কিউরিয়াসে ঘড়ি প্রদর্শনী
সময়ই হয়তো এই পৃথিবী ও ব্রহ্মাণ্ডের নিয়ামক। আমাদের জীবনও সময়ের বৃত্তে বন্দি। তবে সময়কে নানা নিক্তিতে পরিমাপ করে মানুষ চেয়েছে নিজেদের জীবনকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে। আর সেই ইচ্ছা থেকেই উদ্ভাবন সময় মাপার যন্ত্রের, যাকে আমরা ঘড়ি বলে থাকি।
ছায়াঘড়ি, বালুঘড়ি ইত্যাদি পর্ব পেরিয়ে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যন্ত্রঘড়ির। তারও উৎকর্ষ সাধন হয়েছে সময়ে সময়ে। অ্যানালগ থেকে এখন ডিজিটাল পর্বে উন্নয়ন ঘটেছে ঘড়ির। জমানা এখন স্মার্ট ঘড়ির। তা সত্ত্বেও ডিজাইনারদের ঘড়ির কদর কমেনি। এমনকি মোবাইল ফোননির্ভর জীবনে ঘড়ির চাহিদা কমেছে, তা বলা যাবে না। ফলে বিশ্বজুড়ে ঘড়ি যেমন তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের ঘড়ি, তেমনই ক্রেতাও বাড়ছে। ঘড়ির জনপ্রিয়তা সব বয়সিদের মধ্যেই আছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়।
তবে বাংলাদেশের লাইফস্টাইল ব্র্যান্ডগুলোকে সেভাবে ঘড়ি নিয়ে কাজ করতে দেখা যায় না। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম অবশ্যই তুলনায় নবীন লাইফস্টাইল কিউরিয়াস। তারা ঘড়ি নিয়ে এক অভিনব ভাবনার বাস্তবায়ন ঘটিয়েছে। অন্তত বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটা একটা দৃষ্টান্ত বটে। ডেকো লেগাসি গ্রুপের চেয়ারম্যান এম শাহাদাত হোসেন কিরণের ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিয়েছে এই ব্র্যান্ড। তিনি মূলত তাঁর ভাবনার মধ্য দিয়ে সৃজনশীলতাকে উসকে দিয়েছেন। এরপর একেবারে শূন্য থেকে এই প্রদর্শনী পর্যন্ত পুরো পর্ব শেষ করতে সময় লেগেছে দুই বছর। আর ডিজাইনের পুরো বিষয়টি সামলেছেন কিউরিয়াসের ডিজাইন উপদেষ্টা চন্দ্র শেখর সাহা। তাঁকে যথাযথ সহযোগিতা দিয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা দিয়েছেন মাইনুল ইসলাম। এ ছাড়া টিম কিউরিয়াস তো আছেই।
‘টাইমলেস টাইম’ শিরোনামে এই প্রদর্শনীতে উপস্থাপন করা হচ্ছে মোট ৫০টি ঘড়ি। নানা নাম রয়েছে ঘড়িগুলোর। এই যেমন রেখাতরঙ্গ, এলোমেলো বৃত্তবন্ধন, দৃশ্যগত জানালা, আয়তকার সময়, রবীন্দ্রবিষাদ, শিরোনামে মানচিত্র ইত্যাদি।
এসব ঘড়ি নিছক সময় মাপার যন্ত্র নয়, বরং একেকটি শিল্পকর্ম। প্রত্যেকটি সুচিন্তিত ভাবনার মূর্ত রূপ। বিভিন্ন জমিন অলঙ্করণ মাধ্যম ব্যবহার করে ঘড়ির আঙ্গিক ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। আছে কারচুপি, কাঁথাসেলাই ও অন্যান্য সেলাইয়ের মতো হাতের কাজ, স্ক্রিন প্রিন্ট, কাঠখোদাই ইত্যাদি। পাশাপাশি বিভিন্ন উপাদান ও উপকরণের ব্যবহারও উল্লেখের দাবি রাখে। কাঠ, চামড়া, কাপড়সহ বিভিন্ন ধরণের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিটি যন্ত্র আমদানি করে আনা। এসব ঘড়ির বেশির ভাগই একটি করে তৈরি করা হয়েছে। অবশ্য কিছু কিছু ঘড়ির একাধিক কপি পাওয়া যাবে। যদিও সেই সংখ্যা অনেক বেশি নয়।
প্রতিটি ঘড়ি উপহার হিসেবে যে অনন্য তা বলার অপেক্ষা রাখে না। একইভাবে সময় দেখার পাশাপাশি নিজেদের ঘরের শোভা বাড়াতেও জুড়িহীন কিউরিয়াসের এই ঘড়িসংগ্রহের যে কোনওটিই।
২৬ অক্টোবর কিউরিয়াসের বনানী ১১ নম্বর রোডের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটের পঞ্চমতলার প্রদর্শনী হলে অনন্য এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন এইচএসবিসি ব্যাংক, বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুব উর রহমান ও ডেকো লেগাসি গ্রুপের চেয়ারম্যান এম শাহাদাত হোসেন কিরণ।
এই প্রদর্শনী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্যউন্মুক্ত থাকবে।