মন ভালো রাখার সহজ তরিকা

Looks like you've blocked notifications!

মন নিয়েই যত বিপত্তি। মন ভালো থাকলে যেন সারা বছরই বসন্ত। এ সময় মনে বইতে থাকে ফাগুনের ফুরফুরে হাওয়া। কিন্তু মন খারাপ থাকলে দেখা যায় এর ভিন্ন চিত্র। কোনো কিছুতেই তখন আর মন বসে না। পছন্দের অনেক বিষয়কেই তখন অসহ্য মনে হয়। বিষাদগ্রস্ত, বিষণ্ণ মনের কারণে মেজাজ ওঠে চরমে।

তবে মন যে সব সময় ভালো রাখা যাবে না, তেমনটি কিন্তু নয়। আমরা চাইলেই মন ভালো রাখতে পারি। আর এ জন্য অনুসরণ করা যেতে পারে কিছু পদ্ধতি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের বরাত দিয়ে ইউএনবি জানাচ্ছে মন ভালো রাখার পদ্ধতিগুলো—

 মিউজিকথেরাপি

গান হোক বা কোনো ইনস্ট্রুমেন্টাল মিউজিক, মনের ওপর সুরের প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী। আর সুফলও অনেক। ভালো মিউজিক শুনলে হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক থাকে, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ভালো থাকে, দুশ্চিন্তাও কমে যায়। এর ফলে ক্লান্তি কেটে যায়। মানসিকভাবে কিছুটা বিপর্যস্ত ব্যক্তি অনেকটাই সজীব হয়ে ওঠেন। তাই মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে চিকিৎসার পাশাপাশি চলতে পারে মিউজিকথেরাপি। কিছু ক্ষেত্রে আবার রোগীকে লাইভ মিউজিক শোনানো হয়। এই পদ্ধতি অনেক বেশি সহায়ক।

বন্দি রাখা যাবে না

অসুখ করলে বাড়িতে বন্দি হয়ে কিছুদিন তো কাটাতেই হয়। চার দেয়ালের মধ্যে দীর্ঘদিন থাকতে থাকতে শরীর-মন আরো ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তবে চলাফেরা বন্ধ না হলে, দিনে একবার কারো সঙ্গে বাইরে থেকে কিছুক্ষণের জন্য একটু ঘুরে আসতে পারেন। রাস্তায় বেরোনোর উপায় না থাকলে অন্তত বাড়ির বারান্দায় গিয়ে বসুন। সামনের সবুজ গাছ বা রাস্তায় মানুষকে দেখলেও মন ভালো হয়ে যায়। যে ঘরে থাকবেন, সকালে সেই ঘরের জানালাও খুলে রাখুন। বাইরের রোদ-হাওয়া আসতে দিন। রোগীর ঘরের গুমোট ভাব কেটে যাবে।

নিয়মানুবর্তিতা
নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়া ও ঘুম জরুরি। আত্মীয় বা বন্ধু, পরিচিতজনকে নিজের সমস্যার কথা বারবার বলার চেষ্টা করবেন না। যে আপনার ব্যাপারে সচেতন, সে নিজেই যত্ন নেবে। অসুখের দিনগুলো বিমর্ষ হয়ে না কাটিয়ে বই পড়া, সিনেমা দেখা, ঘুমানো—অর্থাৎ নিজের পছন্দের কাজগুলো করুন। চেষ্টা করুন ছুটির মেজাজে দিন কাটাতে। এতে সময় কাটবে তাড়াতাড়ি।

পেইন্টিং, রিডিং

দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার ফলে অনেক সময়ে অফিস-কলেজ বন্ধ থাকে। আবার সারা দিন বাড়িতে বসেও সময় কাটতে চায় না। তখন রংতুলি, কাগজ, কলম টেনে নিয়ে আঁকতে বসে যেতে পারেন। কিংবা ভালো বইও পড়ে ফেলতে পারেন। একটানা পড়ে ক্লান্ত হয়ে গেলে কাউকে ডেকে পড়ে শোনাতে বলতে পারেন।

আলাপচারিতা
মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি ভাবের আদানপ্রদান। ফলে কথা না বলে বা না শুনে মানুষ থাকতে পারে না। তাই ফোনে হোক বা সামনাসামনি কারো সঙ্গে গল্প করুন। তবে তা যেন নিখাদ গল্পই হয়। রোগবালাই প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান।

খাবার
এমন অনেক খাবার আছে, যা চোখের পলকে মুড ভালো করে দেয়। চকলেট, কফি, বিভিন্ন হার্বসও মেজাজ ভালো রাখে। তবে অসুখ অনুসারে অনেক খাবারে বিধিনিষেধও থাকে। তাই নিজের শরীর বুঝে দিনে একবার পছন্দের কোনো খাবার খেতে পারেন। কিন্তু নানা অসুখে বিভিন্ন খাবার বন্ধ থাকে। তাই কিছু খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

বিশ্রাম

মন ভালো রাখতে এটি সবচেয়ে বেশি জরুরি। অনেক সময়েই বই পড়া বা টিভি দেখার মতো শারীরিক অবস্থা থাকে না। সে সময়ে বিশ্রাম নেওয়াই ভালো। মানসিকভাবেও বিশ্রাম প্রয়োজন। তাই জেগে থাকলেও কখনো দুশ্চিন্তা করবেন না।

পাজল, ইনডোর গেমস

পত্রিকায় নানা ধরনের ক্রসওয়ার্ড, সুডোকু, পাজল, কুইজ, ধাঁধা ইত্যাদি নানা ব্রেইনগেম থাকে। সেগুলো খেললে সময় তো কাটবেই, মনও ভালো থাকবে। সঙ্গী পেলে দাবা, লুডো ইত্যাদি বোর্ডগেম নিয়েও বসে পড়তে পারেন।

যোগ্য সাহচর্য

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সঙ্গ। আপনাকে সঙ্গ দিতে প্রিয় কোনো মানুষ পাশে থাকলে তা আপনার মন ভালো করবেই। আর আপনার পাশে থাকতে পেরে প্রিয় মানুষটিও খুশি হবেন।

ব্যস্ততম নাগরিক জীবনে কিংবা বদলে যাওয়া গ্রামীণ পরিবেশেও এখন মন ভালো রাখা কিছুটা কষ্টসাধ্য। তবে সদিচ্ছা ও চেষ্টা থাকলে মন খারাপের বিষয়গুলো এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব।