গরমে শিশুদের হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে কী করবেন অভিভাবকরা?

সারাদেশ তাপদাহ বেড়েই চলেছে। এর মধ্যেই স্কুলে যেতে হয় শিশুদের। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, শিশু বাইরে যাক বা না যাক, গরমের কারণে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি যে কেবল বড়দের থাকে তা নয়, শিশুদেরও অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। তাই শিশুদের যত্নে রাখতে কিছু নিয়ম মেনে চলতেই হবে অভিভাবকদের। গরমে শিশুদের হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে কিছু পরামর্শ দিয়েছে শিশু বিশেষজ্ঞরা।
– গরমের সময় অনেক শিশুরা পানিশূন্যতায় ভোগে। কারণ শিশুরা ঠিকমতো পানি খায় না। তাই সারাদিন তাদের পর্যাপ্ত পানি পান করতে উৎসাহিত করুন। শুধু পানি খেতে না চাইলে লেবুর শরবত করে দিন। স্কুলের সময়টাতে পানি খাচ্ছে কি না, তা দেখার কেউ থাকে না। ফলে শরীরে পানির ঘাটতির পাশাপাশি খনিজ উপাদানগুলো, যেমন সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইডের ঘাটতি হতে থাকে। এর থেকে বমি, পেটের গন্ডগোল হতে পারে, জ্বরও আসতে পারে। তাই পর্যাপ্ত পানি খাওয়াতে হবে শিশুকে। টিফিনে ফলের রস করে দিতে পারেন শিশুকে। গরমের সময়ে পানির পরিমাণ বেশি, এমন ফল খাওয়াতে পারেন। ওআরএস সঙ্গে রাখতেই হবে। শিশুর শরীরে অস্বস্তি হলে বা রোদ থেকে ফিরেই বমি হলে, ওআরএস পানি গুলে খাইয়ে দেবেন।
– হিট স্ট্রোক হলে নানা লক্ষণ দেখা দেবে। যেমন– ঘাম হবে না, ত্বক শুকিয়ে যাবে, মাথা ঘুরবে, ঘন ঘন বমি করতে থাকবে শিশু। এ ছাড়া শ্বাস-প্রশ্বাসের হার অনেক বেড়ে যাবে, সেই সঙ্গে ডায়রিয়ার লক্ষণ দেখা দিতে পারে। অনেক সময়ে হিট স্ট্রোকের কারণে খিঁচুনিও হয় শিশুদের, এমন লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
– অতিরিক্ত গরমের কারণে জ্বর হলে হালকা প্যারাসিটামল খাওয়ানো যেতে পারে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে। কোনো রকম অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াবেন না। তিনদিনের বেশি জ্বর থাকলে, রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। এই সময়ে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গির প্রকোপও বাড়ে। কাজেই পরিচ্ছন্নতায় নজর দিতে হবে, বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখবেন
– দুপুরের দিকে শিশুদের নিয়ে বাইরে বের হবেন না। তবে একান্তই প্রয়োজন হলে শিশুর মাথায় পাতলা সুতির স্কার্ফ জড়িয়ে দিন। কিংবা টুপিও পরাতে পারেন। সানস্ক্রিন মাখাতেও ভুলবেন না। স্কুল থেকে ফেরার পরেই শিশুকে স্নান করিয়ে দিতে হবে।
– গরমের সময় খাওয়া-দাওয়ায় বিশেষ নজর দিতে হবে। বাইরের খাবার, ভাজাভুজি খাওয়াবেন না। বাড়িতে তৈরি হালকা খাবারই খেতে হবে। ভাত, পাতলা করে ডাল, মাছের ঝোল ও বেশি করে সবুজ শাকসবজি খাওয়ানো ভাল। নাশতায় খুব বেশি প্রোটিন দেবেন না। দুধ খেলে তার সঙ্গে কর্নফ্লেক্স বা ওটসের পরিজ খাওয়া যেতে পারে।