জেলার বিখ্যাত খাবার

ভোলার মহিষের দুধের টক দই

Looks like you've blocked notifications!
ভোলায় হাড়িতে সাজানো মহিষের দুধের টক দই। ছবি : লেখক

ভোজনরসিক বাঙালির খাবারে আছে নানা বৈচিত্র্য। এ দেশে প্রতিটি জেলার রয়েছে জনপ্রিয় কিছু খাবারের সুখ্যাতি। মুখরোচক সেসব খাবার ওই জেলার ঐতিহ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। এমন খাবারের প্রতি সবারই লোভ থাকে। অনেকেই মুখরোচক সেসব খাবার খেতে যায় নানা স্থানে। দ্বীপজেলা ভোলার তেমনই একটি বিখ্যাত খাবার মহিষের দুধের টক দই। যা এই জেলাকে উপস্থাপন করেছে দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও। 

ভোলার টক দইয়ের নাম জানা নেই এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার কাছেই প্রিয় এই দই। ভোলায় পারিবারিক, সামাজিক বা সাংস্কৃতিক যেকোনো অনুষ্ঠানে দই থাকবে না এমনটা হতেই পারে না। ছোট, বড় যেকোনো অনুষ্ঠানে এ খাবার তুঙ্গে। স্থানীয়রা খাবারের শেষে ভাতের সঙ্গে দই খায়। তবে নানাভাবে খাওয়া যায় এই দই। নাস্তা হিসেবেও দই খাওয়া যায়। দই চিড়ার সঙ্গে হালকা মুড়ি ও চিনি মিশিয়ে মজা করে খাওয়া যায়। গরমের মৌসুমে দইয়ের সঙ্গে হালকা পানি ও চিনি মিশিয়ে ঘোল তৈরি করা হয়। এ ঘোল গরমের দিনে মানবদেহকে ঠাণ্ডা রাখে।

শুধু স্বাদেই দই সীমাবদ্ধ নয়। এই দইয়ে রয়েছে প্রচুর ঔষধি গুণ। হজমে সহায়তা করে দই। স্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, দইয়ে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, ভিটামিনসহ অন্যান্য উপদান রয়েছে, যা আমাদের দেহের জন্য খুবই উপকারি।

বহু বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন দইয়ের কারিগর আলহাজ মো. হাফেজ নুরুজ্জামানের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, আসলে এ দই তৈরিতে তেমন কোনো কেরামতি নেই। এটা কঠিন কোনো বিষয় না। একটু খেয়াল করলেই দই তৈরি করা সম্ভব। তিনি মুহূর্তেই বর্ণনা দিলেন।

প্রথমে একটি মাটির পাত্র (টালি) পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর দুধগুলোকে ভালোভাবে ছেকে মাটির পাত্রে স্থির জায়গায় রেখে দিলে হয়ে যাবে মুখরোচক টক দই। গরমের দিনে সাত থেকে আট ঘণ্টা এবং শীতের দিনে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা সময় লাগে দই তৈরিতে।

ভোলায় বিভিন্ন ছোট-বড় বহু চর রয়েছে। এসব কারণে এখানে মহিষ পালন করা অনেকটা সুবিধাজনক। প্রায় ২০০ বছরের বেশি সময় ধরে এ মহিষের দুধের দইয়ের সুনাম রয়েছে এ জেলার।

কোথায় পাওয়া যায়

ভোলা পৌর শহরের ঘোষপট্টি মহিষের দুধের দইয়ের প্রধান প্রাণকেন্দ্র। এ ছাড়াও শহরের খলিফা পট্টি মসজিদ, দিদারের গলিসহ বিভিন্ন পয়েন্টে এবং জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এ দই পাওয়া যায়।

কেমন দামে বিক্রি হয় এ দই

মহিষের দুধের দই সাধারণত মাটির পাত্রে (টালিতে) বসানো হয়। সে অবস্থায় উপরে শুধু পেপার দিয়ে মুড়িয়ে দেওয়া হয়। দুই ধরনের পাত্র থাকে। একটি দেড় লিটার, আরেকটি দুই লিটার। অবশ্য দুধের দামের উপর দইয়ের বাজার ওঠা-নামা করে।