পদ্মা-বড়ালসহ দেশের সব নদ-নদী রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন
আন্তসীমান্ত নদীতে বাংলাদেশের অধিকার দাবি নিয়ে রাজশাহীতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। সমাবেশ থেকে পদ্মা-বড়ালসহ দেশের সব নদ-নদী রক্ষার দাবি জানানো হয়।
আন্তর্জাতিক নদী দিবস উপলক্ষে রাজশাহী নগরীর সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে আজ সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ঘন্টাক্যাপী ‘নদী বাঁচলে দেশ বাঁচবে, আন্তসীমান্ত নদীতে বাংলাদেশের অধিকার’ প্রতিপাদ্যে বাপা রাজশাহী জেলা শাখা এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
মানববন্ধন চলাকালে বাপা রাজশাহী জেলা শাখার যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা বলেন, পদ্মা নদীর অনেক শাখা নদী রয়েছে। পদ্মা নদীসহ এসব নদীর পাড় দখল হয়ে গেছে। প্রভাবশালীরা ক্রমেই এসব নদী দখল করে স্থাপনা গড়ে তুলছে।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। নদী মায়ের মতোই দেশের ভূমি, প্রকৃতি, গাছপালা, পশুপাখিসহ সবকিছুই প্রতিপালন করছে। অথচ দখল-দূষণসহ মনুষ্যসৃষ্ট বিভিন্ন কারণে আমাদের নদীগুলো নানামুখী সংকটের মধ্যে পড়ছে। রাজশাহী অঞ্চলের অনেক নদ-নদীর এখন রুগ্ন দশা। অন্যতম নদী পদ্মারও করুণ অবস্থা।
বক্তারা বলেন, নদী নিয়ে একাধিকবার প্রকল্প গ্রহণ করলেও তা অপরিকল্পিত হওয়ায় এবং দুর্নীতি ও স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতার অভাবে জনগণের অর্থ লুটপাট এবং অপচয় হয়েছে। নদী বাঁচাতে বাস্তবসম্মত ব্যবস্থা গ্রহণ করে সমন্বিত পরিকল্পনার আওতায় স্বল্প-মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প গ্রহণ করার দাবি জানানো হয় সমাবেশ থেকে।
বক্তারা বলেন, রাজশাহীর গোদাগাড়ী থেকে নাটোরের লালপুর পর্যন্ত পদ্মা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ৬৮টি স্লুইসগেট অচল হয়ে পড়েছে। এ কারণে বর্ষা মৌসুমে বন্যার মতো দুর্যোগ সৃষ্টি হচ্ছে। এসব সমস্যার স্থায়ী সমাধান দাবি করে বক্তারা বলেন, ফারাক্কা বাঁধের কারণে সময়মতো পদ্মা নদীতে পানি থাকে না। বর্ষাতেও কাঙ্ক্ষিত পানি আসে না পদ্মায়। আবার শীত শুরুর আগেই পুরো নদী শুকিয়ে খালে পরিণত হয়। এ কারণে পদ্মার সব শাখা নদী ইতিমধ্যে মরে গেছে। অস্তিত সংকটে পড়েছে চারঘাটের বড়ালও।
বক্তারা বলেন, এসব নদী বাঁচাতে হবে। পানির ন্যায্য অধিকার দিতে হবে, পদ্মায় পানি প্রবাহ ফেরাতে হবে। বড়ালে পানি চাই, কৃষির জন্য পানি চাই। নদ-নদী বাঁচাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণসহ বিপন্ন কৃষিকে বাঁচাতে নদী খনন করার দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে এ অঞ্চলের নদ-নদীর পাড়ের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি জানানো হয় কর্মসূচি থেকে।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গ্রিন ভয়েসের রাজশাহী বিভাগীয় সহসম্পাদক আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন বাপা রাজশাহী জেলার সভাপতি ও রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান, স্থানীয় দৈনিক সোনারদেশের সম্পাদক আকবারুল হাসান মিল্লাত, বাপা নেতা আফজাল হোসেন, গোলাম নবী রনি, সোনিয়া বেগম, রোমানা সিদ্দিকা, সমাজকর্মী অপূর্ব শাখা, নারী নেত্রী সেলিনা বেগম, ওয়েব রাজশাহী শাখার সভাপতি আঞ্জুমান আরা, রাজশাহী সার্ভে ইনস্টিটিউটের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাহমুদ হোসেন ও জাতীয় আদিবাসী পরিষদের নেতা সুভাষ চন্দ্র হেমব্রম প্রমুখ।