মুজাহিদ বলেছিলেন, বাংলাদেশে কোনো যুদ্ধাপরাধী নেই
‘বাংলাদেশে কোনো যুদ্ধাপরাধী নেই। এটা তাঁদের কল্পনাপ্রসূত। নিজেদের বানোয়াট একটা উদ্ভট চিন্তা।’
২০০৭ সালের ২৫ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিদলের সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেছিলেন একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে সক্রিয় ভূমিকা রাখা দলটির সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ।urgentPhoto
নিবন্ধন নিয়ে তখন নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেশে ক্রিয়াশীল প্রায় সব রাজনৈতিক দলই সংলাপে অংশ নিয়েছিল। এরই অংশ হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধিদল আসে সংলাপে অংশ নিতে। সংলাপ শেষ হওয়ার পরই সাংবাদিকরা ঘিরে ধরেছিলেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদকে। প্রশ্ন করা হয়েছিল একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালীন অপরাধ বিষয়ে।
তখন আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো যুদ্ধাপরাধী নেই। তখন থেকেই নাই। এখনো নাই। বাংলাদেশে কোনো স্বাধীনতাবিরোধী নেই।’ এরপর এক সাংবাদিক তাঁকে আবারও প্রশ্ন করেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী নেই?’ তখন মুজাহিদ ওই সাংবাদিকের দিকে তাকিয়ে আবারও জোর গলায় বলেন, ‘না, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ছিলও না।’
পরে জামায়াতের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রায় একই কথার পুনরাবৃত্তি করেন মুজাহিদ। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কোনো নেতৃবৃন্দই যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। কাজেই তাদের তথাকথিত যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করার কোনো নৈতিক ও আইনগত সুযোগ নেই।’
নিজে বারবার অস্বীকার করলেও সেই মানবতাবিরোধী অপরাধেই মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন জামায়াতের এই নেতা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ বিভিন্ন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল এবং আপিলের রায় পুনর্বিবেচনার পরও মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।