দড়ি লাফের আশ্চর্য পাঁচ উপকার

Looks like you've blocked notifications!

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা সেলিম আহমেদ নিয়মিত ব্যায়াম করেন। জিমে গিয়ে বেশ আয়োজনেই চলে তাঁর শরীরচর্চা। ডাম্বেল ওঠানোসহ ভারী ব্যায়ামগুলো করার আগে শরীর গরম করে নিতে হয়। আর এই কাজটির জন্য তিনি বেছে নিয়েছেন দড়ি লাফ। জিমের এক কোনায় কিছুটা সময় দড়ি লাফ করেন। মাত্র ১০ মিনিটে তাঁর শরীর গরম হয়ে ভারী ব্যায়ামের জন্য প্রস্তুত।

শুধু সেলিম আহমেদই নন, নিয়মিত ব্যায়াম ও শরীরচর্চা করেন তাঁদের অনেকেই এক বাক্যে স্বীকার করে নেন, ‘কার্ডিও’ নামে পরিচিত শরীর গরম করার ব্যায়াম হিসেবে দড়ি লাফ বেশ কার্যকর। অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের মতে, অন্য যে কোনও কার্ডিওর চেয়ে দড়ি লাফের কার্যকারিতা বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত প্রশিক্ষক (ট্রেইনার) জিলিয়ান মাইকেলের মতে, দড়ি লাফ অন্য যে কোনও কার্ডিও ব্যায়ামের চেয়ে দ্রুত ও সাবলীলভাবে শরীর গরমের কাজটি করে।

শরীর গরম করে মেদ ঝরানোর ব্যায়ামগুলোকে বলা হয় কার্ডিও। এ ধরনের ব্যায়ামে দ্রুত শরীর গরম হয়ে ওঠে এবং শরীরের মেদ ঝরে ঘামের সঙ্গে বের হয়ে যায়। জোরে হাঁটা, দৌড়ানো, দড়ি লাফসহ অনেক ধরনের কার্ডিও ব্যায়াম আছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হাঁটা, দৌড়ানো বা সাইকেল চালানোর চেয়ে ভালো দড়ি লাফ। কারণ, ৩০ মিনিট জোরে হাঁটলে যে ক্যালরি পোড়ে তার চেয়েও বেশি ক্যালরি পোড়ে মাত্র ১০ মিনিট দড়ি লাফে।

গবেষকেরা যা বলেন

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে, মাত্র ১০ মিনিট দড়ি লাফে স্বাভাবিক গতিতে এক মাইল দৌড়ানোর চেয়ে বেশি ক্যালরি পোড়ে। আর ৩০ মিনিট দড়ি লাফে প্রায় ৫০০ ক্যালরি পোড়ে। আর ওজন বেশি ব্যক্তিদের একই সময় দড়ি লাফে ক্যালরি পোড়ে আরও বেশি।

স্বাস্থ্য ও শারীরিক শিক্ষাবিষয়ক মার্কিন সংগঠন আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর হেলথ, ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিক্রিয়েশন-এর গবেষণা সাময়িকীতে ২০১৩ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছয় সপ্তাহ প্রতিদিন ১০ মিনিট দড়ি লাফ করেন এমন কলেজ শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যগত যে উন্নতি হয়, একই উন্নতি করতে হলে শিক্ষার্থীদের ছয় সপ্তাহে প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে জগিং করতে হবে। এখানে উল্লেখ্য, বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশের চিকিৎসকেরাই শরীর সুস্থ ও সবল রাখার জন্য প্রতিদিন ৩০ মিনিট জোরে হাঁটা অথবা জগিং করতে বলেন।

একই গবেষণা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দড়ি লাফে অনেক ক্যালরি পোড়ে এবং শরীরের যেমন শক্তি বাড়ে, তেমনই হাড় মজবুত হয়। এ ছাড়া দড়ি লাফ শরীরে আঘাত পাওয়া এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া উভয় ঝুঁকিই কমায়।

ক্যালরি পোড়ার হিসাব

আপনার ওজন অনুযায়ী কোন ব্যায়ামে কত ক্যালরি পুড়বে, তা বেশ কিছু পদ্ধতিতে হিসাব করা যায়। ব্যায়ামের মাধ্যমে ক্যালরি পোড়ানোর হিসাব করার জন্য মোবাইল অ্যাপ এবং ওয়েবসাইটভিত্তিক অনলাইন ক্যালরি হিসাবের ক্যালকুলেটর আছে। এমনই একটি জনপ্রিয় অনলাইন ক্যালোরি হিসাবের ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে নিচের ফলাফল পাওয়া যায়।

