‘কেয়ামত পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকে সন্তুষ্ট করতে পারব না’
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা (জিএসপি) বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের যেসব শর্ত দিয়েছে সেসব পূরণ করেছি। তারপরও তারা বলছে, আরো উন্নতি করতে হবে। রোজ কেয়ামত পর্যন্ত আমরা চেষ্টা করলেও যুক্তরাষ্ট্রকে সন্তুষ্ট করতে পারব না বলে আমার বিশ্বাস।’
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী। এর আগে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াদুনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতকে ধ্বংস করতে কিছু শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা কাজ করছেন বলে অভিযোগ করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। এমনকি এঁদের সঙ্গে কয়েকটি দেশের দূতাবাসেরও নিয়মিত যোগাযোগ আছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বাংলাদেশের তথাকথিত শ্রমিক ইউনিয়ন নেতা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত ধ্বংসে একযোগে কাজ করছে। ওই নেতারা কয়েকটি দূতাবাসের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত ধ্বংস করতেই চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করছে তারা। মন্ত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন বৈঠকে জিএসপি নিয়ে কথা বললে তাঁরা বলেন, জিএসপি পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ বেশ উন্নতি করেছে। আবার এটাও বলেন যে আরো উন্নতি করতে হবে। তাঁদের কাছে আমার প্রশ্ন, এই যে আরো উন্নতি এটার সীমারেখা কত?’
মন্ত্রী বলেন, রানা প্লাজা ধসের প্রায় তিন বছর হতে চলল। এর পর থেকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলো আধুনিকায়ন করা হয়েছে, নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে, শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়েছে, ইপিজেডে শ্রমিকদের ইউনিয়ন করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকরা বলেন, তাঁরা ভালো আছেন, একজন শ্রমিক প্রারম্ভিক বেতন পাচ্ছেন ১০/১২ হাজার টাকা। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানার অবস্থা দেখে ক্রেতারা সন্তুষ্ট, শুধু সন্তুষ্ট হতে পারছে না যুক্তরাষ্ট্র।
এত কিছু করার পরও যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা না দেওয়ার পেছনে মূল কারণ জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এ প্রশ্নের জবাব ভালো দিতে পারবেন বার্নিকাট (যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত)।’
ইইউ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশকে প্রত্যাশার বেশি সহায়তা দিয়ে এসেছে। তাদের সহায়তায় আমাদের পোশাক খাতসহ বিভিন্ন খাত দাঁড়াতে পেরেছে। ইইউভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বাড়ছে বলেও জানান তিনি।