মৌলভীবাজারে তাপমাত্রা ৫.৬ ডিগ্রী, হিম হাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত
মৌলভীবাজার জেলার উপর দিয়ে বইছে শৈত্য প্রবাহ। টানা কয়েক দিন থেকে তীব্র শীত ও হিম হাওয়ার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সূর্যের ঝলমল আলো থাকলেও জেলা জুড়ে বইছে তীব্র হিম হাওয়া। বিকেল থেকে সকাল পর্যন্ত শীতের তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
আজ শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় চলতি মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ৫.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। হিম হাওয়া ও শীতের তীব্রতার কারণে সময়মতো কাজে যোগ দিতে পারছেন না শ্রমজীবি মানুষ। সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন বোরো চাষী, ছিন্নমূল ও দিনমজুর মানুষ।
দিনে ও রাতে অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। গরম কাপড়ের দোকানে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের ভিড় সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি গবাদিপশু নিয়েও মানুষ পড়েছে বিপাকে। পশুর গায়ে ছেঁড়া বস্তা ও কাঁথা দিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করা হচ্ছে।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বিন্নার হাওর এলাকার কৃষক রাজু মিয়া জানান, শীতের তীব্রতায় জমিতে ঠিক মতো চাষ দিতে পারছেন না। একই অবস্থা জানালেন পার্শ্ববর্তী আজমেরু এলাকার বাচ্চু মিয়া। তিনি জানান, শীতের কারণে জমিতে চারা লাগাতে পারছেন না। জমিতে পানির মধ্যে কাজ করায় সময় শরীরে কাঁপুনি আসে।
মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ জানান, শীতের কারণে বোরো ধানের বীজতলায় চারা বাড়তে দেরি হচ্ছে। কৃষকরা শীতের কারণে মাঠে যেতে পারছেন না। শীত ও ঘন কুয়াশা দীর্ঘস্থায়ী হলে ধানে চিটা হতে পারে।
মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মুরর্শেদ জানান, অন্য সময়ের তুলনায় এখন শীতজনিত রোগে প্রতিদিন জেলার সরকারি ও বেসরবারি বিভিন্ন হাসপাতালে শিশু ও বয়স্কদের ভর্তির সংখ্যা অনেক বেশি।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানান, জেলায় মোট বরাদ্দ এসেছে ৩৫ হাজার ২ শত ৮০ পিস কম্বল। ইতোমধ্যে কম্বলগুলো জেলার ৭টি উপজেলার ছিন্নমূল, দিনমজুর ও অসহায় মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। আরও কম্বল চাওয়া হয়েছে।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলস্থ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান জানান, কুয়াশা ও মেঘ কেটে যাওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়ে গেছে। আজ সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলার উপর দিয়ে বইছে শৈত্য প্রবাহ। এটি চলতি মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আবহাওয়ার এ অবস্থা আরও কয়েক দিন থাকতে পারে। এ অঞ্চলে মূলত জানুয়ারি মাস থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত শীতের তীব্রতা বেশি থাকে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি এ অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।