হতাশায় শুরু বাংলাদেশের ক্যারিবীয় সফর
টানা চার সিরিজ হারার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে সাদা পোশাকে শুরুর সেশনটা হয় দারুণ। বোলিংয়ে শেষ ইনিংসও কাটে দুর্দান্ত। কিন্তু মাঝের সময়টা ছন্নছাড়া! ঠিক এই সময়টাই কাজে লাগিয়েছেন জাস্টিন গ্রিভসরা। তাতে বাংলাদেশের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের শুরুটা হলো হতাশা দিয়ে। অ্যান্টিগা টেস্টের পঞ্চম দিনের প্রথম সেশনেই বাংলাদেশকে হারের তিক্ত অভিজ্ঞতা দিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
আজ মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) টেস্টের চতুর্থ দিনের শেষ সেশনে বাংলাদেশকে ২০১ রানে গুড়িয়ে জয় তুলে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের দল।
শেষ ইনিংসে ১৮১ রানে লিডসহ বাংলাদেশকে ৩৩৪ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। চতুর্থ ইনিংসে এই রান তোলা যে কোনো দলের জন্যই চ্যালেঞ্জিং। সেখানে বাংলাদেশের জন্য তো আরও বড় পাহাড়াসম। এই লক্ষ্য পাড়ি দিতে গিয়ে লড়াই জমানো তো দূরে দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশ।
গতকাল চতুর্থ দিন রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই ফিরলেন জাকির হাসান। কেমার রোচের অফ স্টাম্পের বাইরে শর্ট ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে শূন্যতে বিদায় নেন বাঁহাতি ওপেনার।
একটু পর ড্রেসিংরুমের পথে হাঁটলেন মাহমুদুল হাসান জয়। জেডেন সিলসের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জয় (৬)।
এরপর একে একে প্রতিপক্ষকে উইকেট উপহার দেন শাহাদাত হোসেন দিপু ও মুমিনুল হক। আগের ইনিংসে ফিফটি করা মুমিনুল ফেরেন ১১ রানে। আর রোচের ফাঁদে পড়ে শাহাদাত বিদায় নেন ৪ রানে।
মাত্র ২৩ রানে চার উইকেট হারিয়ে ভীষণ চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। সেই চাপ থেকে উদ্ধার করার চেষ্টায় জুটি বাধেন লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজ। দুজন মিলে আগেও দলকে পথ দেখিয়েছিলেন। কিন্তু লাভ হয়নি। লিটনকে বিদায় করে সেই চেষ্টা ভেস্তে দেন জোসেফ। ২২ রানে লিটন ফিরলে ভাঙে ৩৬ রানের জুটি।
এরপর জাকেরের সঙ্গে মিরাজ আরেকটি জুটি গড়ার চেষ্টা করেন। তবে মিরাজকে ৪৫ রানে সাজঘরে ফিরিয়ে সেই চেষ্টাও বৃথা করে দেন সিলস। তিনি ফেরার পর দিনের বাকি সময় কাল উইকেটে কাটিয়ে দেন জাকের।
আজ পঞ্চম দিন ৭ উইকেটে ১০৯ রান দিন শুরু করে বাংলাদেশ। জয়ের জন্য দরকার আরও ২২৫ রান। মাত্র তিন উইকেট হাতে নিয়ে এই রান করা সম্ভব হয়নি জাকেরের। দিনের ৪৫ মিনিটেই আউট হয়ে যায় বাংলাদেশের তিন ব্যাটার। তাতে ১৩২ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস। পরাজয় হয় ২০১ রানের।
এর আগে অ্যান্টিগায় টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে জাস্টিন গ্রিভসের সেঞ্চুরিতে ৪৫০ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেঞ্চুরিয়ান গ্রিভস করেন ১১৫ রান।
বিপরীতে প্রথম ইনিংসে নেমে ২৬৯ রানে থামে বাংলাদেশ। শেষ ব্যাটার হিসেবে শরিফুল ও তাসকিনের ব্যাট করার সুযোগ থাকলেও সেটা না করে ২৬৯ রানেই ইনিংস ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ। ফলে আগের ইনিংসের ১৮১ রানের লিড সহ ওয়েস্ট ইন্ডিজের পুঁজি দাড় করায় ৩৩৪ রানের। দ্বিতীয় ইনিংসে তারা স্কোরবোর্ডে যোগ করে ১৫২ রান।
বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র বলার মতো পারফর্ম করেছেন তাসকিন আহমেদ। ৬৪ রান দিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে তাসকিন নিয়েছেন ছয় উইকেট। যা তার ক্যারিয়ারসেরা বোলিং। মোট দুই ইনিংস মিলিয়ে ডানহাতি পেসারের সংগ্রহ আট উইকেট। তবে ব্যাটিং ব্যর্থতায় বাংলাদেশের কাজে আসেনি তাসকিনের সাফল্য।