ভ্যালেন্সিয়ার সাগরপারে গাজীপুরবাসীর পিকনিক
ইউরোপের পর্যটকপ্রিয় দেশ স্পেনের আর সবার মতো প্রবাসীরাও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকেন গ্রীষ্মের (সামার) জন্য। দীর্ঘ শীতের জীর্ণতা ও নিরবতা কাটিয়ে প্রকৃতি যেমন এ সময় নিজেকে মেলে ধরে নতুন সাজে, ঠিক তেমনি প্রবাসীরাও মেতে ওঠেন বিভিন্ন আনন্দ আয়োজনে। এরই ধারাবাহিকতায় স্পেনে বসবাসরত গাজীপুরবাসী মেতে উঠেছিল বনভোজন ও সমুদ্র সৈকত ভ্রমণে। গাজীপুর জেলা সমিতি, স্পেনের উদ্যোগে গত সোমবার ১৭ আগস্ট ভ্যালেন্সিয়া সমুদ্রসৈকতে অনুষ্ঠিত হয় সমুদ্র ভ্রমণ ও বনভোজন। সামারের ছুটির এইদিনে প্রবাসীরা আনন্দে দিনটি অতিবাহিত করেন একটু অন্যভাবে। গাজীপুর ছাড়াও অনেক জেলার প্রবাসীরাই অংশ নিয়েছিলেন এই আয়োজনে।
মেট্রো এম্বাকাদরেস থেকে সকাল ৯টায় বাসযোগে রওনা হয়ে প্রায় চার ঘণ্টা পরে গন্তব্যস্থলে পৌঁছান সবাই। যাত্রার শুরুতে অংশগ্রহণকারী সবাইকে শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানান সমিতির আহ্বায়ক মুরশেদ আলম তাহের। লং জার্নির সময় বাসে মাইক্রোফোনের সাহায্যে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন, সমিতির সদস্য সচিব সৈয়দ আমিনুল হক আলন। গান, কৌতুক, রম্য ধাঁধা পরিবেশন করে মাতিয়ে রাখেন আয়ুইব আলী, হাশেম মেম্বার ও ক্রিস রবের। সমিতির আহ্বায়ক তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে অংশগ্রহণকারী সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, প্রবাসী গাজীপুরবাসীর মধ্যে সেতুবন্ধনের উদ্দেশে এই সুন্দর আয়োজন। প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মকে আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সাথে পরিচয় করানোর প্রতি গুরুত্বারোপ করেন এবং দেশ ও প্রবাসে দেশের কল্যাণে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
প্রবাসে ব্যস্ত জীবনের ক্লান্তি দূর করে প্রশান্তি নিতে এই সমুদ্র ভ্রমণ ও বনভোজনে উপস্থিত হয়েছিলেন দলমত নির্বিশেষে বহু প্রবাসী। এতে অনেক মহিলা ও শিশুও অংশ নেয়। যাদের সরব উপস্থিতিতে এই মিলনমেলা মুখরিত হয়ে ওঠে, তাঁরা হলেন আসিম রিবের ক্রিস, রিপন মোল্লা, রঞ্জিত রেবের, মালেক মিয়া, মনির হোসেন, ইসমাইল হুসেন, দেলোয়ার হয়ার, মুজিবুর রহমান, আলমগীর হুসেন, আল আমিন মিয়া, মো. আলী, মো. শরিফ, শিমুল ঘোষ, শহিদুল ইসলাম, স্বপন মিয়া, খুরশেদ আলম, মো. আবদুল মতিন, সুলেমান মিয়া, মো. শাজাহান মিয়া, মো. রনি প্রমুখ।
প্রবাসের মাটিতে জীবনের প্রয়োজনে বসবাস করলেও মন কাঁদে জন্মভূমি বাংলাদেশের মা, মাটি ও মানুষের জন্য। ভ্রমণ পিপাসু অংশগ্রহণকারীরা সমুদ্রসৈকতে দুপুরের খাওয়া-দাওয়া শেষ করেন। হরেক পদের মুখরোচক বাঙালি খাবার খেয়েছেন সবাই তৃপ্তির সাথে। সবাই আয়োজকদের নিয়মশৃঙ্খলার ভূয়সী প্রশংসা করেন। খাওয়া শেষে অনেকেই মনের আনন্দে তুলতে থাকেন সেলফি। চলে সাঁতার কাটা, হৈ হুল্লোড়, হ্যান্ডবল, ফুটবল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দিনব্যাপী সমুদ্রসৈকত ভ্রমণ ও বনভোজনের আনন্দ উপভোগ করতে করতে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে। প্রবাসীরা যখন সুখের দোলায় এই মনোরম স্থান ত্যাগ করেন তখন সুর্য প্রায় হেলে পড়েছে সাগরে। সুর্যাস্তের সাথে সাথে আবার সেই পুরনো কর্মস্থল, চিরচেনা কাজ আর কাজ।