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিবেশক সমিতি থেকে সিনেমা হল প্রশাসককে চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ১৮ মার্চ থেকে সিনেমা হল বন্ধ রয়েছে। তাতে চলচ্চিত্রের প্রযোজক, পরিবেশক ও প্রদর্শকেরা কোটি কোটি টাকা লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন।
ওই প্রসঙ্গ তুললে আবদুল আউয়াল বলেন, ‘দেখেন, আমি এখন সিনেমা হল মালিক সমিতির দায়িত্বে আছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সিনেমা হল খুলে দিলে দেখবে কে? আমার একার পক্ষে তো তা দেখা সম্ভব নয়। যনি সঠিক নিয়ম মানা না হয়, আর সেখান থেকে যদি কেউ আক্রান্ত হন, তবে আমাকেই জবাবদিহি করতে হবে। গণপরিবহন সীমিত আকারে খুলে দেওয়া হয়েছে। সেখানে জীবনের তাগিদে মানুষ চড়ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিন্তু খোলা হয়নি। এমন অনেক প্রতিষ্ঠানই বন্ধ। করোনার প্রকোপ তো দিন দিন বেড়েই চলেছে। জেনে বুঝে এত বড় ঝুঁকি আমি কেমন করে নেব?’
এ বিষয়ে কথা হয় চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলমের সঙ্গে। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত সংখ্যক দর্শক নিয়ে হল খোলার জন্য আমরা আবেদন করেছিলাম সমিতির পক্ষ থেকে। এখন সাংবাদিকদের কাছে জানতে পারছি হল খোলার বিপক্ষে মত দিয়েছেন সিনেমা হল মালিক সমিতির দায়িত্বে থাকা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ও হল প্রশাসক আবদুল আউয়াল সাহেব। তবে তিনি কিন্তু আমাদের লিখিত বা অফিশিয়ালি কোনো কিছু এখনো জানাননি। বিষয়টি নিয়ে আশা করি তিনি আমাদের অফিশিয়ালি জানাবেন। আমরা এ বিষয়ে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) তাঁকে চিঠি দেব।’
আনুষ্ঠানিক ঘোষণার ব্যাপারে জানতে চাইলে হল প্রশাসক আবদুল আউয়াল বলেন, ‘১৮ মার্চ থেকে হল বন্ধ করেছি। তারপর তো খোলার বিষয়ে আমরা কিছু বলিনি। যত দিন নতুন ঘোষণা না দেব, এর আগ পর্যন্ত আগের ঘোষণাই বহাল থাকবে। এ কারণে উনাদের চিঠি দিয়ে উত্তর দেওয়া হয়নি। উনারা আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে হল খোলার বিষয়টি বিবেচনা করতে বলেছেন, আমাদের বিবেচনায় মনে হয়েছে, সিনেমা হল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালানো সম্ভব নয়।’
হল প্রশাসকের বক্তব্যে হতাশ শামসুল আলম। তিনি বলেন, ‘আমাদের চলচ্চিত্র ধ্বংসের পথে। সিনেমা হল খোলা না হলে এই ইন্ডাস্ট্রি আর টেকানো যাবে না। আমাদের বেশ কিছু চলচ্চিত্র মুক্তির অপেক্ষায় আছে। আবার কিছু চলচ্চিত্র রয়েছে, যেগুলো মুক্তি দেওয়ার পর করোনার কারণে চলতে পারেনি। এমন অবস্থা চলতে থাকলে সব শেষ হয়ে যাবে।’