ঘটনার দিন ঢাকায় ছিলাম না, বাচ্চাদের সাইকেল বিতরণ করেছি : সাবেক রেলপথমন্ত্রী
ছাত্র ইমরান হাসানকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় করা মামলায় সাবেক রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের তিনদিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন রেজা এই আদেশ দেন। এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক রিমান্ডের আদেশ দেন।
নুরুল ইসলামের পক্ষে ফজলুল হক বাবু রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, তিনি (নুরুল ইসলাম) আমার আপন মামা। তিনিও একজন আইনজীবী। রাজনৈতিক পরিবারের মানুষ। রাজনীতি করেছেন মানুষের সেবার জন্য, দুর্নীতির জন্য না। ২০১৯ থেকে ২৩ সাল পর্যন্ত রেলমন্ত্রী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে দুদকের কোনো অভিযোগ নেই। রেলের উন্নতি করেছেন। এতে রেলে যাত্রীদের যাত্রার আগ্রহ বেড়েছে। তিনি এ মামলার ৬ নম্বর আসামি। ইতোমধ্যে তিনজন আগাম জামিন পেয়েছেন। তার বিষয়ে হাইকোর্টে আগাম জামিন আবেদন করেছি। শুনানির জন্য আজকে আছে। এর মধ্যে তাকে হাসপাতাল থেকে জোর করে রিলিজ করিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আইনজীবী আরও বলেন, ঘটনা ৫ আগস্ট সকাল ৯টার। আর মামলা ১ সেপ্টেম্বরের। ঘটনার ২৬ দিন পর মামলা। এজাহারে বিলম্বের কোনো কারণ নেই। বোঝাই যাচ্ছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মামলা। হয়ত তিনি তখন বাসায় ছিলেন, এমনকি ঘুমিয়েও থাকতে পারেন। বয়স্ক মানুষ ও অসুস্থ মানুষটি চারবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। রিমান্ডে নেওয়ার কোনো গ্রাউন্ডও নেই। তাই রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করছি।
এরপর সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন আদালতকে বলেন, নিজ এলাকা পঞ্চগড়ে আমার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। সারাজীবনে এ মামলা ছাড়া আর কোনো মামলা নেই। আমার দল ক্ষমতায় থাকাকালে বিরোধীদের বিরুদ্ধে একটা মামলাও দেইনি। ৩ আগস্ট পর্যন্ত আমি এলাকায় থেকে বাচ্চাদের সাইকেল বিতরণ করেছি। ৪ তারিখ সন্ধ্যায় সৈয়দপুর এয়ারপোর্ট হয়ে ঢাকায় আসি। এ মামলায় নাম উল্লেখ ছাড়া আসামিদের কার কী ভূমিকা কিছু উল্লেখ করেনি। দেখবেন বাদী কাউকে চেনে না। বলতেও পারবে না আসামি কারা। আমাদের মতো আইনজীবীরাই আসামিদের নাম লিখে দিয়েছেন।
গত সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের ৮৩৩ নম্বর রুম থেকে সুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বৈষম্যবিরোরধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট গুলিতে ইমরান নিহত হন। এ ঘটনায় গত ১ সেপ্টেম্বর নিহতের মা কোহিনুর আক্তার বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ ২৯৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। এ মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও পুলিশ বাহিনী নির্বিচারে গুলি করে। এতে ছাত্র ইমরান হাসান গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।