ভোটে হেরে দুধে গোসল!

নির্বাচনে জয় হোক কিংবা পরাজয়, স্বাভাবিকভাবে দুটো ক্ষেত্রেই প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। কিন্তু টাঙ্গাইলের ভুঞাপুরে এক ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর এক চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ভিন্ন নজির স্থাপন করেছেন।
অলোয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রহিজ উদ্দিন আকন্দ ভোটে হারার পর দুধ দিয়ে গোসল করে নিজেকে পবিত্র করেছেন। অবশ্য এতেই ক্ষান্ত হননি তিনি। ভবিষ্যতে আর রাজনীতি না করার ঘোষণাও দিয়েছেন রহিজ উদ্দিন আকন্দ। রাজনীতি আর নির্বাচন নিয়ে তাঁর ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্তের কারণে টাঙ্গাইলে তিনি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, সদ্য সমাপ্ত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রহিজ উদ্দিন আকন্দ এর আগে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। এবার নির্বাচনে দলের মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মোটরসাইকেল প্রতীকে তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
আর নির্বাচনে মাত্র ১৪৯ ভোটের ব্যবধানে রহিজ পরাজিত হন নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত নুরুল ইসলামের কাছে। আর এতে অনেকটা ক্ষোভ আর দুঃখে দুধ-গোসলের মাধ্যমে রাজনীতি থেকে চিরবিদায় ও ভবিষ্যতে নির্বাচন না করার ইচ্ছা জানিয়েছেন সদ্য বহিষ্কৃত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রহিজ উদ্দিন আকন্দ।
এনটিভি অনলাইনের কাছে রহিজ উদ্দিন বলেন, ‘বিগত পাঁচ বছর এই অলোয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। দায়িত্ব পালনকালে দু-দুবার উপজেলার শ্রেষ্ঠ ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই। গত নির্বাচনেও জনপ্রিয়তা থাকার পরও আমাকে দল মনোনয়ন না দিলেও আমি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলাম। সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে দল আমাকে মনোনয়ন না দিয়ে দেয় ঠিকাদার নুরুল ইসলামকে। নেতাকর্মীদের চাপে এই নির্বাচনেও অংশ নিতে হয়।’
রহিজ উদ্দিন আরো বলেন, ‘মাত্র ১৪৯ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছি। তিনি (নুরুল ইসলাম) পেয়েছেন ৫০৩৯ ভোট আর আমাকে দেখানো হয়েছে ৪৮৯০ ভোট। ভোটের ব্যবধান অনেক বেশি হলে মানতাম আমি অযোগ্য। আমাকে হারানো হয়েছে, এ পরাজয় মেনে নিতে পারছি না। তাই আমি ক্ষোভে দুধ দিয়ে গোসলের মাধ্যমে রাজনীতি থেকে চিরবিদায় ও ভবিষ্যতে নির্বাচন না করার ঘোষণা দিয়েছি। দুধ দিয়ে গোসল করে পবিত্র হলাম। নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ব। আর যতটুকু পারি জনগণের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখব।’
তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন, এটি রহিজ উদ্দিনের সাময়িক ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ মাত্র। যদিও রহিজ উদ্দিনের অনুসারীরা বলছেন, তিনি এক কথার মানুষ। আর সাধারণ মানুষ মনে করছেন, রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই।