রামপাল নিয়ে ইউনেস্কো ও সরকারের বক্তব্যের মিল নেই
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প নিয়ে ইউনেস্কো ও সরকারের দেওয়া বক্তব্যের মিল নেই বলে অভিযোগ করেছেন সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতারা। আজ রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন আয়োজিত এক আলোচনায় এমন অভিযোগ করেন তাঁরা।
গতকাল রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে রামপালের কাজ এগিয়ে নিতে ইউনেস্কোর কোনো আপত্তি নেই বলে দাবি করেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। তবে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে কৌশলগত সমীক্ষা প্রতিবেদন দেওয়ার আগ পর্যন্ত আর কোনো ভারী শিল্প স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হবে না বলেও জানান তিনি।
তবে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির দাবি, রামপালসহ যেকোনো শিল্প নির্মাণেই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইউনেস্কো।
আজ আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম বলেন, ‘ইউনেস্কোর যে পয়েন্টগুলো ফাইনালি গ্রহণ করা হচ্ছে বলে আমরা জানতে পেরেছি তার সঙ্গে সরকারের এই বক্তব্যের মিল নাই।’
তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘জ্বালানি উপদেষ্টা বললেন যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ জ্বালানি হচ্ছে পৃথিবীর সবচাইতে সস্তা। এই যে কথাটা বললেন তিনি এই রকম একটা দায়িত্বপূর্ণ পদে থেকে এর চাইতে ভুল এবং মিথ্যা কথা তো আর কিছু নাই। শুধু ফিন্যান্সিয়ালিও যদি দেখি, মানে যে দামে কেনা বেচা হয় সেই দামে দেখতে গেলেও সোলার বিদ্যুৎও এখন কয়লা থেকে অনেক ক্ষেত্রে সস্তা হয়ে গেছে।’
বর্তমানে উন্নত বিশ্বগুলো তো বটেই, চীন এবং ভারতও জ্বালানি হিসেবে কয়লার ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়াচ্ছে। এদিকেই বাংলাদেশ সরকারকেও মনোযোগ দেবার তাগিদ দেন আলোচনা সভার বক্তারা।
এ সময় অস্ট্রেলিয়ার জ্বালানি অর্থনীতি বিষয়ক বিশ্লেষক সাইমন নিকোলাস বলেন, ‘তেল এবং ডিজেলের ব্যবহার বাংলাদেশের জন্য খুবই ব্যয়বহুল। বাংলাদেশ সরকার আবার কয়লা আমদানি করতে যাচ্ছে। আমরা দেখেছি সৌরবিদ্যুৎ কয়লার চাইতেও বেশি সাশ্রয়ী।’
গবেষক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘আমরা বিদ্যুৎও চাই। যত কম টাকায় বিদ্যুৎ সম্ভব সেটি আমরা চাইব এবং একইসঙ্গে আমরা অর্থনৈতিক উন্নতি চাইব এবং আমরা সবচেয়ে বেশি চাইব যে মানুষের সুখ শান্তির জন্য পরিবেশ রক্ষা করতে।’
এ সব বিষয় নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয় আলোচনা সভায়।