রিয়াদে নিহত আবুল হোসেনের বাড়িতে মাতম

সৌদি আরবের রিয়াদে গতকাল শনিবার সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মোহাম্মদ আলী ওরফে আবুল হোসেনের (৩৫) বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে বৃদ্ধ বাবা-মা বাকরুদ্ধ। শোকে হতবাক সন্তানসম্ভবা স্ত্রী যেন কাঁদতেও ভুলে গেছেন।
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বল্লা ইউনিয়নের মোমিননগন গ্রামের মুদি দোকানি লাল মাহমুদের বড় ছেলে আবুল হোসেন (৩৫)। গ্রামে সবার কাছে আবুল নামেই তিনি পরিচিত। পরিবারের দরিদ্রতা ঘোচাতে প্রায় ১৩ বছর আগে তিনি সৌদি আরব যান। পাসপোর্টে তাঁর নাম মোহাম্মদ আলী।
পরিবারের সদস্যরা জানান, দু-তিন বছর পরপর দেশে আসতেন আলী। পাঁচ বছর আগে দেশে এসে পাশের বেহালাবাড়ি গ্রামের ফাতেমা আক্তারকে বিয়ে করেন। তাদের তিন বছর বয়সের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। গত কোরবানির ঈদের আগে সর্বশেষ বাড়িতে এসেছিলেন আলী। তিন মাস আগে আবার সৌদি আরব যান।
গত শনিবার সকালে সৌদি আরবের রিয়াদে নিজেদের আবাসনস্থল থেকে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার শিকার হন মোহাম্মদ আলী। আরো চারজন সহকর্মীর সঙ্গে তাঁরও মৃত্যু হয়। শনিবার বাড়িতে পৌঁছে যায় এই মৃত্যুর খবর। এ খবর শুনে তাঁর বৃদ্ধ বাবা লাল মাহমুদ, মা হুরমতি বেগম এবং স্ত্রী ফাতেমা আক্তারসহ পরিবারের সদস্যদের বিলাপ শুরু হয়।
রোববার বিকেলে মোমিননগর গ্রামে মোহাম্মদ আলীর বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, অধিক শোকে যেন সবাই কাঁদতেও ভুলে গেছে। তাঁদের এখন একটাই চিন্তা, কী করে লাশ দেশে আনবেন।
মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী ফাতেমা আক্তার বলেন, ‘একটি ছেলে রয়েছে, আবার আমি অন্তঃসত্ত্বা। সন্তানদের আমি কীভাবে মানুষ করব। আমি কোন সাগরে পড়লাম।’
মোহাম্মদ আলীর মা নির্বাক হয়ে বসে আছেন বারান্দায়। তাঁকে প্রতিবেশীরা সান্ত্বনা দিচ্ছেন। মোহাম্মদ আলীর বাবা লাল মাহমুদ জানান, তাঁর বড় ছেলে মোহাম্মদ আলী সৌদি আরব গিয়ে কাজ করে তাদের সচ্ছলতার মুখ দেখিয়েছেন। তিনি ছেলের লাশ দ্রুত দেশে আনার দাবি জানান।
ওই গ্রামের অধিবাসী সোনা মিয়া জানান, মোহাম্মদ আলীর মৃত্যুতে পুরো গ্রামেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বল্লা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁকে এই পরিবারের খোঁজখবর নেওয়ার জন্য পাঠানো হয়েছে।