বউভাতের দিন বরের মৃত্যু, কনে হাসপাতালে
বিবাহোত্তর বউভাতের অনুষ্ঠানের সব কাজকর্ম চলছিল বেশ ধুমধাম করে। কনেপক্ষ ঢাকঢোল পিটিয়ে আনন্দ উল্লাস করে গাড়িবহর নিয়ে উপস্থিতও হন বরের বাড়িতে। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানেই খবর আসে বর মারা গেছেন। এদিকে কনেকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের বাজিতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ দিন বিকেল ৫টার দিকে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় বর মো. রফিকুল ইসলামকে (২৫)।
মৃত মো. রফিকুল ইসলাম মির্জাগঞ্জ উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের বাজিতা গ্রামের সফেজ মিয়ার ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ১ ডিসেম্বর মো. রফিকুল ইসলামের সঙ্গে বেতাগী উপজেলার বাসণ্ডা গ্রামের মো. মন্নান মিয়ার মেয়ে ময়না আক্তারের (১৮) সঙ্গে বিয়ে হয়। একদিন পর গত মঙ্গলবার রাতে বর রফিক নিজের বাড়িতে স্বাভাবিক জ্বর নিয়ে একটু অসুস্থ বোধ করেন। গতকাল বুধবার সকালে চিকিৎসার জন্য তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে, নির্ধারিত দিন বুধবার বর রফিকের বাড়িতে কনেরপক্ষের জন্য বউভাতের আয়োজন করা হয়। কনেপক্ষের লোকজন বরের বাড়িতে বউভাতের দাওয়াতে পৌঁছলেই খবর আসে বর রফিকুল আর বেঁচে নেই। বিয়ের আনন্দ ওখানেই থেমে যায়। মেহমানদের জন্য রান্না করা খাবার-দাবার বাড়ির আঙিনায় থরে থরে সাজানো পাতিলেই পড়ে থাকে।
এদিকে, স্বামীর মৃত্যুর খবরে জ্ঞান হারিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন নববধূ ময়না আক্তার। নববধূর শরীরেও স্বাভাবিক জ্বর দেখা দিলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন।
নিহত রফিকুল ইসলামের চাচা পশ্চিম চৈতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আনসার উদ্দিন বলেন, ‘রফিকের বাবা সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে রেকর্ড অফিসে (সিভিল বিভাগ) কর্মরত। একমাত্র ছেলেকে নিয়ে মা বাড়িতে থাকতেন। রফিক ও আমি রোববার একত্রে বিয়ের সব কেনাকাটা করি কিন্তু আজ আমাদের মধ্যে রফিক আর নেই। সব কিছুই শেষ হয়ে গেল।’