দায়িত্ব নিলেন কৃষক লীগের সহসভাপতির
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/01/26/photo-1453745946.jpg)
সান্ত্বনা চাকমা, নিখোঁজ কৃষক লীগ নেতা অনিল চন্দ্র তংচঙ্গ্যার স্ত্রী। একসময়ে ঘরের বধূ আজ রাজনীতির মাঠের একজন সক্রিয় কর্মী। স্বামী অনিল আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। ছিলেন রাঙামাটি জেলা কৃষক লীগের সভাপতি এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতিও।
ফলে জেলা ছাড়িয়ে কেন্দ্রেও ছিল অনিলের সমান পরিচিতি। খোদ দলের অভিভাবক শেখ হাসিনার সঙ্গে এবং দলের হাইকমান্ডের অনেক হেভিওয়েট নেতার সঙ্গেও তাঁর ছিল হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক।
রাজনীতির মাঠের এমন সক্রিয় কর্মীর স্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা শুধুই ঘরের বউ হিসেবেই ছিলেন। কোনোদিন স্বপ্নেও ভাবেননি একদিন রাজনীতির মাঠে নামতে হবে তাঁকে। কিন্তু স্বামীর হঠাৎ রহস্যজনক নিখোঁজ হওয়ায় আড়ালের সেই নারীকেও নিয়ে এলো রাজনীতিতে। আলোচনায় ছিলেন সংরক্ষিত আসনের নারী সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে। পরে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন এবং সেই দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু দলের সব কাজে থাকলেও সরাসরি দায়িত্ব নেননি আজ অবধি।
সোমবার অনুষ্ঠিত জেলা কৃষক লীগের সম্মেলনে সহসভাপতির পদ পেয়ে রাজনীতিতে আনুষ্ঠানিক অভিষেক ঘটে সান্ত্বনার। স্বামীর রেখে যাওয়া সংগঠনের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে কিছুটা আবেগাপ্লুত সান্ত্বনা চাকমাও। বললেন, ‘কোনোদিন ভাবিনি রাজনীতি করব। কিন্তু আমার স্বামীর হঠাৎ হারিয়ে যাওয়া আমাদের পুরো পরিবারকে এলোমেলো করে দেয়। আমিও বাধ্য হয়ে রাজনীতির মাঠে নামি।
আজ আমার স্বামী যে সংগঠনের সভাপতি ছিলেন আমি তারই সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছি। আমি এটাকে ব্যক্তিগত চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছি। আমার স্বামীর যে নীতি ও আদর্শ ছিল সেটা বাস্তবায়ন এবং তাঁর স্বপ্নের পথ ধরে হেঁটে যেতে চাই আমি। আমার স্বামী যে কাজগুলো করে যেতে পারেননি, আমি সেই কাজগুলো শেষ করতে চাই। আর যেহেতু রাজনীতিতে নেমেছি, পদ-পদবির দায়িত্বও তো পালন করতে হবে। আমি আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব সুন্দরভাবে পালন করার চেষ্টা করে যাব এবং আমি মনে করি আমি সফলও হবো।’
২০১০ সালের ১০ জানুয়ারি কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গার নিজ বাসভবন থেকে রাঙামাটি শহরে আসার পথে অপহৃত হন রাঙামাটি কৃষক লীগের সভাপতি, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অত্যন্ত সাহসী হিসেবে পরিচিত আওয়ামী লীগের অন্যতম শীর্ষ নেতা অনিল চন্দ্র তংচঙ্গ্যা। এরপর স্বামীকে উদ্ধারের জন্য নামেন আন্দোলনে। ঘর ছেড়ে প্রতিবাদ জানান রাস্তায় দাঁড়িয়ে। আকুতি জানান স্বামীকে জীবিত উদ্ধারে। দল ক্ষমতায় থাকার পরও অদৃশ্য কারণে নিখোঁজই থেকে যান অনিল। অনেক আন্দোলন সংগ্রামের পরও উদ্ধার হয়নি স্বামী।