সায়েদের পরিবারে হাহাকার, বাবাকে খুঁজছে ৯ মাসের শিশুর দুচোখ!
ছাত্র-জনতার রক্তের স্রোতে ভেসে গেছে স্বৈরাচারী সরকার। প্রাণভয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন ক্ষমতার দম্ভে ধরাকে সরা জ্ঞান করা স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা। মুক্তি মিলেছে গুম, খুন ও মামলার ভয়ে কুঁকড়ে যাওয়া মানুষের। জীবন দিয়ে মুক্তির ইতিহাস যারা রচনা করে গিয়েছেন, তাদেরই একজন মোহাম্মদপুরের মুদি দোকানি আবু সায়েদ।
দুই সন্তানের পিতা ব্যবসায়ী আবু সায়েদ। ছোট ছেলেটির বয়স মাত্র ৯ মাস। সায়েদের ৯ মাসের সন্তান এখনও জানে না ঘাতকের বুলেট কেড়ে নিয়েছে তার বাবার প্রাণ। প্রিয় বাবা আর কোনোদিন ফিরবে না বাসায়, নেবে তাকে আর কোলে।
জুলাইয়ের যে বিপ্লব ৫ আগস্ট সফল হয়েছে, সেই মহাবিপ্লবে স্বৈরাচারের বুলেট কেড়ে নিয়েছে অসংখ্য তাজা প্রাণ। নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর দলীয় সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে সেদিন ক্ষমতার দম্ভ দেখিয়েছিলেন অহংকারী স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা। ছাত্রদের ওপর নির্বিচারে গুলির প্রতিবাদে একপর্যায়ে রাজপথে নেমে আসেন সাধারণ মানুষ। তাদের ওপরও হামলে পড়ে স্বৈরাচারের দোসররা।
১৯ জুলাই শুক্রবার। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল সারা দেশ। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে সেদিন বাসা থেকে বের হন মোহাম্মদপুরের মুদি দোকানি আবু সাঈদ। রাজধানীর বছিলা রোডে আসতেই প্রচণ্ড গোলাগুলির মধ্যে পড়েন তিনি। একপর্যায়ে সড়কে একজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দেখে তাকে উদ্ধারে এগিয়ে যান। কিছু বুঝে উঠার আগেই ঘাতকের বুলেট মাথায় লাগে সাঈদের। লুটিয়ে পড়েন সেখানেই।
সাঈদের পরিবারে এখন কেবলই হাহাকার আর শূন্যতা। একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটিকে হারিয়ে দিশেহারা সায়েদের পরিবার। সায়েদের ৯ মাসের এই অবুঝ শিশুটি হয়তো এখনও বুঝতে পারেনি ঘাতকের বুলেট কেড়ে নিয়েছে তার বাবার প্রাণ। তবে বাসায় কেউ এলে তাকিয়ে থাকে মুখের দিকে। হয়তো তার অবুঝ হৃদয় খুঁজে বেরাচ্ছে প্রিয় বাবাকে।
আবু সায়েদকে হত্যার ঘটনায় পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে তার এক স্বজন। স্বামী হত্যার বিচারের পাশাপাশি রাষ্ট্রের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি আবু সায়েদের স্ত্রীর।