বিএনপি এড়াতে আইন লঙ্ঘন
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/05/11/photo-1431356479.jpg)
স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯ লঙ্ঘন করে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) ভারপ্রাপ্ত মেয়র নিয়োগ করেছে সরকার। বিএনপি সমর্থিত তিনজন প্যানেল মেয়রের কাউকে দায়িত্ব না দিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান কামরুকে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার দুপুরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মালেক স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে কামরুজ্জামান কামরুকে দ্রুত দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
কামরুজ্জামান এনটিভি অনলাইনকে জানান, আজ সোমবার দুপুরে তাঁকে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে নিয়োগ দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। নিয়োগের চিঠি নিয়ে তিনি ঢাকা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। কাল মঙ্গলবার তিনি দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন।
স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইনে বলা আছে, সিটি করপোরেশন গঠন হওয়ার পর অনুষ্ঠিত প্রথম সভার এক মাসের মধ্যে কাউন্সিলররা অগ্রাধিকারক্রমে তাঁদের নিজেদের মধ্য থেকে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি মেয়রের প্যানেল নির্বাচন করবেন। তবে শর্ত থাকে যে, নির্বাচিত তিনজনের মেয়র প্যানেলের মধ্যে একজন অবশ্যই সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর হতে হবে। পদত্যাগ, অপসারণ অথবা মৃত্যুজনিত কারণে মেয়রের পদ শূন্য হইলে শূন্য পদে নবনির্বাচিত মেয়র কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত জ্যেষ্ঠতার ক্রমানুসারে মেয়রের প্যানেলের কোনো সদস্য মেয়রের সব দায়িত্ব পালন করবেন।
নাশকতা সংক্রান্ত মামলায় রাসিকের প্যানেল মেয়র-১ মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুল আমিন আযব কারাগারে এবং প্যানেল মেয়র-২ মহানগর যুবদলের সদস্য নুরুজ্জামান টিটো পলাতক। প্যানেল মেয়র-৩ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুন্নাহার বেগম মেয়রের দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করেছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। তবে মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আজাহার আলী জানান, কামরুজ্জামান কামরুকে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব দেওয়ার কথা তিনি শুনেছেন। তবে এ-সংক্রান্ত কোনো ফ্যাক্স এখনো মন্ত্রণালয় থেকে পাননি।
প্যানেল মেয়র না হয়েও কামরুজ্জামানের দায়িত্ব পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘প্যানেল মেয়র ১ ও ২ বিভিন্ন মামলার আসামি হয়ে জেলে ও পলাতক রয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। এখন আইন অনুযায়ী প্যানেল মেয়র-৩ দায়িত্ব নেওয়ার কথা। তবে সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর তো আমাদের কথা বলার কিছু নাই।’
গত ৭ মে রাসিক মেয়র বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। তাঁর নামে পুলিশ কনস্টেবল সিদ্ধার্থ রায় হত্যাসহ বিস্ফোরক আইনে পাঁচটি মামলায় পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো বরখাস্তের আদেশে বলা হয়, বুলবুল মেয়র পদে দায়িত্ব পালন করলে মামলাগুলো ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হওয়ার আশঙ্কা আছে। এ ছাড়া রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে মদদ ও নির্দেশনা দিয়ে আসছেন তিনি।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোটের চলমান হরতাল-অবরোধে নাশকতার তিন মামলাসহ মোট ১৬টি মামলার আসামি হয়ে তিন মাসের বেশি সময় ধরে আত্মগোপনে আছেন সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।