ফিল্মফেয়ারের সাক্ষাৎকার
সবকিছুই টাকার জন্য করি না : বিদ্যা
বয়স ৩৫ পেরিয়েছে। তাহলে কি আর নায়িকা হওয়া সাজে? গ্ল্যামার আর আবেদনের ছড়াছড়ি যে ইন্ডাস্ট্রিতে, সেখানে এই বয়সে মেলে মুরব্বিদের রোল। কিন্তু বিদ্যা বালানের কাছে গেলে সব হিসাব উল্টে যেতে বাধ্য। আবেদনের পাল্লায় এখনো অনেককে টেক্কা দিতে পারেন ‘এন্টারটেইনমেন্ট’-এর সংজ্ঞা বদলে দেওয়া বিদ্যা।
পুরুষশাসিত বলিউডে যে একলা নারীও বাজিমাত করে দিতে পারেন, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন ‘দ্য ডার্টি পিকচার’, ‘কাহানি’র মতো ছবি দিয়ে। ‘হামারি আধুরি কাহানি’র ব্যর্থতার পর মোটেও মুষড়ে পড়েননি। এখন কাজ করছেন ‘এক আলবেলা’ নামের একটি মারাঠি ছবিতে। মারাঠি ছবিতে এটিই তাঁর প্রথম কাজ। বলিউডের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ফিল্মফেয়ারের সঙ্গে এ নিয়ে দিনকয়েক আগে কথা বলেছেন বিস্তর।
ফিল্মফেয়ার : এই প্রথম মারাঠি ছবিতে কাজ করছেন? ‘এক আলবেলা’তে কী দেখে কাজ করতে রাজি হলেন?
বিদ্যা : আমি সব সময়েই মারাঠি ছবিতে কাজ করতে চেয়েছি, কারণ আমার জন্ম আর বড় হয়ে ওঠা মুম্বাইয়ে। আমার ভাষা শিখতে ভালো লাগে। আমি মারাঠি ভাষার সঙ্গে খুবই পরিচিত, কারণ আমি তো এই এলাকায় বেড়ে উঠেছি। আমার বোনের স্বামীও আবার মহারাষ্ট্রের। কাজেই আমার অনেক বন্ধু এবং আত্মীয় রয়েছেন, যাঁরা মহারাষ্ট্রের। এই আগ্রহের কথা ‘ববি জাসুস’ ছবিতে আমার মেকআপ আর্টিস্ট বিদ্যাধর ভাটকে জানিয়েছিলাম। সে তখনই ‘এক আলবেলা’র জন্য কাজ করছে। সে আমাকে জানাল যে, এই ছবিতে গীতা বালির চরিত্রে অভিনয়ের জন্য একজনকে দরকার এবং নির্মাতা আমার সঙ্গে কথা বলতে চান। কাজেই আমি আগ্রহী কি না, সেটা জানা দরকার। পরিচালক শেখর সর্তান্ডেল আমাকে ছবির কাহিনী বললেন, আমারও ভালো লাগল। এটা হচ্ছে বিখ্যাত অভিনেতা ভগবান দাদাকে নিয়ে একটি বায়োপিক ছবি। গীতা বালির ব্যাপারে আমার ঝোঁক আছে। অসামান্য তাঁর ব্যক্তিত্বের ঝলক। ‘শাম ঢলে, খিড়কি টলে’ তো আমার সব সময়ের পছন্দের গান।
ফিল্মফেয়ার : মারাঠি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি আপনার খরচ সামলাতে পারবে?
বিদ্যা : এটা একটা বিশেষ চরিত্র। খুব বেশি সময় এর জন্য কাজ করতে হবে না, বড়জোর দিন ছয়েক লাগবে, রিহার্সেলসহ। আর সবকিছুই তো টাকার জন্য করি না। আমার ব্যয়ভার বহনের জন্য আইডিয়াটাই যথেষ্ট ছিল (হাসি)। আইডিয়াটা হলো, গীতা বালির চরিত্রে আমি!
ফিল্মফেয়ার : অন্যান্য ভাষার ছবিতে কাজ করতে চান?
বিদ্যা : ‘পরিণীতা’র আগেই আমি একটি বাংলা ছবিতে কাজ করেছি, সেটাই আমার প্রথম চলচ্চিত্র। কাজেই অন্য ভাষায় কাজ করতে আমি সব সময়ই প্রস্তুত। দক্ষিণী, বাংলা ও মারাঠি ছবির বেশ প্রস্তাবও পাচ্ছি। শুধু স্ক্রিপ্ট ভালো হতে হবে, তাহলেই চলবে।
ফিল্মফেয়ার : ‘হামারি আধুরি কাহানি’র পর আর তো কোনো হিন্দি ছবিতে সাইন করেননি। কারণ কী?
বিদ্যা : তেমন এক্সাইটিং কিছু পাইনি। মজাদার স্ক্রিপ্টগুলো আমি ঠিকই পড়ি, তবে আমি এমন একটা কিছু খুঁজে বেড়াচ্ছি, যেটা একেবারে আমাকে তাজ্জব করে দেবে। আমার কোনো তাড়াহুড়ো নেই, আবার আমি কোনো বিরতিতেও যাচ্ছি না। আমি গল্প শুনছি, স্ক্রিপ্ট পড়ে যাচ্ছি নিয়মিত। কাজের তো কোনো মৃত্যু নেই। তবে আমি এমন একটা কিছু করতে চাইছি, যেমন আমি আগে কখনোই করিনি।
ফিল্মফেয়ার : আপনার স্বামী সিদ্ধার্থ রায় কাপুরের মতো আপনিও কি চলচ্চিত্র নির্মাণের দিকে ঝুঁকবেন?
বিদ্যা : সে রকম কোনো চিন্তা নেই। আমার জন্য প্রোডাকশন মোটেও ছেলের হাতের মোয়া নয়।
ফিল্মফেয়ার : সবশেষ কোন ছবি দেখেছেন?
বিদ্যা : ‘বাহুবলি’ দেখেছি, খুব ভালো লেগেছে। ছবিটা দারুণ উপভোগও করেছি।
ফিল্মফেয়ার : শুটিং না থাকলে দিন কাটান কীভাবে?
বিদ্যা : সেটের বাইরে সময় কাটানো জরুরি, কারণ তখনই সেটের মজাটা টের পাওয়া যায়! তখন আপনি আরো দক্ষ হয়ে উঠবেন। আমি বই পড়ি, গান শুনি, সিনেমা দেখি, প্রিয় মানুষের সঙ্গে সময় কাটাই, ফোনে চ্যাট করি আর প্রচুর টেলিভিশন শো দেখি। আজকাল এগুলোর জন্য হাতে অনেক সময় পাচ্ছি, বিষয়টা উপভোগও করছি।