অর্থাৎ, একই সময় ব্যায়ামে অন্য যে কোনও কার্ডিওর চেয়ে দড়ি লাফে বেশি ক্যালরি পোড়ে। আর ওজন বাড়লে ক্যালরি পোড়ার পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। আরেকটি হিসাবও স্পষ্ট, ১০ মিনিট হাঁটলে যে ক্যালরি খরচ হয়, একই সময় দড়ি লাফে ক্যালরি খরচ হয় এর তিন গুণেরও বেশি।

নিচের টুলটিতে আপনার তথ্য দিয়ে কোন ব্যায়ামে কত ক্যালরি পুড়বে নিজেই হিসাব করে নিন :

সবচেয়ে সাশ্রয়ী

হাঁটা, দৌড়ানো বা সাইকেল চালানোর জন্য যথেষ্ট ফাঁকা জায়গা প্রয়োজন। মাঠ বা পার্ক ছাড়া এগুলোর কথা চিন্তাই করা যায়না। অথচ ঘরের এক কোণে বা ঘরের বারান্দায় এতটুকু জায়গায়ও দড়ি লাফ করা যায় সহজে। অন্য যে কোনও কার্ডিও ব্যায়ামের চেয়ে দড়ি লাফে কম জায়গা লাগে।

এবার অর্থ খরচের কথায় আসি। হাঁটা, দৌড়ানোর কাজটি বাসায় করার জন্য অনেকে ট্রেড মিল কেনেন। উন্নত মানের ট্রেড মিল বাংলাদেশি টাকায় লাখের ওপর। আর সাইকেল চালানোর জন্য অবশ্যই সাইকেল কিনতে হবে। কিন্তু দড়ি লাফের জন্য প্রয়োজন এক টুকরো দড়ি। আবার এ জন্য বাজার থেকে স্কিপিং রোপও কেনা যায়। বর্তমান বাজারে মানসম্পন্ন স্কিপিং রোপ পাওয়া যায় ১০০ টাকার মধ্যে।

সাশ্রয়ী ও কার্যকর, তবু অবহেলিত

সাশ্রয়ী ও কার্যকর হলেও ব্যায়াম হিসেবে দড়ি লাফ সবচেয়ে অবহেলিত এবং জনপ্রিয়তার দিক থেকে হাঁটা ও দৌড়ানোর চেয়ে বেশ পিছিয়ে। এর কারণ হিসেবে প্রচারণার অভাবকেই দায়ী করেন অনেকে। হাঁটা বা দৌড়ানোর জন্য যতটা প্রচারণা দেখা যায়, দড়ি লাফের ক্ষেত্রে তার সিকিভাগও চোখে পড়ে না। গুগলে সার্চ দিয়েই দেখুন কয়টা প্রতিবেদন পাবেন হাঁটা, দৌড়ানো বা সাইকেল চালানো নিয়ে, আর কয়টা দড়ি লাফের বিষয়ে।

এ ছাড়া, হাঁটা, দৌড়ানো বা সাইকেল চালানোর জন্য যন্ত্রসহ কিছু কেনাকাটার প্রয়োজন হয়। এগুলোর বিপণনের জন্যও প্রচারণা চলে। কিন্তু দড়ি লাফের এক টুকরো দড়ি বা স্কিপিং রোপের দাম আর কতই বা হবে। তাই বিপণনের জন্য যে প্রচারণা হয়, দড়ি লাফের ক্ষেত্রে সেটি দেখা যায় না। 

দড়ি লাফের পাঁচ উপকার

শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে যে কোনও কার্ডিও ব্যায়ামই নিয়মিত করতে হবে। তবে হাঁটা, দৌড়ানো, সাইকেল চালানোসহ অন্যান্য কার্ডিও ব্যায়ামের চেয়ে দড়ি লাফে কম সময়ে উপকার একটু বেশিই পাওয়া যায়। এই ব্যায়ামের অনেক উপকার থেকে গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটির কথা আলাদা ভাবে বলতেই হয় :

১. সবচেয়ে বেশি ক্যালরি পোড়ায়

ক্যালরি পুড়িয়ে শরীর সুস্থ ও সবল রাখার জন্যই আমরা ব্যায়াম করি। আর শরীরের ক্যালরি তখনই পোড়ে, যখন ব্যায়ামের কারণে শরীর গরম হয়ে ওঠে। হাঁটা বা দৌড়ানোর ফলে শরীর গরম হতে যে সময় নেয়, দড়ি লাফে শরীর গরম হয় আরও কম সময়ে। তাই একই সময় ধরে ব্যায়াম করলেও অন্য ব্যায়ামের চেয়ে দড়ি লাফে বেশি ক্যালরি পোড়ে। দড়ি লাফে ক্যালোরি বেশি পোড়ার বিষয়ে আগেই বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তাই এখানে কথা নাই-বা বাড়ালাম।

