কল্যাণপুরে নিহত ৮ ‘জঙ্গি’র পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর কল্যাণপুরে ‘জঙ্গি আস্তানা’য় পুলিশি অভিযানে নিহত নয়জনের মধ্যে আটজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে আহত মো. রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান তার নিহত আট সহযোগীর নাম জানিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। তারা হলো—রবিন, ইমরান, অভি, আতিক, সোহান, ইকবাল, সাব্বির ও তাপস।
অপর আরেকজনের নাম জানাতে পারেনি হাসান।
আজ মঙ্গলবার ভোরে কল্যাণপুরে আস্তানা হিসেবে ব্যবহৃত ৫ নম্বর রোডের ১৫ নম্বর বাড়িতে অভিযানের সময় আহত অবস্থায় আটক মো. হাসানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আটক মো. হাসান এখন ঢামেক হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের ১ নম্বর ব্লকে চিকিৎসাধীন। তার বাড়ি বগুড়ার জামিলনগরে এবং বাবার নাম রেজাউল করিম। সে স্থানীয় শাহ সুলতান কলেজের ছাত্র। অভিযানের শুরু হলে হাসান তিনতলা থেকে নিচে লাফ দেয়। এতে তার মাথা ও পায়ে চোট লাগে। পরে পুলিশ তাকে আটক করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়।
এদিকে হাসপাতালে হাসানকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, হাসান এক বছর আগে থেকে অন্যদের সঙ্গে জঙ্গি তৎপরতায় জড়ায়। এ সময় বাড়ির সঙ্গে কোনো যোগাযোগ ছিল না বলে পুলিশকে জানিয়েছে সে।
হাসান জানায়, এক মাস আগে মোট ১০ জনকে কল্যাণপুরের এ বাসায় নিয়ে আসা হয়। এবং এই এক মাস সময়ের মধ্যে তাকে কোনো দিনই বাসার নিচে নামতে দেওয়া হয়নি। হাসান জানায়, এই বাসায় তাঁর মূল কাজ ছিল সবাইকে রান্না করে খাওয়ানো।
আজ মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর কল্যাণপুরে একটি ‘জঙ্গি আস্তানা’য় অভিযান চালায় পুলিশের বিশেষায়িত বাহিনী সোয়াত। এতে নয় ‘জঙ্গি’ নিহত হয়।
পুলিশ এ অভিযানের নাম জানায় ‘অপারেশন স্টর্ম টোয়েন্টিসিক্স’। সোয়াতের বিপুলসংখ্যক সদস্য ভারী অস্ত্র ও আধুনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে এ অভিযানে অংশ নেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে কল্যাণপুরের ৫ নম্বর রোডে ‘জাহাজ বিল্ডিং’ নামে পরিচিত সাততলা ভবনটিতে অভিযানে যান পুলিশ সদস্যরা। এ সময় ভবনের পঞ্চম তলা থেকে জঙ্গিরা ককটেল ছোড়ে। পরে ভবনটির আশপাশের এলাকা ঘিরে ফেলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
জাহাজ বিল্ডিংয়ের পাশের ভবনগুলোর ছাদে অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঘটনাস্থলের আশপাশের সবকটি সংযোগ সড়কেও ব্যারিকেড দেয় পুলিশ।
রাতভর পরিকল্পনার পর ভোর ৫টা ৫১ মিনিটে শুরু হয় ‘অপারেশন স্টর্ম টোয়েন্টিসিক্স’। ঘণ্টাখানেক মুহুর্মুহু গুলির শব্দে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ভবনের নিয়ন্ত্রণ নেন।
অভিযান শেষে পুলিশ কর্মকর্তা মারুফ হাসান জানান, নিহত জঙ্গিদের সবার পরনেই ছিল কালো পোশাক।