রেইনট্রিতে কিছু না পাওয়ায় মাদক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কিছু না পেলেও একদিনের ব্যবধানে সেখান থেকে ১০ বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করেছে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। আর এ কারণে গুলশান অঞ্চলের অভিযান পরিচালনাকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশনস) সৈয়দ তৌফিক উদ্দিন আহমেদ।
আজ রোববার বিকেলে এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি জানিয়েছেন তৌফিক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ৬ মে ঢাকার বনানী থানায় একটি মামলা করা হয়। সেই মামলার প্রধান আসামি আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদসহ অন্য আসামিরা রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণ করেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। এর পরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আসে হোটেলটি। দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিকরাও হোটেলটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলেন। ধর্ষণের মামলার পর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত কমিটি গতকাল শনিবার হোটেলটি পরিদর্শন করে। এর পর পরই এটিতে অভিযান চালায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। কিন্তু সেই অভিযানে কিছু পাওয়া যায়নি বলে গতকাল জানিয়েছিলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গুলশান অঞ্চলের পরিদর্শক ওবায়দুল কবির।
একই দিনে ওই হোটেলের কর্মকর্তা ফারজানা আরা রিমি জানিয়েছিলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা হোটেলে কোনো মদের বারের সন্ধান পাননি। তবে এখানে জুসের বার রয়েছে।
এসব বক্তব্যের একদিন পরই আজ রোববার হোটেলটিতে আবার অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। এ বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান এনটিভি অনলাইনকে জানান, দুপুর ১টার দিকে রেইনট্রি হোটেলে অভিযান শুরু করা হয়। সেখান থেকে ১০ বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করেন শুল্ক কর্মকর্তারা।
‘কিছু না পাওয়া’র ব্যাখ্যা বনাম ব্যবস্থার আশ্বাস
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গতকালের অভিযানে কেন কোনো কিছু পাওয়া যায়নি, তা জানতে চাইলে গুলশান অঞ্চলের পরিদর্শক ওবায়দুল কবির এনটিভি অনলাইনকে বলেন,‘এটা তো হতেই পারে। গতকাল আমরা অভিযান চালিয়ে দুপুর ১২টার মধ্যে সেখান থেকে চলে আসছি। আর আজ দুপুরে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর অভিযান চালিয়েছে। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেছে। আমরা আসার পরে হয়তো কেউ নিয়ে গেছে বা তাঁরা নিয়ে এসেছে।’
‘আমরা অভিযানের সময় হোটেলের যে সুইমিং পুল ছিল, সুইমিং পুলের আশপাশের জায়গা, হোটেলের বিভিন্ন লবি, হোটেলের ভিতরে দুইটা রেস্টুরেন্ট আছে, সেখানকার যে ডিপ ফ্রিজ এবং অন্যান্য যে ফ্রিজগুলো ছিল এবং বেশ কয়েকটি কক্ষ চেক করেছি। আমি যে এ টু জেড পুরা হোটেল চেক করতে পারি নাই, কারণ আমার লোকবল কম ছিল। কিন্তু সম্ভাব্য যতগুলো জায়গা মনে হয়েছে, সেগুলোতে তল্লাশি চালিয়েছি। আমার তল্লাশির সময় কোনো বেআইনি মাদকদ্রব্য সেখানে পাই নাই।’
অভিযানের খবর রেইনট্রি হোটেল কর্তৃপক্ষ আগে থেকে পেয়েছিল কি না, জানতে চাইলে ওবায়দুল কবির বলেন, ‘এটা অসম্ভব। আমি জানতাম না সেখানে কোনো সাংবাদিক আছে। আমি অনেক গোপনীয়ভাবে অভিযান চালাতে চেয়েছিলাম। আমার বিশ্বাস যে এই মালগুলো (মদের বোতল) গত রাতে যেকোনো সময় তাদের হোটেলে ঢুকেছে।’
শুল্ক কর্মকর্তারা কীভাবে ১০ বোতল মদ পেল, তা জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশনস) সৈয়দ তৌফিক উদ্দিন আহমেদ আজ বিকেলে এনটিভি অনলাইনকে বলেন,‘গুলশান বিভাগের আভিযানিক দল কেন পেল না, তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। তাদের শোকজ করা হবে। বিষয়টি আমার জানা ছিল না। শুল্ক গোয়েন্দারা পেল তো তারা পেল না কেন? তারা কী জবাব দিবে দেখি। আমি উপর মহলে এটা নিয়ে রিপোর্ট জানাব।’