কাজের ফাঁকে সুজানা-ইমির আড্ডা
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/03/17/photo-1426583651.jpg)
সুজানা জাফর ও শাবনাজ সাদিয়া ইমি দুজন দুই জগতের তারকা। তাঁরা দুজনেই এখন একই পথে হাঁটছেন। অভিনয়েই তাঁরা এখন বেশি সময় দিচ্ছেন। গতকাল ১৬ মার্চ উত্তরায় স্বপ্নীল শুটিং স্পটে তাঁরা শুটিং করছিলেন গোলাম মুক্তাদির পরিচালিত ‘অপূর্বা’ ধারাবাহিক নাটকটিতে।
সেখানেই দেখা হলো তাঁদের সঙ্গে। দুই তারকার পাশাপাশি কথা হলো পরিচালক গোলাম মুক্তাদিরের সঙ্গেও। বর্তমান সময়ের বাংলা নাটক ও নিজের কাজ সম্পর্কে পরিচালক বললেন, “বাংলা নাটক এখন আর কেউ দেখে না—কথাটি পুরোপুরি সত্য নয়। ‘অপূর্বা’ নাটকটিতে আমরা ভালো সাড়া পাচ্ছি। হয়তো গ্রাম থেকে অপরিচিত কেউ আমাকে ফোন করে বলছেন, না, নাটকটি তাদের ভালো লাগছে। তবে আমার বন্ধুবান্ধব, চ্যানেলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সবাই নাটকটি দেখে অনেক খুশি। এ ছাড়া মিডিয়ার অনেকেই নাটকটির প্রশংসা করছেন।”
নাটকে নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে সুজানা জাফর বলেন, ‘আমি এখন নাটকে বেশি কাজ করতে চাই। আমরা যখন মডেলিং করি, তখন এক-দুদিনেই কাজটা শেষ হয়ে যায়। কিন্তু নাটকে দীর্ঘ একটা সময় দিতে হয়। এটা একটু কষ্টকর হলেও উপভোগ করছি।’
সহশিল্পী ইমি প্রসঙ্গে সুজানা বলেন, ‘আমি ইমিকে তুই করে ডাকি। ইমির সঙ্গে আমার জানাশোনা প্রায় ১২ বছরের। আমাদের হয়তো শো ছাড়া দুজনের দেখা হতো না, কিন্তু আমাদের আত্মিক মিল রয়েছে। এখন প্রায় শুনতে পাই, মডেলদের একে অপরের সঙ্গে মিল অনেক কম। অনেকেই ঈর্ষাকাতর। কিন্তু আমাদের সময় সেটা ছিল না। আমরা একে অপরকে অনেক সাহায্য করতাম। শো ছাড়াও কোনো অনুষ্ঠানে আমাদের দেখা হলে অনেক খুশি হতাম।’
একটানা কথা বলে থামলেন সুজানা। তবে আলাপ চালিয়ে নিতে প্রশ্ন করলাম সুজানার হাতে ধরা সানগ্লাস নিয়ে। মিষ্টি হেসে সুজানা বললেন, তাঁর সংগ্রহে ১৫-২০টির মতো সানগ্লাস আছে। অধিকাংশ সানগ্লাস যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা। ব্র্যান্ড ও নন-ব্র্যান্ডের সানগ্লাস আছে। বাদামি ও কালো রঙের সানগ্লাস তাঁর বেশি প্রিয়। গাড়িতে সব সময় তিনি দুই-তিনটি সানগ্লাস রেখে দেন। সানগ্লাস ব্যাগে নিতে যদি ভুলে যান, তাই গাড়িতে কিছু রেখে দেন। যখন যেটা ভালো লাগে, তখন সেটাই পরেন। তবে বেশির ভাগ সময় ওয়ের্স্টান পোশাকের সঙ্গেই পরেন।
সুজানা জাফরের পাশেই বসা ছিলেন তারকা র্যাম্প মডেল শাবনাজ সাদিয়া ইমি। তিনি বলেন, “সুজানার মধ্যে বন্ধুত্বসুলভ ভাব অনেক বেশি। ‘অপূর্বা’ নাটকে আমরা দুজন এখন বন্ধু। পর্দার বাইরেও কিন্তু আমাদের ভালো মিল। ইউনিটে যতক্ষণ থাকি, একে অপরের সঙ্গে অনেক গল্প করি।”
র্যাম্প মডেলিং থেকে এসে অভিনয়কে রপ্ত করতে পেরেছেন কি না—এমন প্রশ্নের উত্তরে ইমি বলেন, ‘আমার বাবা এ কে এম জসিমউদ্দিন ব্যাংকার ছিলেন। বাবা কিন্তু মঞ্চনাটকও করতেন। হয়তো সেখান থেকে অভিনয় কিছুটা আমার মধ্যে এসেছে। আমি যে একেবারেই নাটকে অভিনয় করিনি, তা কিন্তু নয়। ২০০৩ সাল থেকে র্যাম্পের পাশাপাশি নাটকে অভিনয় করছি। নাটকে আমি নিয়মিত ছিলাম না, এটা সত্যি। আর কিছু নাটক ফোকাসও হয়নি সেভাবে। এ জন্যই অনেকে হয়তো জানে না যে আমি অভিনয়ও জানি। আর এখন নিয়মিত কাজ করায় অভিনয় আরো ভালোভাবে শেখা হচ্ছে। আমি মনে করি, মডেলিং, অভিনয় যা-ই বলেন না কেন, নিজের ভেতরে তা যদি না থাকে, কখনো সেটা শিখিয়ে করা সম্ভব নয়। আমার সম্পর্কে অনেকেই হয়তো ভাবে, আমি নাটকে অভিনয় করতে চাই না। এটা ভুল ধারণা। আমার এতদিন মনে হতো, নাটকে অভিনয় করার জন্য অনেকেই আছেন; কিন্তু র্যাম্পে একজন ইমি না থাকলে কিছুটা ঘাটতি থেকে যাবে। তাই শোতে বেশি সময় দিয়েছি। আমি কিন্তু নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে কাজ করতে চাই।’
চলচ্চিত্রে কাজ করার ইচ্ছা আছে কি না—জানতে চাইলে ইমি বলেন, ‘বলব না যে ইচ্ছা নেই। তবে আইটেম গানে নাচার অনেক প্রস্তাব পাই, সেটা কখনো করব না। আমি নিজেই এখন চলচ্চিত্রের জন্য প্রস্তুত নই।’
কথায় কথায় অনেক সময় যে চলে গেছে, সেটা বোঝা গেল পরিচালকের ডাকে। তিনি এসে জানালেন, পরবর্তী শটের জন্য লাইট রেডি। শট দিতে হবে ঝটপট। সুজানা ও ইমি চকলেট আর আইসক্রিম হাতে নিয়ে সেটে গেলেন। চকলেট আর আইসক্রিম কেন?
সুজানা হেসে বললেন, ‘নাটকের দৃশ্যে ইমি এগুলো আজ আমাকে উপহার দেবে।’ ইমিও হেসে বললেন, ‘শট শেষে দুজন একসঙ্গে বসে এগুলো খাব মজা করে।’