পশ্চিম বাংলার ছোট ও বড় পর্দার প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায় শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে মারা যান। কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে আনন্দবাজারের খবরে। সপ্তমীর সন্ধ্যায় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন তিনি। চার দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শনিবার তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পশ্চিমবঙ্গে প্রকাশিত বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, সপ্তমীর সন্ধ্যায় হাওড়ার দিকে ফেরার সময় সাঁতরাগাছি সেতুতে একটি লরির সঙ্গে সংঘর্ষে পীযূষের গাড়িটি একেবারে দুমড়ে যায়। এ সময় তাঁর গাড়ির সামনের আসনে ছিলেন নৃত্যশিল্পী মালবিকা সেন। তিনি আহত হলেও সৌভাগ্যক্রমে প্রাথমিক চিকিৎসার পরই সুস্থ হয়ে ওঠেন। তবে গুরুতর আহত পীযূষের অবস্থার উন্নতি হয়নি কোনোভাবেই। তাঁর জন্য চিকিৎসকদের আলাদা একটি বোর্ডও গঠন করা হয়। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি।

ওই নার্সিংহোমের তরফে প্রদীপ টন্ডন জানান, পীযূষের ডান হাত, ডান পা ও বুকের ডান দিকের পাঁজরের পাঁচটি হাড় ভেঙে যায়। গুরুতর চোট ছিল মুখের দুই পাশে ও কপালে। প্রচুর রক্তপাত হওয়ায় এবং হাড় ভেঙে অস্থিমজ্জা রক্তে মিশে যাওয়ায় রক্তে সংক্রমণ বাড়ছিল।

রোববার, অর্থাৎ আজ সকালেই ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর দেহ কলকাতা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ দুপুরে প্রয়াত পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায়ের দেহ নিয়ে যাওয়া হবে তাঁর বাড়িতে। দুপুর ২টার দিকে সেখান থেকে লাশ নিয়ে যাওয়া হবে টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে। সেখান থেকে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জন্য যাওয়া হবে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে।

পীযূষ পশ্চিম বাংলার বিভিন্ন সিরিয়ালে একজন নিয়মিত অভিনেতা। এ ছাড়া ‘গয়নার বাক্স’, ‘ইতি শ্রীকান্ত’, ‘অটোগ্রাফ’, ‘ব্যোমকেশ বকশী’, ‘আবার ব্যোমকেশ’, ‘ল্যাপটপ’ ও ‘আবর্ত’-এর মতো বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করে যথেষ্ট প্রশংসা পেয়েছেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘গুণী অভিনেতা ছিলেন, আত্মার শান্তি কামনা করি। তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই।’ এ ছাড়া ছোট পর্দা, মঞ্চ এবং টালিউডের পীযূষের সহকর্মী ও সুহৃদরাও শোক জানান।