২. শরীরকে করে তোলে আরও ভারসাম্যপূর্ণ

দড়ি লাফের শুরুটা যেমনই হোক, নিয়মিত চর্চায় কিছুদিনের মধ্যেই এতে দক্ষ হয়ে ওঠা যায়। এমনকি এক লাফের মধ্যে দুই বার দড়ি ঘোরানো বা একপায়ে দড়ি লাফের মতো দক্ষ হয়ে ওঠেন কেউ কেউ। দড়ি লাফের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজন হয় শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে একটি ছন্দ। যেমন পা তখনই ওপরে উঠবে যখন কবজি ঘুরে নির্দিষ্ট একটি স্থানে থাকবে। আর দড়ি লাফের সময় শরীরের বেশির ভাগ পেশীই কাজ করে। এ ভাবেই দড়ি লাফ আমাদের শরীরকে আরও ভারসাম্যপূর্ণ করে তোলে। ২০১৭ সালে মার্কিন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ভারসাম্যহীনতার সমস্যায় প্রায়ই ভোগে এমন বিশেষ শিশুদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে নিয়মিত দড়ি লাফে। ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা অনুযায়ী, ৯ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে ৮ সপ্তাহ নিয়মিত দড়ি লাফ করেছে এমন শিশুরা একই বয়সী অন্যদের চেয়ে ফুটবল খেলায় বেশি নৈপুণ্য দেখাতে পেরেছে।

৩. আঘাত পাওয়ার ঝুঁকি কমায়

বিশেষজ্ঞদের মতে, দড়ি লাফে ভারসাম্য বাড়লে আরও কিছু বিষয়ে সুফল পাওয়া যায়। যার একটি হলো শরীরে আঘাত পাওয়ার ঝুঁকি কমে যাওয়া। শরীর ভারসাম্যপূর্ণ হওয়ার কারণে অন্য ব্যায়াম বা দৈনন্দিন  অন্যান্য কাজে আঘাত পাওয়ার ঝুঁকি অনেক কমে যায়। মার্কিন প্রশিক্ষক জিলিয়ান মাইকেল বলেন, দড়ি লাফের কারণে শরীরের ওপর ও নিচ এই দুই অংশের নড়াচড়ার মধ্যে সমন্বয় বাড়ে। এর ফলে আমরা আরও কর্মদক্ষ হয়ে উঠি। একই সঙ্গে আমাদের শরীরের সংবেদনশীলতারও উন্নতি হয়। আর এসব কারণে আমাদের শরীরে আঘাত পাওয়ার ঝুঁকিও কমে যায়।

৪. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়

দড়ি লাফে হৃৎপিণ্ডে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। এটি কার্ডিওভাসকুলার ব্যবস্থা ও হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখে। দড়ি লাফের ফলে ব্যায়ামকারীর শরীরে ‘ভিওটু ম্যাক্স’ বাড়ে। ভিওটু ম্যাক্স হলো একজন ব্যক্তির ব্যায়ামের সময় শরীরে সর্বোচ্চ যে পরিমাণ অক্সিজেন ব্যবহার করতে পারে, তার পরিমাণ। যার ভিওটু ম্যাক্স যত বেশি হবে, তার কার্ডিওভাসকুলার ব্যবস্থার সক্ষমতা তত বেশি হবে। ফার্মেসি ও টেকনোলজি নামক মার্কিন গবেষণা সাময়িকীর ২০১৯ সালের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিদিন দুই বার করে ১২ সপ্তাহ দড়ি লাফ করেছে এমন কলেজ শিক্ষার্থীদের ভিওটু ম্যাক্স একই বয়সী কিন্তু অন্য ব্যায়াম করেছে এমন শিক্ষার্থীদের চেয়ে বেশি। এ ছাড়া কার্ডিওভাসকুলার রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরাও দড়ি লাফে উপকার পেতে পারেন। ইউরোপিয়ান জার্নাল অব অ্যাপ্লায়েড সাইকোলজি নামক গবেষণা সাময়িকীর ২০১৮ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘প্রিহাইপারটেনশন’ এবং রক্তচাপ বিপৎসীমার কাছে থাকা কিশোরীদের ১২ সপ্তাহে ধরে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় দড়ি লাফ করার ফলে কার্ডিওভাসকুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। একই গবেষণায় আরও বলা হয়, দড়ি লাফ করার ফলে কিশোরীদের পুরো শরীরে থাকা মেদ ও তলপেটের মেদের পরিমাণ কমে যায় এবং নাড়ির স্পন্দন বা পালস রেট আরও ভালো হয়। এর সবই হৃৎপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে প্রভাব ফেলে।

