কুষ্টিয়ায় ধর্ষণের পর হত্যায় চারজনের যাবজ্জীবন
প্রায় ২০ বছর পর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় এক নারীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার দুপুরে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম দুই আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের বুল ওরফে কালু, একই উপজেলার চাঁদগ্রামের মোস্তাক আলী মস্তান ও গোলাম রেজা রোকন এবং সাতবাড়িয়া গ্রামের মিলন আলী। এদের মধ্যে গোলাম রেজা রোকন ও মোস্তাক আলী মস্তান পলাতক রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, তিন সন্তানের জননী ওই নারী দৌলতপুর উপজেলার শালিমপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি আল্লাহরদর্গা গ্রামের একটি সিগারেট ফ্যাক্টরির পাশে ছেলেমেয়ে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন এবং ভেড়ামারায় একটি ডালের মিলে চাকরি করতেন। সেখানে তিনি প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে পরের দিন সকাল ৭টা পর্যন্ত কাজ করতেন।
২০০১ সালের ১২ আগস্ট প্রতিদিনের মতো বিকেলে বাসা থেকে কর্মস্থল ভেড়ামারার উদ্দেশে রওনা হন ওই নারী। পরের দিন তিনি বাসায় না ফিরলে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করে। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে পরিবারের লোকজন জানতে পারে, ভেড়ামারা উপজেলার বামনপাড়া এলাকায় আকরাম আলীর বাড়ির পাশে বাঁশঝাড়ের মধ্যে একটি মরদেহ পড়ে আছে। পরে পরিবারের লোকজন সেখানে গিয়ে ওই নারীর লাশ শনাক্ত করে। ভেড়ামারা থানা পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। পরে নিহত নারীর মা বাদী হয়ে সাতজনকে আসামি করে ভেড়ামারা থানায় ধর্ষণ ও হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্ত শেষে ভেড়ামারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাকসুদুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। দীর্ঘ সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আজ আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী বলেন, ‘দীর্ঘ ২০ বছর পর ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হলো। রায় ঘোষণার পর পরই দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি কালু ও মিলন আলীকে পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ান জারি করা হয়েছে।’