কীভাবে বুঝবেন আপনার বয়স বাড়ছে?

Looks like you've blocked notifications!

পুরুষ বা নারী, সবাই চায় নিজের বয়স ধরে রাখতে। বয়স ধরে রাখা মানে তারুণ্যপ্রাণ থাকা। চেহারায় বয়সের ছাপ না পড়া। সময়ের সাথে সাথে প্রাকৃতিকভাবেই আমাদের বয়স বাড়ে আর তার চিহ্ন ফুটে ওঠে চেহারায়। তবে অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও বাজে খাদ্যাভ্যাসের ফলে আমাদের ত্বক বয়সের আগেই বুড়িয়ে যায়। তো, কীভাবে বুঝবেন আপনার বয়স বাড়ছে?

 এনটিভির নিয়মিত এক স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠানে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন ডা. তানজিনা ইয়াসমিন। সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এজিং আসলে খুবই সাধারণ একটা প্রসেস। সাধারণ এবং ফিজিওলজিক্যাল প্রসেস, আমরা যেটাকে বলি। প্রত্যেক মানুষের তার বয়সের সাথে সাথে বয়সটা—একদিন, এক ঘণ্টা করে করে, এক মিনিটের সাথে সাথে আমাদের বয়সটা বাড়ছে। আর অ্যান্টি-এজিং বলতে বয়সটা কিন্তু থামিয়ে দেওয়া নয় বা বয়সটা মুছে দেওয়ার কোনো উপায় নেই। কিন্তু বয়সটাকে খুব সুন্দর করে সাইনটাকে আমরা স্টপ করতে পারি।

 ডা. তানজিনা ইয়াসমিন বলেন, এজিংয়ের যে লক্ষণগুলো আমরা সাধারণত দেখে থাকি, সবার আগে প্রথম যেটা আমি বলি, সেটা টেক্সচার। একটা বেবি ফেস বা একটা বেবির স্কিন যে রকম থাকে এবং একটা মানুষ যখন পরিণত বয়সের দিকে যেতে থাকে, সাধারণত তার টেক্সচারটা চেঞ্জ হতে থাকে। আমাদের সবার স্কিনের সেপেসিয়াস গ্ল্যান্ড থাকে, যেটা বডিতে সাধারণত নরমাল ময়েশ্চারাইজিং যে ফ্যাক্টর রিলিজ করে, একটা সময় গিয়ে যখন আমাদের বয়স হতে থাকে, তখন সেটা অ্যাকটিভিটি আস্তে আস্তে কমতে থাকে। যখনই কমতে থাকে, তখন আমাদের স্কিন স্বাভাবিকভাবেই ড্রাই হতে থাকে। তখন আমরা ড্রাই স্কিন পেয়ে থাকি। এটা একটা এজিংয়ের ফার্স্ট সাইন। সেকেন্ড হচ্ছে পিগমেন্টেশন। বয়স যত বাড়তে থাকে, আমাদের স্কিনে বিভিন্ন ধরনের পিগমেন্টেশন সাইন দেখা যায়। যেমন—কিছু ব্রাউন স্পট, ইয়োলো স্পট, বিভিন্ন ধরনের স্পটগুলো পেতে পারি; সানবার্ন ফেস হতে পারে, সানড্যামেজ ফেস হতে পারে।

 থার্ডলি হচ্ছে, বিভিন্ন ধরনের রিঙ্কেলস, ফাইন লাইনস আমাদের স্কিনে দেখা যায়। বিশেষ করে চোখের চারপাশে, আপার ফেসে। সেটা যেটা হয়, আপনার চোখের চারপাশে, আমরা যখন হাসি তখন কাকের পায়ের ছাপ বা যেটাকে আমরা ক্রো’স ফিট বলে থাকি, সেটা দেখা যায়। আমরা যখন কপালটা কুঁচকাই, তখন ফাইন লাইনস দেখা যায়। যখন আমরা হাসি, নাকের দুপাশে কিছু লাফিং লাইন... এগুলো আস্তে আস্তে প্রমিনেন্ট হতে থাকে। এজিংয়ের এ সাইনগুলো খুবই সাধারণ এবং খুবই নরমাল। কিন্তু যদি আমরা তখন থেকে একটু সচেতন হই, তখন থেকেই আমরা ট্রিটমেন্টটা স্টার্ট করি, এই ফাইন লাইনগুলো পরবর্তীতে পারমানেন্টের দিকে যায় না। সাথে সাথে আমি আরেকটা বলব, আমাদের কোলাজেন এবং ইলাস্টিন বলে ত্বকে উপাদান থাকে। সাধারণত সবার ত্বকই প্রতিদিন কোলাজেন প্রডিউস করছে, ইলাস্টিন প্রডিউস করছে, যেটা স্কিনটাকে টানটান করে রাখে। কিন্তু যখন বয়স বাড়তে থাকে, আমাদের কোলাজেন প্রডাকশনটা আস্তে আস্তে কমতে থাকে, ইলাস্টিন প্রডাকশনটা আস্তে আস্তে কমতে থাকে। এটার ফলে আমাদের স্কিন টোনটা ডাল হয়ে যায়। একটা সার্ভেতে বলা হয়, আমাদের প্রতি ১০ বছরে সেভেন পারসেন্ট রেটে কমতে থাকে; কোলাজেন সিনথেসিস, ইলাস্টিন সিনথেসিস, এগুলো। যে জন্য আমাদের স্কিন টোনটা ডাল হতে থাকে।

 বাইরের যে দূষণ দেখছি আমরা, তাতে ১০ বছরের অনেক আগেই অনেকে বুড়িয়ে যাচ্ছেন। তাই এই বিষয়গুলো অনেক দ্রুতই হয়ে যাচ্ছে। সঞ্চালকের এমন মন্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করে ডা. তানজিনা ইয়াসমিন বলেন, আমাদের লাইফস্টাইল এখন অনেক বেশি স্ট্রেসফুল। আমরা অনেক রাত জাগি, আমাদের ডায়েটের একটা ব্যাপার আছে। আমরা অনেক বেশি জাঙ্ক ফুড খাচ্ছি, আমরা বাইরের খাবার খাচ্ছি, যেটাতে ব্যালেন্স কোনো ডায়েট হচ্ছে না। ডায়েটের একটা ডিরেক্ট ইনভলভমেন্ট আছে এটার সাথে। এর পাশাপাশি বয়স বাড়ার সাথে সাথে ফ্যাটের যে পোরশনগুলো, যেটা আমাদের টানটান করে রাখে, এই ফ্যাটের ভলিউমটা আস্তে আস্তে লস হতে থাকে। তখন একটা মানুষের স্কিনটা ঝুলতে থাকে... এটা একটা সাইন। আমাদের বোনগুলোর ডেনসিটি আস্তে আস্তে লুজ হতে থাকে।