ছয় সমন্বয়ককে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজের
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবির) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কসহ ডিবিতে অন্য যাদেরকে আটক রাখা হয়েছে তাদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার আলটিমেটাম দিয়েছে বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ।
আজ মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক সমাজের পক্ষে এ ঘোষণা দেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। ‘হত্যা, অবৈধ আটক ও নির্যাতনের বিচার চাই’ ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমরা এই অনুষ্ঠান শেষ করে ডিবি কার্যালয়ে যাব, ছয় সমন্বয়কের সঙ্গে দেখা করার জন্য। যদি তাদের সঙ্গে দেখা করতে না দেওয়া হয়, তবে সেখানে অবস্থান নিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। জাতিকে, এ দেশকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের ঘটনায় আমরা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছি। আমি নিজে বিব্রতবোধ করছি। স্বাধীনতার পর ৭১’র মতো সহিংসতা আর অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হতে হবে এটা ভাবনায় ছিল না। যেটা এখন হচ্ছে তরুণ প্রজন্ম। অথচ স্বাধীনতার চেতনাই হচ্ছে বৈষম্যহীন মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। এটা করতে না পারার দায় আমাদের নিতে হবে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ইতিহাসের ১৯৫২, ১৯৬৯, ৭১ ও স্বাধীনতা পরবর্তীতে তরুণ প্রজন্মরাই এগিয়েছিল। আজকে কোটাবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে তরুণরাই এগিয়ে এসেছে। ইতোহাসই বলে দেয়, তরুণ-শিক্ষার্থীরা হচ্ছে অজেয় শক্তি। আমরা আশা করেছিলাম সেটি সরকার বিবেচনায় নেবে। কিন্তু তরুণদের ন্যায্য আন্দোলনকে ভিন্নভাবে দেখা হয়েছে। আন্দোলন ঘিরে সবকিছুর দায় সরকারকে নিতে হবে। গণমাধ্যমের ওপর প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে নিষেধাজ্ঞা বা নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করতে হবে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, আমরা এই অনুষ্ঠান শেষ করে ডিবি কার্যালয়ে যাব। আমরা ২৪ ঘণ্টা সময় দিচ্ছি। এই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যাদের আটক করে আনা হয়েছে, ধরে নেওয়া হয়েছে, সেটা বন্ধ করা ও তাদের যদি নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া না হয়, তাহলে আমরা বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ ডিবি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেওয়াসহ কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। আমরা এখন এখান থেকে সরাসরি সেখানে যাব। আমি বিশ্বাস করি ডিবির কোনো প্রতিনিধি এখানে থাকতেই পারেন। আশা করছি ম্যাসেজটা তাদের কাছে চলে যাবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের বেসরকারি সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম ইন বাংলাদেশের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, ঢাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান মির্জা তাসলিমা সুলতানা প্রমুখ।