বিএনপির জনসমাবেশে হামলার প্রতিবাদ, সরকার পতনের ডাক
রাজধানীতে বিএনপির জনসমাবেশ শুরু হয়েছে। আজ সোমবার (৩১ জুলাই) বিকেল ৩টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ জনসমাবেশ শুরু হয়। রাজধানীর প্রবেশমুখে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে ‘পুলিশি হামলা ও সরকার দলীয় সন্ত্রাসীদের হামলা’র প্রতিবাদে সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন নেতারা। এতে প্রধান অতিথি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সভাপতিত্বে আছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম। জনসমাবেশ সঞ্চালনা করছেন ঢাকা মহানগর বিএনপি উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন।
বিএনপির গুগলিতে আওয়ামী লীগ বোল্ড আউট হয়ে গেছে : মির্জা
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘লক্ষ লক্ষ মানুষ জানিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগকে সরে যেতে হবে। আমরা একটা সামান্য শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিয়েছি। তারা ভয়ে ভীত হয়ে সাঁজোয়া যান নিয়ে এসেছে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা খুব পরিষ্কার করে বলেছি, কোনো রাখ-ঢাক নেই। এনাফ ইজ এনাফ। গত দুইটি নির্বাচন দেখেছি।’ তিনি আরও বলেন, '২৮/২৯ তারিখে বিএনপির গুগলিতে আওয়ামী লীগ বোল্ড আউট হয়ে গেছে। বিএনপির লোকজন দেখে কিছু বুঝে ওঠার আগেই বোল্ড আউট হয়ে গেছে।’
জেল ভাঙার আগে সবাইকে ছেড়ে দেন : মির্জা আব্বাস
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘আমরা বলিনি ২৮ তারিখে ঢাকা ঘেরাও করব। সেইদিন যা দেখলাম, সরকার যা ঘটাল, ইতিহাসে এমন ঘটনা ঘটেনি।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং আমানউল্লাহ আমান সিনিয়র সিটিজেন। গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে সাপ মারার মতো পেটানো হয়েছে। গয়েশ্বরকে পিটিয়েছেন, আমাদের জেলে পাঠিয়েছেন, তারপরও সমাবেশ বন্ধ হবে না। সরকারের পতন ছাড়া দেশের মানুষ ঘরে ফিরে যাবে না।’
আটক বিএনপি নেতাদের মুক্তি দাবি করে মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘জেল ভাঙার আগে সবাইকে ছেড়ে দেন। ৯০-এ কিন্তু আমাদের জেল থেকে বের করা হয়েছিল।
আন্দোলনকে শেষ পর্যন্ত নিয়ে বাড়ি ফিরে যাব : আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘আমাদের ভয় নাই, তারেক রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলন শেষ পর্যন্ত নিয়ে বাড়ি ফিরে যাব।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনের প্রস্তুতি আছে। নতুন করে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার কিছু নেই। শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘কেউ দোষী হলে সমাবেশে বক্তব্য দিতে পারবে না, এমন নির্দেশনার কথা বলা হচ্ছে। বাংলাদেশের নেতৃত্ব কে দেবে এটা আদালতের সিদ্ধান্ত নয়, বাংলাদেশের নেতৃত্ব কে দেবে এটা পুলিশের সিদ্ধান্ত নয়। গত ২৮ তারিখ মহাসমাবেশে দেশের মানুষ সিদ্ধান্ত দিয়েছে বাংলাদেশের নেতৃত্ব কে দেবে।’
আওয়ামী লীগ এখন অনুকরণ লীগ : রুহুল কবির রিজভী
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রতিটি কর্মকাণ্ড ইয়াহিয়া-টিক্কা খানের মতো। কোনো ব্যতিক্রম নেই। অবস্থান কর্মসূচির আগের দিন আমরা সংবাদ সম্মেলন করে বলেছি. কোন কোন পয়েন্টে আমরা অবস্থান নেব। তারা প্রস্তুতি নিচ্ছিল ২৯ তারিখের অবস্থান কর্মসূচিকে বানচাল করা যায়। কিন্তু আমাদের বানচাল করতে গিয়ে আওয়ামী লীগই বানচাল হয়ে গেছে।’
বিএনপির সমান্তরালে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কর্মসূচি দেওয়া হচ্ছে দাবি করে দলটিকে ‘অনুকরণ লীগ’ বলে আখ্যা দেন তিনি।
আল্লাহ ছাড়া আমরা কাউকে ভয় করি না : আমানউল্লাহ আমান
মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘প্রয়োজনে মরে যাব। শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করিয়েই ছাড়ব। আল্লাহ ছাড়া আমরা কাউকে ভয় করি না।’ প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য উপহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জুতা মেরে গরু দান। আমার কাছে ফল পাঠান। আমি ঘুমিয়েছি। ওষুধ খাইয়ে ঘুমিয়ে রেখেছে। হঠাৎ দেখি এই পরিস্থিতি।’ তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে কারও কথা হয়নি। নাটক করে লাভ নেই। শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতেই হবে।
অবস্থান কর্মসূচিতে পরিকল্পিত হামলা হয়েছে : খাইরুল কবির খোকন
বিএনপিনেতা খাইরুল কবির খোকন বলেন, ‘অবস্থান কর্মসূচিতে পরিকল্পিতভাবে এই সরকার পুলিশ ও আওয়ামী লীগ দিয়ে আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। স্বৈরাচার সরকারের যখন পতন নিশ্চিত হয় তখন তারা মরণ কামড় দেয়।’ তিনি বলেন, ‘সরকার এখন মরণ কামড় দিচ্ছে। কিন্তু, আমরা এখন ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছি। প্রতিরোধ এখনও গড়ে তুলিনি। যদি প্রতিরোধ করা শুরু করি, পালানোর পথ পাবেন না।