বিচারকের সই-সিল জাল : আইনজীবীর সহকারী গ্রেপ্তারে পরোয়ানা
বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সিল ও বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে তলবনামা (রি-কল) সরবরাহ করায় এক আইনজীবীর সহকারীকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু শামীম আজাদের করা মামলায় এ পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বরিশাল অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনি এ অভিযোগ করেন। পরে বিচারক মাসুম বিল্লাহ ওই আইনজীবীর সহকারীকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেন।
আজ মঙ্গলবার বিষয়টি এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারি চার্চিল।
অভিযুক্তরা হচ্ছেন—পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার খোকন খান এবং আইনজীবী আহাদ আলী খানের সহকারি বরিশাল সদর উপজেলা শায়েস্তাবাদের মোল্লা বাড়ির বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম তপন।
অভিযোগের বিবরণী থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের মামলায় প্রধান আসামী খোকনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ওই সময় থেকে খোকন পলাতক ছিলেন।
সর্বশেষ ২০১৮ সালে আসামিকে গ্রেপ্তার করতে নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তাগিদ দেওয়া হয়।
২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর পিরোজপুর পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে অবহিত করা হয়, একই বছরের ২৫ আগস্ট আসামি খোকন বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পন করে জামিন নিয়েছেন। ওই পত্রের সঙ্গে জামিনের কাগজ রি-কলের কপি প্রেরণ করা হয়।
এই রি-কলে ট্রাইব্যুনালের ‘গোল সিল’ জাল করা হয়েছে। সেখানে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল’-এর জায়গায় ‘নারী ও শিশু দমন ট্রাইবুনাল’ লেখা রয়েছে। বিচারকের স্বাক্ষরও জাল করা হয়। যার সঙ্গে অভিযোগকারী বিচারকের স্বাক্ষরের মিল নেই। এমনকি রি-কলের হাতের লেখা তৎকালীন বেঞ্চ সহকারী গোলাম রসুলের নয়।
ওই জামিননামা পর্যালোচনায় অভিযোগকারী দেখতে পান, আইনজীবীর সহকারী তপন ও আসামি খোকন যোগসাজসে জাল রি-কল তৈরি করেছেন। এ ঘটনায় পুনরায় আসামি খোকনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ওই নির্দেশ পাওয়ার পর এ বছর ২৩ ফেব্রুয়ারি খোকনকে গ্রেপ্তার করে তাঁর কাছ থেকে জাল রি-কলের মূলকপি জব্দ করা হয়।
এ সময় খোকন জানায়, ওই রি-কল আইনজীবী আহাদ আলী খানের সহকারি তপন তাঁকে দিয়েছে।