‘সিটিজেন কেন’ অভিনেত্রী ক্যাথরিন ট্রস্পারের চিরবিদায়
ক্যাথরিন ট্রস্পার পপার। বিখ্যাত ‘সিটিজেন কেন’ চলচ্চিত্রের সাদা-কালো পর্দায় উপস্থিত হওয়া সব অভিনেতা-অভিনেত্রীর মধ্যে ছিলেন সর্বশেষ জীবিত অভিনেত্রী। গত রোববার ম্যানহ্যাটনে নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে অবশেষে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্যানুসারে মৃত্যকালে তাঁর বয়স ছিল ১০০ বছর।
পপারের বয়স যখন ২৫, তখন তিনি কাজ করতেন একইসাথে নির্মাতা, সহ-রচয়িতা এবং তারকা অরসন ওয়েলসের ব্যক্তিগত সহকারি হিসেবে। ১৯৪১ সালে ‘সিটিজেন কেইন’ নির্মাণের সময় হঠাৎই অরসন ওয়েলস তাঁর উপর অর্পণ করলেন আরেকটি গুরু দায়িত্ব। যেটি ছিল এই ‘ক্ল্যাসিক’ সিনেমায় একজন ‘নিউজপেপার ম্যাগনেট’-এর ভূমিকায় অভিনয় করা। আর এভাবেই দর্শক দেখতে পায় ‘সিটিজেন কেন’ ছবি সেই ফটোগ্রাফারটিকে—যিনি বিস্ময়ের সাথে জিজ্ঞেস করেন, ‘রোজবাড আবার কী?’
গত বছরের কথা। এক ইন্টারভিউয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল—কীভাবে তিনি এ রকম দুটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব একসাথে পালন করেছিলেন তখন? জবাবে পপার বলেন, ‘আমি আমার নোটবুকটা রাখতাম আর দৌঁড় দিতাম সেটে, আবার ফিরে এসে নেমে পড়তাম নোটবুক নিয়ে’। ‘সিটিজেন কেইন’ ক্ল্যাসিক মর্যাদা পাওয়ার অনেক পর, পলিন ক্যেল তাঁর লম্বা রচনা ‘রেইজিং কেইন’ এ প্রশ্ন তুললেন সিনেমাটির চিত্রনাট্যে ওয়েলসের ভূমিকা নিয়ে। সে সময় পপার তুলেছিলেন পাল্টা আওয়াজ, ‘স্ক্রিপ্টে যদি ওয়েলসের ভূমিকাই না থাকে, তবে ওই সময়টাতে সারাক্ষণ আমি কী টাইপ করছিলাম?’
পপারের জন্ম হাডসন, ওয়াইওমিংয়ে। পড়াশোনা করেছেন ইউএসসি আর ইউসিএলএতে। কিন্তু দেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সময় পরিবারকে সাহায্য করতে ছেড়ে দেন পড়াশোনা আর কাজ জুড়ে নেন ওয়েলসের সাথে।
১৯৪৩ সালে বিয়ে করেন মার্টিন পপারকে, যিনি পেশায় ছিলেন একজন আইনজীবি এবং ক্যারিয়ারের একটা সময় লড়েছিলেন ডাল্টন ট্রাম্বো আর জন হাওয়ার্ড ল’সনের মতো ‘স্ক্রিন রাইটার’ দের হয়েও। তাঁর ভাই গাই ট্রস্পারও পেশায় ছিলেন একজন চিত্রনাট্য লেখক, যাঁর কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘বার্ডম্যান অব অ্যাল্কট্রাজ্যান্ড’, ‘দ্য স্পাই হু কেইম ইন ফ্রম দ্য কোল্ড’।
মৃত্যকালে পপার রেখে গেছেন দুই সন্তান, পাঁচ নাতি-নাতনি , নাতি-নাতনির পাঁচ ছেলেমেয়ে এবং একটি ‘সিটিজেন কেইন’। ‘রোজবাড’-এর মতো, ‘সিটিজেন কেন’-এর শেষ মানুষটিও চলে গেলেন অনেকটাই অলক্ষে।