খালেদা জিয়া ভারতের কাছে তোষামোদি করেছেন : তথ্যমন্ত্রী
সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যেসব ‘অভিযোগনামা’ দিয়েছেন তাতে চক্রান্ত আছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তিনি আরো বলেন, এটা প্রভুর কাছে তোষামোদের মতো আচরণ।
আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় কুষ্টিয়া সার্কিট হাউসে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘এটা মনে রাখা দরকার, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্কের যাত্রা শুরু হয়। সেই বন্ধুত্বটা শুরু হয়েছিল, দুই দেশের রক্ত দিয়ে। সেখানে খালেদা জিয়া ও তাঁর স্বামী জেনারেল জিয়াউর রহমান পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে দহরমের মাধ্যমে বাংলাদেশের মাটিকে তৃতীয় পক্ষকে ব্যবহার করার সুযোগ দিয়েছেন। সীমাপার সন্ত্রাসী লালন পালন, জঙ্গিবাদীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছেন। এবং তাঁর বাংলাদেশবিরোধী এসব অপরাধ ঢাকার জন্য, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের ভেতরে উত্তেজনা জিইয়ে রাখাটা একটা চক্রান্তমূলক কাজ।’
‘এখন বাংলাদেশের রাজনীতিতে খালেদা জিয়া মার খেয়ে পিছু হটে যাওয়ার ফলে হঠাৎ সুর পাল্টে ভারতের পক্ষে কথা বলার চেষ্টা করছেন। আমরা মনে করি, বন্ধু কখনোই প্রভু নয় আরকি, প্রভুদের যে রকমভাবে তোষামোদি করে খালেদা জিয়া সাম্প্রতিককালে তেমনিভাবে ভারতের সঙ্গে তোষামোদি করার রাজনীতি এবং প্রভুর কাছে অভিযোগনামা দাখিলের রাজনীতি করেছেন।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি, উন্নয়নের দরজা খোলার জন্য সোনার চাবিটা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে পানি সমস্যার সমাধান করে বাংলাদেশকে উপহার দেবেন।’
এ সময় তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কারচুপি তদন্ত নিয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসনের উদ্বেগ প্রকাশ করা প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশ হিসেবে আমাদের দেশের নির্বাচনী আইন-কানুন আছে, নির্বাচনী ব্যবস্থা আছে। স্বাধীন দেশ হিসেবে সেই আইন-কানুন ভঙ্গ হলে সেটা দেখভালের দায়িত্ব আমাদেরই। এখানে বিদেশি বন্ধুরাষ্ট্রের আনন্দিত হওয়ারও কিছু নেই বা হতাশ হওয়ার কিছু নেই। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে হাজারটা নির্বাচন হচ্ছে। সেই সব দেশের নির্বাচনের ওপর নজরদারির দায়িত্ব পৃথিবীর কোনো একটি রাষ্ট্রকে দেওয়া হয়নি। এবং পৃথিবীর পুলিশের দায়িত্ব যারা নিজেরাই গ্রহণ করেছেন, সেই সব স্বঘোষিত পুলিশের সঙ্গে আমাদের কোনো লেনদেন নেই।’
এ সময় কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু বক্কর সিদ্দিক, জেলা জাসদের সভাপতি গোলাম মহসিন, সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম স্বপনসহ প্রশাসনিক ও দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে মন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেয় জেলা পুলিশ।