দুবাইয়ে এনটিভির বর্ষপূর্তি পালন ও ফোরামের নতুন কমিটি ঘোষণা

জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভির ২৩তম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের একটি পাচঁ তারকা হোটেলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়। এতে এনটিভি ফোরাম ইউএইর নতুন কমিটিও ঘোষণা করা হয়।
১২ জুলাই শনিবার মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ধ্বনিত হয় প্রবাসী বাংলাদেশিদের সম্মিলিত শক্তি ও সংহতি।
এনটিভি ফোরাম ইউএইর নবনির্বাচিত সভাপতি মোহাম্মদ রাজা মালিকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নজমুল হকের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে এ মিলনমেলায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাইয়ের কনসাল জেনারেল মো. রাশেদুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রথম সচিব (প্রেস) মো. আরিফুর রহমান, ইউএই বিএনপির আহ্বায়ক জাকির হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সালাম তালুকদার, বাংলাদেশ সমিতি শারজাহর সভাপতি আবুল বাশার এবং এনটিভি ফোরাম ইউএইর উপদেষ্টা হাজি আব্দুল করিম।
মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর এনটিভি ইউএইর প্রতিনিধি মামুনুর রশিদ সবাইকে স্বাগত জানিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন। তাঁর বক্তব্যে তিনি গত এক বছরে এনটিভি ফোরামের কার্যক্রম তুলে ধরেন এবং নতুন কমিটির পরিচিতি ও তাদের আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেন। নতুন কমিটি ঘোষণা এবং তাদের পরিচিতি পর্ব ছিল এই আয়োজনের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ, যেখানে ফোরামের পুরনো ও নতুন সদস্যরা প্রবাসী কমিউনিটিতে তাদের অবদানের কথা তুলে ধরেন।
এনটিভির পক্ষ থেকে মামুনুর রশীদ ও জাহিদ হাসান সুমন নতুন কমিটিকে ফুলের তোড়া ও উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করে নেন।
এরপর কেক কেটে এনটিভির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়। এর পরপরই এনটিভির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলীর ভিডিও বার্তার মাধ্যমে আলোচনা পর্বের সূচনা হয়।
কনসাল জেনারেল মো. রাশেদুজ্জামান এনটিভির ভূয়সী প্রশংসা করেন। বিশেষ করে প্রবাসীদের জন্য তাদের অবদানের কথা তুলে ধরেন। তিনি প্রবাসীদের উদ্দেশে বলেন, ‘দীর্ঘ ২২ বছরের সাফল্যময় যাত্রায় এনটিভি প্রমাণ করেছে—গণমাধ্যম কেবল সংবাদ পরিবেশন করে না, এটি সমাজের আয়না, সংস্কৃতির ধারক এবং জাতির পথপ্রদর্শক হিসেবেও কাজ করে। দেশ-বিদেশের অগণিত দর্শকের ভালোবাসা ও সমর্থনে এনটিভি আজ একটি শক্তিশালী গণমাধ্যমে পরিণত হয়েছে। আমরা আশা করি, আগামীতেও এনটিভি সত্য ও মানবতার পথে এগিয়ে যাবে, বাংলাদেশের গৌরবকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবে।’
অনুষ্ঠানের সবচেয়ে আবেগঘন মুহূর্ত ছিল দুটি বিশেষ পুরস্কার প্রদান। প্রথম পুরস্কারটি দেওয়া হয় এক গর্বিত বাবাকে, যিনি স্বল্প বেতনে জীবন শুরু করে প্রতিকূলতা পেরিয়ে তার সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। এনটিভি তার সন্তানদের জীবনসংগ্রামের ওপর একটি ভিডিও প্রদর্শন করে, যা উপস্থিত দর্শকদের গভীরভাবে স্পর্শ করে। এই সংগ্রামী বাবাকে সম্মাননার পাশাপাশি আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হয়।
দ্বিতীয় পুরস্কারটি প্রদান করা হয় এক রেমিট্যান্স যোদ্ধাকে, যিনি তিন বছর ধরে প্রতি মাসে গড়ে ৫৮৫ দিরহাম বৈধ পথে বাংলাদেশে পাঠিয়েছেন। তাঁকে ওয়াল স্ট্রিট এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে এক বছরের বিনামূল্যে রেমিট্যান্স সুবিধা এবং এনটিভির পক্ষ থেকে সম্মাননা দেওয়া হয়।
এ ছাড়া এনটিভি ফোরাম ইউএই সংযুক্ত আরব আমিরাতের পাঁচটি প্রদেশ থেকে পাঁচজন স্বল্প আয়ের প্রবাসীকে ‘ইভেন্ট অ্যাম্বাসেডর’ হিসেবে আমন্ত্রণ জানায়। এই সংগ্রামী মানুষগুলো কঠোর পরিশ্রম করে বড় বড় স্থাপনা নির্মাণ করলেও কখনও পাঁচ তারকা হোটেলে প্রবেশের সুযোগ পাননি। অনুষ্ঠানে তাদের বিশেষ সম্মাননা, উপহার এবং গুডি ব্যাগ দেওয়া হয়, যা দর্শকদের মুগ্ধ করে।
স্থানীয় শিল্পীরা গান ও নৃত্য পরিবেশন করে মিলনমেলার সাংস্কৃতিক সন্ধ্যাকে এক ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যান। তাদের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা দর্শকদের আনন্দ দেয়।