৫. হাড় মজবুত করে

দড়ি লাফে শরীরের হাড় আরও মজবুত হয়। হাড়ের পুরুত্ব নির্ধারণ করে এর শক্তি। আমাদের শরীরে ক্যালসিয়ামের মতো খনিজের পরিমাণ বেশি থাকলে হাড় আরও শক্ত হয় এবং আঘাতে ভেঙে পড়ার ঝুঁকি কমে যায়। হাড়ের পুরুত্ব বেশি হলে বৃদ্ধ বয়সে অস্টিয়োপরোসিস রোগের ঝুঁকি কমে। বিশেষত প্রাপ্তবয়স্ক ও বৃদ্ধ বয়সে নারীদের মধ্যে নিয়মিত দড়ি লাফ এই রোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। অস্টিয়োপরোসিস হলো হাড় দুর্বল হয়ে যাওয়া রোগ, ফলে হাড় ভেঙে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।  যুক্তরাষ্ট্রের পাবলিক লাইব্রেরি অব সায়েন্স গবেষণা সাময়িকীতে ২০১৭ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১১ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের মধ্যে যারা নিয়মিত দড়ি লাফ করে, তাদের শরীরের হাড়ের পুরুত্ব অন্যদের চেয়ে বেশি। দক্ষিণ কোরিয়ার গবেষণা সাময়িকী কোরিয়ান সোসাইটি ফর বোন অ্যান্ড মিনারেল রিসার্চ-এর ২০১৯ সালের এক প্রতিবেদনে হাড়ের শক্তি বাড়াতে প্রতিদিন ১০ মিনিট করে দড়ি লাফ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক অস্টিয়োপরোসিস ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, দুর্বল হাড়ের ব্যক্তিরাও দড়ি লাফ থেকে উপকার পেতে পারে। তবে এটি শুরু করার আগে তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

সঠিক ভাবে দড়ি লাফ

দড়ি লাফের জন্য শুরুতে একটি জিনিসই প্রয়োজন, তা হলো এক টুকরো দড়ি। যে কোনও দড়ি দিয়ে দড়ি লাফ করা গেলেও কিছুটা পুরু দড়ি হলে ভালো ভাবে ব্যায়ামটি করা যায়। এলাকার যে কোনও ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে অল্প দামের মধ্যেই দড়ি লাফের দড়ি বা স্কিপিং রোপ পাওয়া যায়।

খালি পায়ে, না কি জুতা পড়ে দড়ি লাফ করব? নিয়মিত দড়ি লাফ করেন, এমন অনেকে খালি পায়ে দড়ি লাফে ভারসাম্য ভালো থাকে বলে দাবি করেন। তবে শুরুর দিকে জুতা পরে দড়ি লাফ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ, শুরুতে দড়ি লাফের সময় হঠাৎ দড়ি পায়ে বেঁধে আঘাত পাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে নিয়মিত ব্যায়ামে কিছুদিনের মধ্যে দক্ষ হয়ে উঠলে এই আশঙ্কা দূর হয়ে যায়। তখন চাইলে খালি পায়েও দড়ি লাফ করতে পারেন।

খোলা জায়গায়, না কি ঘরের মধ্যে, কোথায় ভালো ভাবে দড়ি লাফ করা যায়? যে কোনও ব্যায়ামের জন্য খোলা জায়গা ভালো। তবে মাঠ না পাওয়া গেলে বাড়ির ছাদেও দড়ি লাফ করতে পারেন। ছাদের সুবিধা না থাকলে ঘরের বারান্দায় বা ঘরের মধ্যেই দড়ি লাফ করতে পারেন।

স্থান যেখানেই হোক না কেন, দড়ি লাফের মেঝেটি হতে হবে সমান। সমান স্থানে দড়ি লাফ যতটা সহজে দিতে পারবেন। অসমতল বা উঁচুনিচু মেঝেতে দড়ি লাফ করা ততই কঠিন। এ ক্ষেত্রে দড়ি পায়ে বেঁধে বা পড়ে গিয়ে আঘাত পাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

ইউটিউবে দক্ষ ব্যক্তিদের দ্রুত দড়ি লাফ দেখে শুরুতেই এমন চেষ্টা করা হবে বোকামি। দড়ি লাফের শুরুটা হতে হবে ধীরেসুস্থে। পরে দড়ি লাফে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ এবং শরীরে উপর ও নিচ দুই অংশের মধ্যে কিছুটা ভারসাম্য এলে গতি বাড়াতে পারেন।

শুরুর আগে সতর্কতা

দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ বা অস্টিয়োপরোসিসে আক্রান্তরা দড়ি লাফ শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। দড়ি লাফ এসব রোগীর জন্য সুফল বয়ে আনলেও তাদের শুরুটা কীভাবে হবে এবং কতটা সময় ধরে এই ব্যায়াম তারা করতে পারবে, শরীর বুঝে চিকিৎসকেরা সে পরামর্শ দিতে পারেন।

তথ্যসূত্র: ইনসাইডার ডটকম, ইলেভেটরোপ ডটকম, উইকিহাউ ডটকম