রমজানে ইবাদত করার উপযোগী জায়গা চান মামুনুল
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় মারধর, চুরি ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে দায়ের করা মামলার শুনানিকালে আদালত হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতা মামুনুল হকের কাছে জানতে চান, ‘আপনার কিছু বলার আছে?’
জবাবে মামুনুল হক বলেন, ‘রমজান মাসে ছয়বার কোরআন খতম দেই, নিয়মিত নামাজ-রোজা রাখি। আমাকে উপযুক্ত পরিবেশে রাখলে আমি ইবাদত করতে পারব।’
আজ সোমবার বেলা সোয়া ১১টায় মামুনুল হককে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করেন পুলিশ। এরপরে তাঁর বিরুদ্ধে ২০২০ সালের করা মামলায় সাতদিন রিমান্ডের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। সাতদিনের রিমান্ডই মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শুনানিকালে রিমান্ড আবেদনের পক্ষে বক্তব্য দেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু আব্দুল্লাহ ভুঁইয়া এবং মামুনুল হকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন মেজবাহ।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবু আব্দুল্লাহ ভুঁইয়া শুনানিতে বলেন, ‘বাদী এজাহারে বলেছেন, তিনি মসজিদে যখন নামাজ পড়তে গেছেন, তখন মামুনুল হকের অনুসারীরা তাঁকে মারধর করেছে এবং বাদীর কাছ থেকে সাত হাজার টাকা ও ২০০ ডলার নিয়ে গেছে। এ ছাড়া বাদীর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে। তাই অপর আসামিদের খুঁজে বের করতে ও মামলার সঠিক তদন্ত করতে আসামি মামুনুলকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।’
এ সময় মামুনুল হকের আইনজীবী জয়নুল আবেদিন মেজবাহ বলেন, ‘এটি একটি মিথ্যা মামলা। মামনুল হক কোথায়, কখন কীভাবে ছিনিয়ে নিয়েছেন সে বিষয়ে মামলার এজাহারে কিছু বলা নেই। এটি সম্পূর্ণ একটি সাজানো মামলা। আসামির জামিন আবেদন করছি।’
এ সময় বিচারক ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারী আসামি মামুনুল হককে উদ্দেশ্যে করে বলেন, ‘আপনার কিছু বলা আছে?’
জবাবে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বলেন, ‘এখন পবিত্র মাহে রমজান মাস। আমি রমজান মাসে ছয়বার কোরআন খতম দেই, নিয়মিত নামাজ-রোজা রাখি। আমাকে উপযুক্ত পরিবেশে রাখলে আমি ইবাদত করতে পারব। গতকাল আমাকে যেখানে রাখা হয় সেখানে ইবাদত করার কোনো সুযোগ ছিল না।’
মামুনুল হকের বক্তব্যের পরে বিচারক বলেন, ‘আপনার ইবাদতের কোনো সমস্যা হবে না।’
এরপরে বিচারক সাতদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে গতকাল রোববার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে তেজগাঁও থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে তাঁকে ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
গতকাল দুপুরে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে অর্থাৎ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিনে বায়তুল মোকাররম মসজিদে নাশকতা ও তাণ্ডবের ঘটনার মামলার আসামি মামুনুল হক। এ তাণ্ডবের ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে মামুনুল হক অন্যতম। শুধু তা-ই নয়, ২০১৩ সালে রাজধানীর শাপলা চত্বরের ঘটনার মামলারও আসামি তিনি।’
তেজগাঁও বিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানাধীন রয়েল রিসোর্টের ঘটনার পর মামুনুল হক ওই রাতেই ঢাকায় চলে আসেন। মোহাম্মদপুরে তাঁর বাসা থাকলেও তিনি সেখানে না গিয়ে জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় অবস্থান করেন।