ঈদবাজার
বেনারসিপল্লীতে ঈদের আমেজ
একসময় ঢাকাইয়া মসলিনের খ্যাতি ছিল জগৎজোড়া। এখন ঢাকার অন্যতম শাড়ির বাজার মিরপুরের বেনারসিপল্লী। এখানকার কাতান, সিল্ক আর জড়ি-চুমকির বাহারি শাড়ি সবার মন জুগিয়েছে। বাঙালি নারীদের উৎসব যেন শাড়ি ছাড়া অপূর্ণ থাকে। তাই ঈদ সামনে রেখে নতুন সাজে সেজেছে মিরপুরের ঐতিহ্যবাহী বেনারসিপল্লী। বাহারি ও বৈচিত্র্যময় ডিজাইন এবং সাশ্রয়ী মূল্যের জন্য শাড়ি ক্রেতাদের প্রথম পছন্দ বেনারসিপল্লী।
এখানে যেমন রয়েছে অনেক শাড়ির সমারোহ, তেমনি তুলনামূলক দামটাও হাতের নাগালে। এবারের ঈদে বেনারসিপল্লীর দোকানে উঠেছে পালকি কাতান, রূপঞ্জী, রূপন্তী, স্বর্ণকাতানসহ নানা ধরনের শাড়ি। গেল শুক্রবার থেকেই ঈদ সামনে রেখে শুরু হয়েছে বেচাকেনা। তবে বৃষ্টিতে কিছুটা ছন্দপতন ঘটেছে বেনারসিপল্লীর ঈদবাজারে।
লাল, নীল, হলুদ, সবুজ আর জড়ি দেওয়া বাহারি সব শাড়ি শোভা পাচ্ছে দোকানে দোকানে। আর ক্রেতাদের দৃষ্টিও সেদিকে, যেন পছন্দের শাড়িতেই হবে ঈদ উদযাপন। মিরপুর বেনারসিপল্লীতে আধুনিক ও পুরাতন দুই ধরনের নকশারই শাড়ি তৈরি হচ্ছে। এর মধ্যে বেনারসি কাতান ছাড়াও টাঙ্গাইল সিল্ক, ফুল সিল্ক, হাফ সিল্ক, রাজশাহী সিল্ক, ধূপিয়ান, মসলিন সিল্ক, পাবনার তাঁত কটন শাড়ি, নকশিকাঁথা, নকশিচাদর, জামদামি, ঢাকাই মসলিন, মসলিন কাতান, সফট কাতান, রূপসী বাংলা, জুট নেট, কাতান সিল্ক, বেনারসি ধূপিয়ান, চৌতি কাতান, মুহিনী সিল্ক, সানন্দ সিল্ক, বালুচুড়ি বেনারসি, মাসলাইস কাতান, মিলেনিয়াম কাতান, জুট কাতান, কোটা কাতান, কোটা শাড়ি, ব্রোকেট বেনারসি, কার্পেট বেনারসি, হানিকোট বেনারসি, রাজকোট বেনারসি, কোরা বেনারসি, শাটিন বেনারসি, বালুচরী, জর্জেট, নেটের শাড়িসহ বিভিন্ন ডিজাইনের শাড়ি তৈরি হচ্ছে।
তা ছাড়া আনারকলি ও ফুলকলি শাড়ি ছাড়াও নেট কাতান, পিওর কাতান প্রভৃতি নামে বাহারি শাড়ি তৈরি হচ্ছে এ পল্লীতে। এর মধ্যে ঐতিহ্যবাহী বেনারসি কাতান শাড়িই এবারের অন্যতম ঈদ আকর্ষণ। মিরপুর বেনারসিপল্লীতে ছোট-বড় মিলিয়ে দেড় শতাধিক দোকান রয়েছে। এগুলোর মধ্যে হানিফ সিল্ক ইন্ডাস্ট্রিজ, বেনারসি মিউজিয়াম, বেনারসি পালকি, টপ চয়েজসহ বেশ কয়েকটি দোকান বিখ্যাত।
মিরপুর ১০, ১১ ও ১২ নম্বর সেকশনে বেনারসিপল্লীর অবস্থান। আদি এবং পুরাতন বেনারসিপল্লী হচ্ছে ১১ নম্বর সেকশনে। সেখানেই বাংলাদেশের তাঁতশিল্পের একমাত্র প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান হানিফ সিল্ক অবস্থিত।
ঈদ উপলক্ষে মিরপুর বেনারসিপল্লীর ঐতিহ্যবাহী মিরপুরি কাতান প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ২ থেকে ২০ হাজার টাকায়। ইন্ডিয়ান বুটিক প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ২৫ হাজার টাকায়। কানচি বরণ প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪৫ হাজার টাকায়। লাল মোহন প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে আড়াই হাজার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকায়।
বেবি ডল প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে পাঁচ থেকে আট হাজার টাকায়। জামদানি প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৭ থেকে ১৮ হাজার টাকায়। মসলিন প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৪ থেকে ১০ হাজার টাকায়। জুটনেট প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে আড়াই হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায়। শাড়ির এই পল্লী ঘুরে আপনিও কিনতে পারেন আপনার ঈদের শাড়িটি। আর পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য নিতে পারেন পছন্দের শাড়িটি।