নিরাপদে আছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের অরলান্ডো শহরের নৈশক্লাবে বন্দুকধারীর হামলায় ৪৯ জন নিহতের ঘটনায় পুরো দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এই ঘটনার পর পুরো ফ্লোরিডায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ফ্লোরিডায় কয়েক হাজার বাংলাদেশি বাস করেন। ঘটনার পর খবর নিয়ে জানা গেছে তাঁরা নিরাপদেই আছেন। স্থানীয় পুলিশের পক্ষ থেকে মুসলমান কমিউনিটিতে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে।
অরল্যান্ডোর নৈশক্লাবটি থেকে বেশ দূরত্বে বসবাস করেন বেশির ভাগ বাংলাদেশি। ঘটনাস্থল সেন্ট্রাল ফ্লোরডার ডাউন টাউন এলাকা যা কমার্শিয়াল এরিয়া। এর আশপাশে বাংলাদেশি প্রবাসীরা থাকেন না বা তাঁদের কোনো ব্যবসাপ্রতষ্ঠানও নেই। সেন্ট্রাল ফ্লোরিডায় প্রবাসী বাংলাদেশির সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার। বেশির ভাগ প্রবাসী স্থানীয় গ্যাস স্টেশনসহ বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
সেন্ট্রাল ফ্লোরিডায় আছে ১৬টি মসজিদ ও ইসলামিক স্কুল, কবরস্থান। এখানকার মুসলমানরা ভালোই ছিলেন। সমকামী নৈশক্লাবে হামলার পর প্রবাসী মুসলমি জনগোষ্ঠী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
স্থানীয় সময় রোববার সেন্ট্রাল ফ্লোরিডার চার্চগুলোতে বিশেষ প্রার্থনা চলেছে। মুসলমান কমিউনিটির নেতারা ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন।
মসজিদে বাড়তি নিরাপত্তা
মুসলমানদের নিরাপত্তা বিষয়ে রোববার সন্ধ্যায় স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিসিমি শহরের তাকওয়া মসজিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। মাগরিবের আগে তাকওয়া মসিজিদসহ ১৬টি মসজিদে পুলিশের টহল দেখা যায়। স্থানীয় পুলিশের মেজর ক্রাইম সার্জেন্ট ক্রিস্টফার সুজি ও সার্জেন্ট রপ তাকওয়া মসজিদের মুসল্লিদের সঙ্গে ইফতার করেন। ইফতার ও নামাজের পর সার্জেন্ট সুজি ও সার্জেন্ট রপ মুসলিম সম্প্রদায়কে ভীত না হওয়ার অহ্বান জানান। মসজিদের নিরাপত্তাসহ সবাইকে পুলিশের সহযোগিতা নেওয়ার কথা বলেন তিনি। সব ক্ষেত্রে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়। কোনো কিছু ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানানোর অনুরোধ জানানো হয়।
রাত সাড়ে ১০টায় কিসিমি পুলিশের চিফ লি মেসি তাকওয়া মসজিদে উপস্তিত হন এবং মুসল্লিদের উদ্দেশে দীর্ঘ বক্তব্য দেন । কিসিমি পুলিশপ্রধান মেসি বলেন, মসজিদের নিরাপত্তার দায়িত্বে পুলিশ মুখ্য ভূমিকা পালন করবে। সব সময় পুলিশের নজরদারি থাকবে। কাউকে ভীত না হয়ে যেকোনো বিষয়ে পুলিশকে প্রথমে অবহিত করার আহ্বান জানান তিনি।
কিসিমিতে ভিগিল ক্যান্ডল লাইট পালন
গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে কিসিমি লেক ফ্রন্ট পার্কে স্থানীয় বাসিন্দা, ডেমোক্রেটিক পার্টি ও বাংলাদেশি কমিউনিটির ভিগিল ক্যান্ডল লাইট পালন করা হয়। প্রায় শতাধিক ব্যক্তি এতে অংশ নেন। নীরবতা পালন শেষে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে আমেরিকার কঠিন সময়কে জয় করার কথা ব্যক্ত করেন।
সোমবার সকালে কিসিমির লুপ মলে রক্ত দিতে আসা নাগরিকদের পানি ও সানক্রিন দিয়ে সহযোগিতা করেন অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি। কিসিমির কমিউনিটি একটিভিস্ট এ কে এম হোসেন হিটু স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতিনিধিত্ব করেন।