কমিটি না থাকায় দুর্ভোগে চান্দিনার দুই বিদ্যালয়
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/01/15/photo-1484433661.jpg)
দীর্ঘদিন ধরে নানা জটিলতায় ভুগছে চান্দিনা উপজেলা সদরে অবস্থিত ডা. ফিরোজা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও চান্দিনা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়। তার মধ্যে অন্যতম সমস্যা হচ্ছে এই দুই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি দীর্ঘ দিন ধরে নেই। ফলে প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক নিয়োগসহ অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও শিক্ষার মান ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করে এলাকাবাসী।
এলাকার লোকজন জানায়, চান্দিনা ডা. ফিরোজা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ১৯৭০ সালে মরহুম ডাক্তার সৈয়দা ফিরোজা বেগম প্রতিষ্ঠা করেন। এর ছাত্রী সংখ্যা ১ হাজার ৬০০ এর বেশি। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ১৯৮০ সালের ৩ মার্চ পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মো. ইউছুফ আলী। এরপর থেকে ১৬ জানুয়ারি ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক ছিলেন অজিত কুমার নাহা। তারপর থেকে এ বিদ্যালয়ে আর প্রধান শিক্ষকের মুখ দেখেনি শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে চলছে বিদ্যালয়টি। এ বিদ্যালয়ে শিক্ষক রয়েছেন ২৫ জন। এদের মধ্যে ১৪ জনই খণ্ডকালীন শিক্ষক।
ডা. ফিরোজা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এ বি এম সিরাজুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘২০১২ সালের জুন মাসে নির্বাচনের পর প্রাথমিক পর্যায়ে কমিটির সদস্যরা প্রথম সভা করে সভাপতি নির্বাচন করে। তা অনুমোদনের জন্য বোর্ডে পাঠালে অজ্ঞাত কারণে শিক্ষাবোর্ড আমাদের কমিটির অনুমোদন দেয়নি। পরে ওই বছরের ৫ জুলাই বোর্ডের বিরুদ্ধে মামলা করলে আদালত কমিটির পক্ষে অনুমোদনের জন্য রায় দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১ নভেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড কুমিল্লা আমাদের কমিটির অনুমোদন দেয়। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কমিটির সভা আহ্বান করছেন না। এ কারণে আমরা দায়িত্বগ্রহণ করতে পারছি না।’
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুমিতা দাস বলেন, ‘আমি শিক্ষা বোর্ডের ব্যবস্থাপনা কমিটির অনুমোদন পেয়েছি। কিন্তু আগের কমিটির রেজুলেশন বই মামলাজনিত কারণে চান্দিনা থানা পুলিশ জব্দ করে নেওয়ায় সভা আহ্বান করতে পারছি না।’
অন্যদিকে চান্দিনা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়েরও একই অবস্থা। ১৯১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত শতবর্ষী এ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৭০০। এর বিপরীতে এমপিওভুক্ত শিক্ষক রয়েছেন সাধারণ শাখায় ১০ জন। ভোকেশনাল শাখায় আটজন এবং খণ্ডকালীন শিক্ষক রয়েছেন ১৭ জন।
এ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. মহসিন সরকার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘কমিটি বিহীন বিদ্যালয় মাঝি ছাড়া নৌকার মতো। কমিটি না থাকায় আমরা শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারছি না। অবকাঠামো মেরামত করতে পারছি না।’
চান্দিনা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য মো. আবদুর রাজ্জাক জানান, ২০১৩ সালের ২৪ জুলাই এ বিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন হয়। নির্বাচনের পর প্রথম সভায় সভাপতি নির্বাচন করে শিক্ষা বোর্ডে পাঠালে বোর্ড আমাদের অনুমোদন দেয়নি। পরে আমরা অনুমোদন না পেয়ে বোর্ডের বিরুদ্ধে মামলা করি। ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে আমাদের পক্ষে রায় হয়। রায় হওয়ার পরও বোর্ড আমাদের কমিটির অনুমোদন দিচ্ছে না। এ ছাড়া আমাদের রায়ের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিপক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়ার অভিযোগে আপিল করে। এতে ঝুলে আছে ব্যবস্থাপনা কমিটির কার্যত্রম।’