যেভাবে ওজনের সঙ্গে লড়ছেন পরিণীতি
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/10/05/photo-1444033395.jpg)
“কয়েকদিন আগেও একজন সাংবাদিক আমায় জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘তুমি তো ইন্ডাস্ট্রির এমন এক উড়নচণ্ডী মেয়ে ছিলে যে ওজনের ব্যাপারে এতটুকুও পরোয়া করতে না। এখন তো তুমি বেশ প্রেসারে আছো।’ সেই থেকেই আমি বুঝলাম, যে বা যারা আমাকে চেনে না বা জানে না, তারা আমাকে নিয়ে কীভাবে ভাবে!” বলছিলেন পরিণীতি চোপড়া। এল ইন্ডিয়ার সঙ্গে এক বিশেষ আলাপে জানিয়েছেন ওজনাধিক্য নিয়ে তাঁর চিন্তাভাবনা এবং দীর্ঘদিনের পদক্ষেপের সবিশেষ।
ওজনের বিষয়টি পরিণীতি চোপড়ার জীবনে হুট করে জুড়ে বসা কোনো বিষয় নয়, আগে থেকেই এটি ছিল। আর এটি নিয়ে যে তিনি কখনো পরোয়া করেননি, তা একদমই নয়। সেই ২০১১ সালের ‘লেডিজ ভার্সেস রিকি ভ্যাল’ ছবি থেকেই শরীরের বাড়তি ওজন নিয়ে মাথাব্যথা ছিল তাঁর, তবে তাড়াহুড়ো না করে ধীরে ধীরেই শরীরের ওজন ঝরিয়েছেন এই বলিউড অভিনেত্রী।
‘যদি আমার আগের ইন্টারভিউগুলোর দিকে নজর দেন, তাহলে দেখবেন, আমি সব সময়ই বলেছি যে আমাকে যেমন দেখায় আমি সেটা মোটেও পছন্দ করি না। রীতিমতো ঘৃণা করি। পছন্দের ড্রেসগুলো আমার শরীরে আঁটত না, তাও পরতে তো হতো কোনো না কোনো একটা। আর আমাকেও মেদবহুল, কার্ভওয়ালা অভিনেত্রী বানিয়ে দেওয়া হলো। এত বিরক্ত লাগত, কী বলব! ২০১৪ সালে চূড়ান্ত অনিয়ম করেছি, যা ইচ্ছা তাই করেছি, যা ইচ্ছা হয় তাই খেয়েছি। তবে এখন আর এমন না, আমি এখন স্থির, জানি কী করতে হয় এবং তাই করছি।’
অস্ট্রিয়ার একটি হেলথ সেন্টার ঘুরে এসেছেন পরিণীতি, খাবারে অ্যালার্জির বিষয়ে পরীক্ষা করিয়েছেন। ‘স্বাস্থ্যকর খাবার খেলেও আমি কেবলই মোটা হয়ে যাচ্ছিলাম। এ জন্য চিকিৎসকের কাছে যাওয়া। আমি সেখানে কয়েকদিন কাটিয়েছি, বেশ কিছু স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়েছি, জানার চেষ্টা করেছি যে কোন কোন খাবারে আমার আসলে অ্যালার্জি। তারা আমার পুরো সিস্টেম নতুন করে গড়ে দিয়েছেন’, জানান পরিণীতি।
ওই হেলথ সেন্টারেই পরিণীতি জানতে পারেন যে দুধ ও ডিমে তাঁর অ্যালার্জি রয়েছে। ‘আমি একটা কাজ করতে পারতাম, খাওয়া দাওয়া একেবারে কমিয়ে দিয়ে ওজন কমানো। সেটা তো আর সব সময়ের জন্য সঠিক না। আমি যা করছি, সেটা কোনো শর্টকাট পদ্ধতি না, লম্বা সময়ের জন্য। এখন আমি জানি কোন খাবার আমার স্যুট করে আর কোনটা করে না। আমি এখন প্ল্যানমতো সঠিক খাবারটাই খাই। আমি সবকিছুই খাচ্ছি, হিসাব বুঝে।’
ওজনের পুরোনো দিনের সমস্যা নিয়ে অকপটে বলেন পরিণীতি, ‘লন্ডনের কলেজ থেকে ফিরেই দেখলাম যে আমি ভীষণ মোটা। তবে যখন থেকে যশরাজ ফিল্মসে (জনসংযোগ বিভাগে!) কাজ শুরু করলাম, তখন থেকেই জিম শুরু করি। তারপর অভিনয় শুরুর পর তো সময়ই পাইনি। এখন নিয়ম করে, ঠিকমতো এগোচ্ছি। আমি জানি আমি আমার শরীর কেমন মাপে দেখতে চাই, পেশিগুলো কেমন মাপে আনতে চাই।’
শরীর ধীরে ধীরে ঠিকই মাপে আসছে তাঁর, উপভোগও করছেন বিষয়টি। ‘খুব ফুরফুরে আর স্বাধীন লাগে এখন নিজেকে’, বলেন পরিণীতি। ‘এখন যা ইচ্ছা হয় পরতে পারি, ক্যামেরায় বাজে দেখানোর দুশ্চিন্তা আর কাজ করে না। আমার কাছে নিজের এই বিজয়টাই বড়, বড়পর্দায় আমার কাঠামো কেমন দেখাবে তা নিয়ে বাড়তি মাথাব্যথা নেই মোটেও!’