আইনের শাসন থাকলে খালেদা জিয়া আগেই জামিন পেতেন : রুমিন ফারহানা
![](https://publisher.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2021/11/28/rumin-photo.jpg)
বিএনপির সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। আজ যদি দেশে আইনের শাসন থাকতো, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকতো, তাহলে তিনি বহু আগেই জামিন পেতে পারতেন।’ আজ রোববার একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনে বক্তব্য দেওয়ার সময় এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় রুমিন ফারহানা আরও বলেন, ‘দুদকের মামলায় ১০ বছরের সাজা—এটা পেন্ডিং আপিলের সাজা। আমরা জুনিয়র থেকেই এটা করে আসছি। এটা কোনো নতুন উদাহরণ নয়। আইনের চোখে সবাই সমান। কিন্তু, আইনের চোখে যদি সবাই সমান হতো, দেশের আর ১৭ কোটি নাগরিক যেমন এ ধরনের মামলায় জামিন পায়, দেশনেত্রীও পেতেন। কিন্তু এ সরকারের আমলে আইনের চোখে সবাই সমান—এ কথাটির কোনো নেই। আজ খালেদা জিয়ার শারীরিক যে অবস্থা, এর পুরো দায়িত্ব এ সরকারকেই নিতে হবে। কারণ, গত তিন বছর খালেদা জিয়া এ সরকারের হেফাজতে আছেন। তিনি কারাগারে ছিলেন, তিনি বিএসএমএমইউতে ছিলেন। এখনও তিনি সরকারের হেফাজতে।’
এ সময় আইনমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে রুমিন ফারহানা বলেন, “আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘আমি বলিনি ৪০১ ধারায় উনি বিদেশে যেতে পারবেন না। যেটা আমি বলেছি, নতুন করে আবেদন করতে হবে, জেলে গিয়ে আবেদন করতে হবে। তারপরে তিনি বিদেশে যেতে পারবেন।’ ৪০১ ধারায় কোথাও বলা নাই—সাজাপ্রাপ্ত বা দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে কারাগারে গিয়ে আবেদন করতে হবে। বরং ৪০১ ধারা সরকারকে অবারিত ক্ষমতা দেয়, যেকোনো শর্তে—পুরোনো শর্তে, নতুন শর্তে সংযুক্ত করে সাজাপ্রাপ্ত বা দণ্ডপ্রাপ্ত তার সাজার মেয়াদ স্থগিত করতে বা পুরোপুরি মুক্ত করতে।’
ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা আরও বলেন, ‘৪০১ ধারা নিয়ে বহু বিভ্রান্তি। আমি যখন প্রথম দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য ৪০১-এর ব্যাখ্যা দিলাম। আইনমন্ত্রী বললেন, উনাকে নতুন আবেদন করতে হবে। পরে ১৮ নভেম্বর যখন আমাদের আরেকজন সংসদ সদস্য জি এম সিরাজ সাহেব আবার ৪০১ নিয়ে বক্তব্য দিলেন, তখন আমাদের মাননীয় আইনমন্ত্রী বললেন, ‘এটা আইনের বইয়ের কোথাও নেই। উনারা যদি এটা দেখাতে পারেন, তাহলে আমি এটা বিবেচনা করতে পারি। উনারাও দেখাতে পারবেন না, বিবেচনারও প্রশ্ন আসে না। উনারা আমাকে যত খুশি গালি দিতে পারেন, তাতে আমার কোনো যায় আসে না। আমি আইন মোতাবেক চলব।”’
বিএনপিদলীয় এ সাংসদ আরও বলেন, ‘বারবারই আইনমন্ত্রী বলছেন, একটা অ্যাপ্লিকেশন—যেটা ডিসপোজ অফ হয়ে গেছে, সেটার ওপরে আর আলোচনা চলবে না। এটা আমিও মানি। এটা নিয়ে আমাদের কোনো কথা নাই। কিন্তু আরও দুটো অ্যাপ্লিকেশন তো দেওয়া আছে। উনার পরিবারের তরফ থেকে আবেদন করা হয়েছে। দলের তরফ থেকেও আবেদন করা হয়েছে। এমনকি আমাদের সমকর্মী যে আইনজীবীরা রয়েছেন, তাঁরাও আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বসেছেন। সেখানেও মাননীয় আইনমন্ত্রী আরেক রকমভাবে বলেছেন, ঠিক আছে বিবেচনা করে দেখতে পারি কি না, আমরা দেখব। সুতরাং বিষয়টি যে একদম পাস্ট অ্যান্ড ক্লোজড ট্রানজেকশন, বিষয়টি যে একদম সমাধা হয়ে গেছে তেমনটি নয়। তবে আমি আশা করব, সরকারের বোধদয় হবে। সরকার খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেবে।’