শিশুর খেলনা কেনার আগে যেসব বিষয় যাচাই করবেন

খেলতে গিয়েই সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে। কখনও খেলনার ধারালো কোণে শিশু হাত-পায়ে ব্যথা পায়, আবার কখনো তা গলায় চলে গিয়ে বিপদ ঘটাতে পারে। তা ছাড়া প্লাস্টিক নির্মিত খেলনা তো আরও বিপজ্জনক! তাতে যে রং ব্যবহার করা হয় ও যে সমস্ত রাসায়নিক থাকে, তা পেটে গেলে আর রক্ষা নেই। তাই শিশুর খেলনা যতই পছন্দ হোক বা বায়না করুক না কেন, খেলনা কিনে দেওয়ার আগে সতর্ক হতে হবে বাবা-মাকে। খেলনার সঙ্গেও যে নিরাপত্তার বিষয়টি জড়িত, তা নিয়ে অনেকেরই ধারণা নেই। তাই দোকানে গিয়ে পছন্দমতো খেলনা বেছে নেওয়ার আগে কিছু জিনিস যাচাই করে নেওয়া জরুরি অভিভাবকদের। কেনার আগে কী কী বিষয় যাচাই করবেন?
– প্রথমেই লেবেল দেখে নেবেন। খেলনাটি কী দিয়ে তৈরি, কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, সতর্কতা— সবই দেখে নিতে হবে। কোন বয়সের শিশুর জন্য খেলনাটি উপযুক্ত, তা অবশ্যই দেখে নেবেন।
– শিশুদের খেলনা মুখে দেওয়াটা সহজাত প্রবণতা। আর তা গলায় আটকে বিপদ হতে পারে। তাই দেখে নেবেন, খেলনার আকৃতি ধারালো অংশ আছে কি না।
– তারস্বরে আওয়াজ হয়, এমন খেলনা না কেনাই ভাল। খুব জোরে আওয়াজ শিশুর কানের ক্ষতি করতে পারে।
– খেলনা কী উপাদানে তৈরি, তা দেখতে হবে। প্লাস্টিকের তৈরি খেলনা শিশুর জন্য ক্ষতিকর। প্লাস্টিকের খেলনায় অ্যান্টিমনি, বেরিয়াম, ব্রোমিন, ক্যাডমিয়াম, সিসা, সেলেনিয়াম-সহ বিভিন্ন বিপজ্জনক রাসায়নিক উপাদানের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। যা শিশুর শরীরে দীর্ঘস্থায়ী কোনো ক্ষতির কারণ হতে পারে। খেলনা হাতে পাওয়া মাত্রই তা সকলের আগে মুখে দেয় শিশু। খেলনায় থাকা ক্ষতিকারক রাসায়নিক উপাদানগুলো লালার মাধ্যমে শরীরের ভিতরে প্রবেশ করে। ফলে সতর্ক থাকতেই হবে।
– সস্তা, নিম্নমানের খেলনা কিনবেন না। রাস্তার দোকানগুরোতে নানা রকম প্লাস্টিক বা প্লাস্টিকজাত উপাদানের তৈরি খেলনা বিক্রি হয়। সেগুরোতে যে রাসায়নিক মেশানো থাকে, তা থেকে হাঁপানির সমস্যা দেখা দিতে পারে। খেলনার লেবেলে ‘ননটক্সিক’ লেখা আছে কি না, তা দেখে নিতে হবে।
– বৈদ্যুতিক বা ব্যাটারিচালিত খেলনা কেনার আগে সতর্ক হতে হবে। ব্যাটারিতে ক্ষতিকর রাসায়নিক থাকে। দেখে নিতে হবে, শিশু যেন ব্যাটারি খুলে নিয়ে মুখে দিতে না পারে।
– একেবারে ছোটদের মার্বেল, গুলি বা কাচ দিয়ে তৈরি কোনো খেলনা কিনে দেবেন না। এর থেকে বিপদ হতে পারে।
– বন্দুক, পিস্তল, ছুরি বা তলোয়ারের মতো খেলনা কেনার আগেও সতর্ক হতে হবে। এই ধরনের খেলনা শিশুর মনে যাতে হিংসাত্মক মনোভাবের জন্ম না দেয়, তা দেখতে হবে।